ইসলামী ব্যাংকে ইসলামী ব্যাংকিং নেই: ইব্রাহীম খালেদ

ইসলামী ব্যাংকিংয়ের কথা বললেও ইসলামী ব্যাংক তা করছে না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহীম খালেদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 March 2017, 02:00 PM
Updated : 9 March 2017, 06:11 PM

তিনি বলছেন, গ্রাহকদের লাভ-ক্ষতির অংশীদার না করে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের ব্যত্যয় ঘটাচ্ছে বেসরকারি ব্যাংকটি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক সেমিনারে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসানকে দেখিয়ে ইব্রাহীম খালেদ বলেন, ইসলামী ব্যাংকের কার্যক্রমে পরিবর্তন আনার ‘কঠিন কাজে’ হাত দেওয়া হয়েছে।

“উনি (আবু হেনা রাজী হাসান) বোর্ডেও আছেন, তাই বলি খুব কঠিন কাজে হাত দিয়েছেন।”

তবে ধৈর্য নিয়ে এটা করা গেলে ব্যাংকটাকে ‘বাঁচানো সম্ভব’ বলেও মন্তব্য করেন ইব্রাহীম খালেদ।

তিনি বলেন, “ইসলামী ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকিং করার দাবি করলেও আসলে তারা তা করেন না। তারা যে বলেন, মুশারাকা বা মুদারাবা এটা কিছু হচ্ছে না। ইটস নট এ ইসলামিক ব্যাংকিং। তারা আসলে অল্টারনেটিভ ব্যাংকিং করছেন। ইসলামী ব্যাংকিং তারা করছেন না।

“ইসলামী ব্যাংকিং হচ্ছে গ্রাহকরা লাভের অংশ পাবেন। আবার লসেরও ভাগিদার হবেন। কিন্তু এখন তারা (গ্রাহকরা) লাভের অংশ পাচ্ছেন না। লাভ হচ্ছে ৫০ পার্সেন্ট। আপনি দিচ্ছেন অর্ধেক বা কিছু একটা হচ্ছে।”

রেমিটেন্স প্রবাহ কমার প্রসঙ্গ তুলে ইব্রাহীম খালেদ বলেন, “মোবাইল ব্যাংকিং নিয়ে কিছুটা অসদাচরণ হচ্ছে দেশের বাইরে। আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্য থেকে অবৈধভাবে বিকাশের নামে দেশে টাকা পাঠানোর কারণে রেমিটেন্স কমছে।”

সম্প্রতি সিঙ্গাপুর ঘুরে আসার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “ওখানে মোস্তফা সেন্টারের সাইনবোর্ড দিয়ে বিকাশে প্রতিদিন হাজার হাজার ডলার রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে।”

ব্যাংক খাতে বিভিন্ন ধরনের গবেষণার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে নতুন একটি উইং খোলার পরামর্শ দেন সাবেক এই ডেপুটি গভর্নর।

 তিনি বলেন, “মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অনিয়ম হচ্ছে। ব্যাংক খাতের বাইরে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হচ্ছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের বিকল্প পদ্ধতি বের করতে পারলে এসব অনিয়ম বন্ধ হবে।”

অনুষ্ঠানে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে বলা হয়, এক দশকে বাংলাদেশের ব্যাংক খাত দ্রুত এগিয়ে গেলেও গ্রাহকদের একটি বড় অংশের খাতটি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা নেই।

“৯৮ শতাংশ ব্যাংক গ্রাহকের বীমা সম্পর্কে ধারণা নেই এবং ৪৭ শতাংশ গ্রাহকের ফাইন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। তবে ৫২ শতাংশ আমানতকারী মনে করেন ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা খারাপের দিকে গেলে তা খুব ঝুঁকিপূর্ণ। আর বাংলাদেশের ৮১ শতাংশ গ্রাহক প্রথমে সঞ্চয়ী হিসাব খোলেন।”

বিআইবিএমের মহাপরিচালক তৌফিক আহমদ চৌধূরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ার প্রফেসর এস এ চৌধুরী, বিআইবিএমের সুপার নিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলী বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা রাজী হাসান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পুরো কার্যক্রম সমন্বয় করার জন্য একটি উইং খোলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন কার্যক্রম আরও কার্যকর করার জন্য আগেই একটি পূর্ব পরিদর্শন প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়।

“যেসব শাখায় অনিয়মের আশঙ্কা থাকে সেখানে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। কোন ব্যাংক ভুল তথ্য দিলে জরিমানা করার পরিকল্পনা রয়েছে।”