সাইবার হুমকি প্রতিরোধে ১৫০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন

দেশে সাইবার হুমকি প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় ‘সাইবার থ্রেট ডিটেকশন অ্যান্ড রেসপন্স’ শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2017, 11:34 AM
Updated : 28 March 2017, 11:34 AM

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছে।

‘সাইবার থ্রেট ডিটেকশন অ্যান্ড রেসপন্স’ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের সব ওয়েবসাইট, সাইবার হুমকি সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ চিহ্নিতকরণ, নিয়ন্ত্রণ এবং সাইবার সন্ত্রাস থেকে জনগণকে সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি দেশের সামাজিক মূল্যবোধ অক্ষুন্ন রেখে ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠক হয়।

বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বৈঠকে এ প্রকল্পটিসহ মোট ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পগুলোর সম্মিলিত ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা।

এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে প্রায় ছয় হাজার ২৮১ কোটি টাকা। আর বৈদেশিক সহায়তা থেকে তিন হাজার ৬৩১ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ২৩৬ কোটি টাকা যোগান দেওয়া হবে।

মন্ত্রী বলেন, “সাইবার সমস্যা জাতীয় সমস্যা নয়, একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। এটা মোকাবেলার জন্য লোকবল প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। কিন্তু যারা দুষ্কর্ম করে, তারাও শক্তিশালী হচ্ছে।”

বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের বিস্তার ও সহজলভ্যতায় শিক্ষা, গবেষণা, স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে তথ্যাদি আদান প্রদানে অভাবনীয় গতি এসেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এই প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা বিস্তারের ফলে ইন্টারনেট মানুষকে একদিকে যেমন উপরোক্ত সুবিধাদি প্রদান করেছে, অপরদিকে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি গোষ্ঠীর কার্যক্রমসহ প্রতারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রেও সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।

“অনেক দেশেই ইন্টারন্টে ব্যবহার করে তথ্য আদান প্রদানের মাধ্যমে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ধংসাত্মক কার্য়ক্রম বাস্তবায়ন করেছে। তাছাড়া ইন্টারনেট প্রযুক্তির অপব্যবহার করে পর্নগ্রাফি ও অন্যান্য আপত্তিকর বিষয়বস্তু প্রদর্শন করে দেশের যুব সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত। করছে।”

বাংলাদেশেও এসব কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে পড়ছে জানিয়ে এসব ক্ষতিকর কর্মকাণ্ড থেকে দেশের জনগণকে সুরক্ষা দিতে ‘সাইবার থ্রেট ডিটেকশন অ্যান্ড রেসপন্স’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান মুস্তফা কামাল।

এসময় জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এখন যারা জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত আছে, তারা এক সময় বুঝবে যে ইসলাম শান্তির ধর্ম। যারা এ সত্য বুঝবে, তারা একদিন ফিরে আসবে।”

বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলোর তথ্যও সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

এর মধ্যে রয়েছে ‘তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতিকরণ (সেক্টর) (ইউজিআইআইপি-৩)’ প্রকল্প, যার ব্যয় ধরা হয়েছে হাজার ৪৬ কোটি টাকা।

‘মাতুয়াইল স্যানিটারি ল্যান্ডফিল সম্প্রসারণসহ ভূমি উন্নয়ন’ প্রকল্প, যার ব্যয় ৭২৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।

‘গাবতলী সিটি পল্লীতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ক্লিনারবাসীদের জন্য বহুতল বিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প। প্রায় ১৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।

‘গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (ঢাকা জোন)’ প্রকল্প। এর ব্যয় প্রায় ৫৯২ কোটি টাকা।

‘নড়াইল-কালিয়া সড়কে নবগঙ্গা নদীর ওপর কালিয়া সেতু নির্মাণ’ প্রকল্প, এর ব্যয় ৭৫ কোটি টাকা।

‘হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথভাবে ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্প; এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫৫ কোটি টাকা।

‘টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন’ প্রকল্প, যার ব্যয় প্রায় ৪৯৯ কোটি টাকা।

‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস ও ফিশারিজ এর গবেষণা সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্প। এতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৭২ কোটি টাকা।

‘নির্মল বায়ু এবং টেকসই পরিবেশ (কেএস)’ তৃতীয় সংশোধনী প্রকল্প, এতে ব্যয় হবে প্রায় ৮০৩ কোটি টাকা।

‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় তেরটি বাফার গোডাউন নির্মাণ’ প্রকল্প, এতে ব্যয় হবে ৪৮২ কোটি টাকা।

‘মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণ শিক্ষা কার্যক্রম (‘ষষ্ঠ পর্যায়’ প্রকল্প (১ম সংশোধিত); এর ব্যয় দুই হাজার ২৭২ কোটি টাকা।