রিজার্ভ চুরি: বাংলাদেশের তদন্তের ফল জানতে চায় ফিলিপিন্স

রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থ দ্রুত উদ্ধারে সহায়তার জন্য ব্যাংক খাতে হ্যাকিংয়ের সবচেয়ে বড় এই ঘটনায় বাংলাদেশের তদন্তের প্রতিবেদন চেয়েছে ফিলিপিন্স সরকার।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2016, 10:20 AM
Updated : 4 Dec 2016, 11:36 AM

দেশটির অর্থমন্ত্রী কার্লোস ডমিনগেজের এক বিবৃতিকে উদ্ধৃত করে রোববার রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সফররত বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে গত সপ্তাহে এক বৈঠকের পর তিনি বলেন, ঢাকা তার তদন্তের ফল বিনিময়ের জন্য ম্যানিলা ‘জোরালো সুপারিশ’ করছে।

বাংলাদেশের চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে ফিলিপিন্স সরকারের পক্ষে যা যা করা সম্ভব তা করা হবে বলেও আশ্বাস দেন রডরিগেজ।

গত ফেব্রুয়ারিতে ভুয়া সুইফট বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব‌্যাংক অফ নিউ ইয়র্কে রাখা বাংলাদেশের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপিন্সের রিজল ব‌্যাংকে পাঠানো হয়েছিল। ওই অর্থ পরে জুয়ার টেবিলে চলে যায়।  

বিশ্বজুড়ে তোলপাড়ের মধ‌্যে ফিলিপিন্সের সিনেট কমিটি এই ঘটনার তদন্ত শুরুর পর এক ক‌্যাসিনো মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধারের পর তা ফেরত পায় বাংলাদেশ। আরও দেড় দুই কোটি ৭০ লাখ ডলার জব্দ করা আছে।

বাকি অর্থ উদ্ধারে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল ফিলিপিন্স সফর শেষে দুদিন আগে ফিরেছেন।

প্রতিনিধি দলের উদ্দেশ্যে ডমিনগেজের দেওয়া বক্তব্য উদ্ধৃত করে বিবৃতিতে বলা হয়, “আমাদের পক্ষে সম্ভব জোরালো সর্বোচ্চ উপায়ে আইনগত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ চুরির তদন্তের ফল প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের তদন্তের ফল জানতে দিতে যায় না সরকার।

চুরি যাওয়া অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসা ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট রডরিগো দুতার্তে ‘জরুরি কারণ’ দেখিয়ে সফররত বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করে দিয়েছেন বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ফিলিপিন্সের সরকারের সঙ্গে তদন্তের ফল বিনিময় করা বিষয়ে জানতে চাইলে ম্যানিলায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ বলেন, “আমাদের কাছে এখনো কেউ কিছু জানতে চায়নি।”

তবে ফিলিপিন্সের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নেস্তর এসপেনিলা বলেন, তদন্ত এখনো শেষ না হওয়া ‘প্রাথমিক হালনাগাদ তথ্য’ দেবে বলে বাংলাদেশের কাছে ম্যানিলা আশ্বাস পেয়েছে।

দায় অস্বীকারের পাশাপাশি বাংলাদেশের চুরি যাওয়া রিজার্ভের অর্থ ফেরত দিতে রিজল ব‌্যাংক বাধ্য করা হবে বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন।

তবে রিজল ব্যাংক ঘটনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘অবহেলাকে’ দায়ী করে অর্থ ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

চুরি যাওয়া এই অর্থ ব্যাংকের মাধ্যমে সরিয়ে নেওয়া ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় রিজল ব্যাংককে ফিলিপিন্সের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২০ কোটি ডলার জরিমানা করা হয়েছে।

আইনমন্ত্রী বলেছেন, ওই জরিমানা পরিশোধ করার মধ্য দিয়ে রিজল ব্যাংক ঘটনার দায় স্বীকার করে নিয়েছে।

এই চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত মাসের রিজল ব্যাংকের পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে মুদ্রাপাচারবিরোধী সংস্থা।

এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই, ইন্টারপোল, বাংলাদেশ পুলিশ ও ফিলিপিন্স সরকারের তদন্তের পরও এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।