ব্যবসা পরিবেশ সূচক উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা ‘এই মাসেই’

আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে জাতিসংঘের ব্যবসা পরিবেশ সূচকে ১০০ দেশের তালিকায় আসতে এই মাসের মধ্যে মহাপরিকল্পনা আসছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Jan 2017, 02:34 PM
Updated : 22 Jan 2017, 03:52 PM

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম রোববার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান।

বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের ‘ডুয়িং বিজনেস ২০১৭’ প্রতিবেদনে ব্যবসা করার পরিবেশের দিক দিয়ে বিশ্বের ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৭৬ নম্বরে।

নতুন ব্যবসা শুরু করা, অবকাঠামো নির্মাণের অনুমতি পাওয়া, বিদ্যুৎ সুবিধা, সম্পত্তির নিবন্ধন, ঋণ পাওয়ার সুযোগ, সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা, কর পরিশোধ, বৈদেশিক বাণিজ্য, চুক্তি বাস্তবায়ন ও দেউলিয়া হওয়া ব্যবসার উন্নয়ন সহজীকরণ- এই মাপকাঠির ভিত্তিতে এই তালিকা করা হয়।

সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মেয়াদ শেষে, অর্থাৎ ২০২০ সাল নাগাদ এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান কী করে ১০০ এর নিচে নামিয়ে আনা যায়, সেই পরিকল্পনা সাজাতে চাচ্ছে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ব্যবসার ক্ষেত্রে নিয়ম নীতি, প্রথা-পদ্ধতি, আইন-কানুন এই সবের প্রয়োজনীয় সংস্কার করে আগামী ৫ বছরের মধ্যে ১০০ এর নিচে নিয়ে আসব।”

এটা ‘জটিল’ কাজ হলেও করা ‘সম্ভব’ বলে মনে করছেন বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম‌্যান।

“ব্যবসা পরিবেশ সূচকে যে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠান যুক্ত আছে, তাদের কোন ক্ষেত্রে কী পরিবর্তন করলে সামগ্রিকভাবে বিনিয়োগ পরিস্থিতি উন্নত হবে, সেই ধরনের একটি কর্মপরিকল্পনা করছি। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশব্যাপী আমরা এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে নামব। প্রতি বছর যে হারে উন্নতির কথা চিন্তা করছি, আশা করছি সেটা করতে পারব।”

বিনিয়োগ ও ব্যবসার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন আগের তুলনায় ‘অধিকতর উপযোগী’ অবস্থায় আছে জানিয়ে আমিনুল ইসলাম বলেন, “দিন দিন সেটা উন্নততর হচ্ছে।”

বেসরকারিকরণ কমিশন ও বিনিয়োগ বোর্ডকে একীভূত করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠিত হওয়ার পর গত ৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এর পরিচালনা পর্ষদের প্রথম বৈঠক হয়।

ব্যবসা পরিবেশের সূচকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ওই সভায় একটি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিভিন্ন দপ্তর মন্ত্রণালয় নিয়ে কাজ শুরুর পর তার প্রভাব এরই মধ্যে মাঠ পর্যায়ে পড়ছে।

‘ভিশন ২০২১’ এবং ‘ভিশন ২০৪১’ বাস্তবায়নে বাংলাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক জোন এবং অনেকগুলো হাইটেক পার্ক স্থাপন করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।

“এখানে বিনিয়োগ তখনই আসবে, যখন পরিবেশ সৃষ্টি হবে। টাইম, কস্ট, ভিজিট-এক্ষেত্রে একটি পরিমাপক হিসাবে কাজ করে। তার মানে হচ্ছে, কোন কাজ করতে কত সময় লাগে, সেটা কমাতে হবে। ব্যয় কমাতে হবে, সবচেয়ে কম সংখ্যকবার গিয়েই কাজটি যেন করা যায়-সেই ব্যবস্থা থাকতে হবে।”

চলতি মাসের শেষের দিকে এই পকিল্পনা চূড়ান্ত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন আবুল কালাম আজাদ।

“মাস খানেক আগে আমরা সবগুলো মন্ত্রণালয়ে সঙ্গে বসে কোন কোন ক্ষেত্রে উন্নয়ন করা প্রয়োজন-তা সংশ্লিষ্টদের দেখিয়ে দিয়েছি।”

সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।