সচিবালয়ে বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে বেসরকারি খাতে পেনশন চালু নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “হ্যাঁ, সেটাও করব। কিন্তু সময় লাগবে। অবসর ভাতাভোগীদের জন্য কোম্পানিগুলোরও দায়বদ্ধতা আছে। এটা নিয়ে আমরা সব পক্ষের সঙ্গে পরে বসব।”
আগামী বাজেটের আগেই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে বলে জানান মুহিত।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের এই মেয়াদেই বেসরকারি খাতে পেনশন চালুর কথা বলে আসছেন অর্থমন্ত্রী।
গত বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, “আমরা পেনশন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার কথা ভাবছি। … সকল শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীসহ প্রবীণদের জন্য একটি সার্বজনীন ও টেকসই পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তন এখন সময়ের দাবি।”
দেশে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর মাত্র ৫ শতাংশ পেনশন পান, যাদের প্রায় সবাই সরকারি চাকুরে। বাকি ৯৫ শতাংশের মধ্যে প্রায় ৮ শতাংশ গ্রাচ্যুইটি সুবিধা পেলেও বেসরকারি খাতে অন্যদের জন্য সে সুবিধা নেই।
‘শতভাগ পেনশন তুলে ডুবেছেন’
যেসব অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকুরে পেনশনের পুরো অর্থ একসঙ্গে তুলেছেন তাদের সবাই ‘ডুবেছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী।
মুহিত বলেন, “যারা পেনশন শতভাগ উঠিয়েছে তারা ডুবেছে। তারা অনেকে ১০০ শতাংশ উঠিয়েছে, এটা ভুল সিদ্ধান্ত। পেনশন অবসরকালীন সময়ের সিকিউরিটি।
“তারা একশ শতাংশ তুলে সব ডুবেছে। এখন আমরা নতুন নতুন চেইঞ্জ করি, তারা কোনো সুবিধা পায় না। এজন্য ভবিষ্যতে যাতে এটা হয়, সেজন্য অর্ডার করেছি, কেউ ৫০ শতাংশের বেশি তুলতে পারবেন না।”
সামরিক ও বেসামরিক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য পেনশনের নতুন এ বিধান চালু করে মঙ্গলবার আদেশ জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
নতুন বিধানে একসঙ্গে পেনশনের সব অর্থ তোলার সুযোগ বন্ধ করে পেনশনের ৫০ শতাংশ অর্থ মাসিক ভিত্তিতে নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বর্তমানে কেউ চাইলে পেনশনের পুরো টাকা একসঙ্গে অথবা মাসে মাসেও তুলতে পারেন।
পেনশনধারীদের আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার স্বার্থে এই বিধান চালু করা হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়েছে।
পেনশনের নতুন বিধান আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। অর্থাৎ, এ বছরের ৩০ জুন বা তারপরে যাদের অবসরোত্তর ছুটি (পিআরএল) শেষ হবে তারা নতুন নিয়মের আওতায় আসবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন বেতন কমিশনের প্রতিবেদনে সরকারি কর্মচারীদের শতভাগ পেনশনের টাকা তুলে নেওয়ার পরিবর্তে একসঙ্গে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ তোলার সুযোগ রাখার সুপারিশ করা হয়েছিল।