বাংলাদেশ ব্যাংকই দায়ী: আরসিবিসি

বাংলাদেশের চুরি হওয়া রিজার্ভের ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিলিপিন্সের যে ব‌্যাংক থেকে জালিয়াতদের হাতে গেছে সেই রিজল কমার্সিয়াল ব‌্যাংক (আরসিবিসি) বলছে, এ ঘটনায় তাদের কোনো দায় নেই, বাংলাদেশ ব‌্যাংকই দায়ী।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Dec 2016, 06:33 PM
Updated : 13 Dec 2016, 06:39 PM

ওই ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন বলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশি এক পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব‌্যের পরদিন একথা বলেছে ব‌্যাংকটি।

আরসিবিসির পাঁচটি অ্যাকাউন্ট হয়ে বের হয়ে যাওয়া ৮১ মিলিয়ন ডলার আটকাতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বার্তা পাঠানো হলেও ফিলিপিনো ব্যাংকটি তা আমলে না নিয়ে অর্থ ছাড় করে অভিযোগে আরসিবিসির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ চেয়েছে বাংলাদেশ।

তবে আরসিবিসি বলছে, তারা অন‌্যায় কিছু করেনি।

ব্যাংকটির আইনজীবী থিয়ে দায়েপ মঙ্গলবার রয়টার্সকে বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার ইচ্ছাকৃত অবহেলার যে কথা বাংলাদেশি তদন্তকারী বলেছেন তা আরসিবিসি এতদিন যা বলে আসছে তাকেই প্রমাণ করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজেদের কর্মকাণ্ডই তাদের অর্থ হারানোর কারণ।

“তারা (বাংলাদেশ) এর দায়ভার আরসিবিসির ওপর চাপাতে পারে না, অর্থ চুরিতে যাদের কোনো দায় নেই।”

তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলায় বাংলাদেশ ব‌্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করা যায় কি না তা আরসিবিসি খুঁজে দেখবে বলেও জানান তিনি।

গত ফেব্রুয়ারিতে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সুইফট সিস্টেমে ভুয়া পরিশোধ অর্ডার পাঠিয়ে নিউ ইয়র্ক ফেড থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভের চুরি করা প্রায় দশ কোটি ডলারের মধ‌্যে ৮ কোটি ১০ লাখ রিজল ব‌্যাংকের একটি শাখা হয়ে জুয়ার বাজারে চলে যায়। তার মধ‌্যে এক ক‌্যাসিনো মালিকের ফেরত দেওয়া দেড় কোটি ডলার বাংলাদেশকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় রিজল ব্যাংককে ২০ কোটি ডলার জরিমানা করেছে ফিলিপিন্সের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই জরিমানার অর্থ পরিশোধ করলেও বাংলাদেশকে বাকি অর্থ ফেরতে কোনো দায় নিতে নারাজ ব‌্যাংকটি।

তবে ফিলিপিন্স সরকারের মাধ‌্যমে অর্থ ফেরতে তাদের বাধ‌্য করা যাবে বলে দেশটি ঘুরে এসে এ মাসের প্রথমে জানিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

এরমধ‌্যে গত বৃহস্পতিবার রিজার্ভ চুরির ঘটনা তদন্তে সরকার গঠিত কমিটির প্রধান মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন জানান, এতে বাংলাদেশ ব‌্যাংকের কর্মকর্তাদের গাফিলতি ছিল বলে তারা প্রমাণ পেয়েছেন।

এরপর সোমবার সিআইডির অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আলমের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তাও জড়িত বলে তারা মনে করছেন।

শাহ আলম বলেন, ওই কর্মকর্তারা জেনেশুনেই ব্যাংকের কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ঝুঁকির মধ্যে রেখেছিলেন, যাতে হ্যাকাররা নিউ ইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে অর্থ চুরি করতে পারে।

সন্দেহভাজন ওই কর্মকর্তাদের নাম না বললেও তাদের ‘শিগগিরই’ গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন সিআইডির এই কর্মকর্তা।