রিজার্ভ চুরিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবহেলাও ছিল: ফরাসউদ্দিন

রিজার্ভ চুরিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঁচ কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলা ও অসতর্কতার প্রমাণ তদন্তে উঠে এসেছে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2016, 06:53 PM
Updated : 8 Dec 2016, 07:06 PM

গত ফেব্রুয়ারিতে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভের আট কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির খবর প্রকাশের পর দেশ-বিদেশে তুমুল আলোচনার মধ্যে এই তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন ওই কমিটি মে মাসে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলেও তা প্রকাশ করেনি সরকার।

কয়েক দফায় প্রতিবেদন প্রকাশের কথা বললেও ‘দেশের স্বার্থে’ তা প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বৃহস্পতিবার ফরাসউদ্দিনকে উদ্ধৃত করে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিম্ন ও মধ্য পর্যায়ের ওই কর্মকর্তাদের অবহেলা পাওয়া গেলেও তারা এই অপরাধে সরাসরি জড়িত ছিলেন না।

“তাদের অবহেলা, অসতর্কতা ও পরোক্ষ সহযোগিতা ছিল। কমিটি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে, এই চুরির পেছনে ছিল বাইরের কেউ।”

ফরাসউদ্দিন ওই কর্মকর্তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেননি বলে রয়টার্সের ভাষ্য।

এই ঘটনার পর গভর্নর আতিউর রহমানকে বিদায় নিতে হলেও কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থাটিকে জানিয়েছেন।

ফরাসউদ্দিন ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পক্ষে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

“সরকার যদি এটা প্রকাশ করে তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে,” বলেন তিনি।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সম্প্রতি এই প্রতিবেদন ফিলিপিন্স সরকারকে দেওয়ার কথা বলেছেন।

গত ফেব্রুয়ারিতে সুইফট সিস্টেমে ভুয়া পরিশোধ অর্ডার পাঠিয়ে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংেকের প্রায় দশ কোটি ডলার সরিয়ে নেয় হ্যাকাররা। এর মধ্যে  ৮ কোটি ১০ লাখ ফিলিপিন্সের রিজল কর্মশিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন- আরসিবিসির একটি শাখা হয়ে জুয়ার বাজারে চলে যায়।

ওই অর্থ উত্তোলন এবং তা জুয়ার টেবিলে চলে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য আরসিবিসিকে দায়ী করেন ফরাসউদ্দিন।

ফিলিপিন্সের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এজন্য রিজল ব্যাংককে ২০ কোটি ডলার জরিমানা করেছে।

ওই জরিমানার অর্থ পরিশোধ করলেও বাংলাদেশের অর্থ ফেরত দিতে কিংবা দায় নিতে নারাজ আরসিবিসি।

এই চুরির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘অবহেলা’র ওপর দায় চাপাচ্ছে তারা।