বাংলাদেশে শিল্পখাতের প্রবৃদ্ধি বা উন্নয়নের সঙ্গে শ্রমের কর্মপরিবেশ উন্নত হচ্ছে না বলেও ভাষ্য তার।
সোমবার ঢাকায় বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র, বিআইডিএস কার্যালয়ে ‘প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমের প্রবৃদ্ধি ও বাংলাদেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব কথা বলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা।
কর্মশালায় গবেষণা প্রতিষ্ঠান আরএএনডি, বিআইজিডি, বিআইডিএস ও ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির করা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত দুটি গবেষণা নিয়ে আলোচনা হয়। যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ডিএফআইডি, জার্মান লেবার ইনস্টিটিউট আইজেডএ এবং বিশ্বব্যাংক এসব গবেষণার অর্থায়ন করে।
কর্মশালার সারমর্ম তুলে ধরে ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অধিকাংশই অপ্রাতিষ্ঠানিকখাতে হয়। তবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সমান্তরালে শ্রমের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হচ্ছে না।
“কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা থেকে বড় আকার ধারণ করে। শিল্প বড় হওয়ার সাথে সাথে এগুলো ধীরে ধীরে আইন ও নীতির আওতায় আসার কথা ছিল। বাংলাদেশে সেই কাজটি এখনও হয়নি, গবেষণা এমন একটি ইঙ্গিত দেয়।”
বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর সঠিক হিসাব নেই উল্লেখ করে সব প্রতিষ্ঠানকে পর্যবেক্ষণের আওতায় আনার পরামর্শ দেন তিনি।
“ভ্যাট, কর রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক ঋণ ইত্যাদি মাধ্যমে তাদেরকে পর্যবেক্ষণ ও নিয়মের আওতায় আনা যায়। অবশ্য প্রাতিষ্ঠানিক খাতে যেসব নিয়ম নীতি পালন করার কথা, সেগুলোও সঠিকভাবে হচ্ছে না। সে হিসাবে, বাংলাদেশের অধিকাংশ অর্থনীতি এখনও অপ্রাতিষ্ঠানিক।”
গবেষণায় অপ্রাতিষ্ঠানিকখাতে বাংলাদেশের অধিকাংশ কর্মসংস্থান রয়েছে উল্লেখ করে এর ব্যাখ্যায় বলা হয়, এসব ক্ষেত্রে চাকরিদাতা ও চাকরিজীবীদের মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয় না।
সুষম উন্নয়নের পাশাপাশি শ্রমের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ।
“দেশের অর্থনীতি বড় আকার ধারণ করার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নয়নও প্রয়োজন। তাদের দরিদ্র অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার পথগুলো ঠিক করতে হবে। তাহলেই কেবল সুষম উন্নয়ন হবে।”
কর্মশালায় বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক সুলতান হাফিজ রহমান, বিআইডিএসের মহাপরিচালক কেএএস মুরশিদ, বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক কাজি আলি তৌফিক, সিনিয়র রিচার্স ফেলো নাজনীন আহমেদসহ অন্য অর্থনীতিবিদরা আলোচনায় অংশ নেন।