তেলের আমদানি সাশ্রয়ে চীনা কোম্পানির সঙ্গে বিপিসির চুক্তি

জ্বালানি তেলের আমদানি সহজ ও সাশ্রয়ী করতে গভীর সমুদ্রে মুরিং পয়েন্ট নির্মাণ ও পাইপলাইন বসাতে চীনা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2016, 03:13 PM
Updated : 27 Oct 2017, 09:04 AM

প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে বৃহস্পতিবার হোটেল সোনারগাঁওয়ে চায়না পেট্রোলিয়াম ব্যুরো ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) মধ্যে এই চুক্তি হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, আমদানি করা জ্বালানি তেল চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারিতে আনার জন্য কক্সবাজারের মহেশখালীর গভীর সমুদ্রে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) নির্মাণ এবং সাগর ও ভূমির ভেতর দিয়ে মোট ২২০ কিলোমিটার ডাবল পাইপলাইন স্থাপন করা হবে।

‘ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপ লাইন’ শীর্ষক এই প্রকল্পের ব্যয়ের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ১০২১ কোটি ও বিপিসি ১১২ কোটি টাকা দেবে। বাকি ৪২৯৩ কোটি টাকা চীনের এক্সিম ব্যাংক অর্থায়ন করবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কর্ণফুলী নদীর চ্যানেলের নাব্যতা কম এবং চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে বড় অপরিশোধিত তেল বহনকারী জাহাজগুলো থেকে তেল খালাসে সময় ও অর্থের অপচয় হয়।

এসব জাহাজ গভীর সমুদ্রে নোঙ্গর করে থাকে এবং সেখান থেকে ছোট জাহাজে করে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে নিয়ে আসা হয়। এ কারণে গভীর সমুদ্রে বড় জাহাজ থেকে তেল খালাস করে তা পাইপলাইনের মাধ্যমে নিয়ে আসার জন্য এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নভেম্বরে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এর আওতায় কক্সাবাজারের মহেশখালী এলাকায় স্টোরেজ ট্যাংক ও পাম্প স্টেশন স্থাপন করা হবে। এর মধ্যে ৫০ হাজার ঘনমিটার ধারণক্ষমতার অপরিশোধিত তেলের জন্য তিনটি ও ডিজেলের জন্য ৩০ হাজার ঘনমিটার তিনটি ট্যাংক থাকবে।

জাহাজ থেকে ডিপো ও ডিপো থেকে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে তেল নিয়ে আসার জন্য মোট ২২০ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মান করা হবে, যার মধ্যে সমুদ্রে থাকবে ১৪৬ কিলোমিটার ও ভূমিতে থাকবে ৭৪ কিলোমিটার।        

প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তেল খালাস বাবদ বছরে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে মনে করছে বিপিসি।

নতুন যে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং নির্মাণ করা হচ্ছে সেটির বাৎসরিক খালাসের ক্ষমতা হবে ৯০ লাখ মেট্রিক টন। এটি ব্যবহার করে ৪৮ ঘণ্টায় এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন অপরিশোধিত অয়েল এবং ২৮ ঘণ্টায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল খালাস করা যাবে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ণ রিফাইনারি দেশের একমাত্র পেট্রোলিয়াম জ্বালানি তেল শোধনাগার। কোম্পানিটির বার্ষিক অপরিশোধিত তেল প্রক্রিয়াকরণের ক্ষমতা ১৫ লাখ মেট্রিক টন। এ শোধনাগারের দ্বিতীয় ইউনিট বাস্তবায়িত হলে প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা প্রতি বছরে ৪৫ লাখ মেট্রিক টন হবে।

বর্তমানে দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণে প্রতিবছর প্রায় ৩৫ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা হয়।