বিশ্ব ব‌্যাংকের জলবায়ু ঋণ চাই না: হাছান মাহমুদ

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় বিশ্ব ব‌্যাংকের ঋণ নিতে আপত্তি জানিয়েছেন ক্ষমমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা হাছান মাহমুদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Feb 2017, 12:01 PM
Updated : 19 Feb 2017, 12:01 PM

“বিশ্ব ব্যাংক জলবায়ু নিয়ে ঋণ দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা করতে চায়। কিন্তু আমরা ঋণ চাই না, চাই অনুদান,” বলেছেন তিনি।

সংসদ ভবনের আইপিডি কনফারেন্স সেন্টারে রোববার ‘জলবায়ু অভিঘাত হতে বাংলাদেশের উপকূল সুরক্ষা : বর্ষায় সামুদ্রিক জোয়ারের প্লাবন থেকে রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিলে একথা বলেন সাবেক পরিবেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

গত বছর বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বাংলাদেশ সফরের সময় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলায় দুই বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

এক্ষেত্রে ঋণ না নেওয়ার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাছান মাহমুদ বলেন, “কারণ কোনো প্রকার ভূমিকা না থাকলেও বাংলাদেশ জলবায়ু সঙ্কটের অসহায় শিকার। এ সঙ্কটের মধ্য দিয়ে না গেলে প্রতিবছর বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আরও ১.৫ থেকে ২ শতাংশ বেশি হত।”

আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্ব ব‌্যাংককে বাদ দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপিরও সমালোচনা করেন।

“রুহুল কবীর রিজভী আহমেদসহ বিএনপির নেতারা যেভাবে বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষে সাফাই গাইছে, তাতে মনে হয় তারা তাদের (বিশ্ব ব্যাংকের) বেতনভুক্ত কর্মচারী।”

পদ্মা প্রকল্পে বিশ্ব ব‌্যাংকের অর্থায়নের কথা থাকলেও কানাডার একটি কোম্পানিকে পরামর্শকের কাজ দিতে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে তারা সরে গিয়েছিল। পরে তাদের বাদ দিয়েই সরকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু করে।

সম্প্রতি কানাডার আদালতের রায়ে ওই ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ‘গালগল্প’ বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়।

সংসদ ভবনে বেসরকারি সংস্থা কোস্ট ট্রাস্টের সহযোগিতায় পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির কার্যালয় আয়োজিত গোলটেবিলে পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, “জলবায়ু সঙ্কটের জন্য ধনী দেশগুলো দায়ী। তাই আমরা এ জন্য ভুক্তভোগী হয়ে সহায়তা নয়, ক্ষতিপূরণ চাই।”

২০১২ সালে মেক্সিকোয় জি-২০ বৈঠকে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলোর অর্থে একটি তহবিল গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

২০২০ সালের মধ্যে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার করে অর্থ দিয়ে এই তহবিল গঠনের অঙ্গীকার করেছিল উন্নত দেশগুলো।

 কিন্তু ওই অর্থের বেশির ভাগটাই ছাড় না হওয়ায় গত বছরের অক্টোবর মাসে ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্টের সভাপতিত্বে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

গোলটেবিল বৈঠকে পানি বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাত, সংসদ সদস্য জেবুন্নেসা বেগম, কোস্ট ট্রাস্টের সদস্য নেজা করিম ও মুজিবুর হক মনিরও বক্তব‌্য রাখেন।