দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসার মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে এখনও ২ কোটি ৮০ লাখ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে। শুধু অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমেই দারিদ্র্যসীমা থেকে তাদের বের করে আনা সহজ হবে না।
ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি উৎপাদন খাতে আয় বাড়ানোর সুযোগ তৈরি, শ্রমিক ও সামাজিক খাতে পেনশন ব্যবস্থা চালু করার পরামর্শ দেন ঢাকায় বিশ্ব ব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি চিমিয়াও ফান।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের দারিদ্র্য মানুষের আয় বাড়াতে সমতা ও সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।”
‘বাংলাদেশ সোশ্যাল প্রটেকশন অ্যান্ড লেবার রিভিউ’ শীর্ষক এই প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জের বিষয়টি স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, “কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে আমাদের ১ কোটি ২৯ লাখ লোকের কর্মসংস্থান করতে হবে। এত বিশাল পরিমাণ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা অনেক কঠিন। এটা চ্যালেঞ্জ হলেও আমরা পারব। ২০৩০ সালের আগেই দারিদ্র্য দূর করতে পারব।”
তিনি দরিদ্র মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় যেসব কর্মসূচি চলমান রয়েছে, সেখানে সমন্বয়ের ওপর জোর দেন।
খাদ্য নিরাপত্তায় ১০ টাকা কেজিতে চাল বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে সরকারের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
তিনি সেই সঙ্গে বলেন, “আমার এলাকায় তুলনামূলকভাবে কম অনিয়ম হয়েছে, আমার এলাকার মানুষ তুলনামূলক ভালো।”
কুমিল্লার বাসিন্দা মুস্তফা কামাল আরও বলেন, “সব এলাকার ছাত্রলীগ-যুবলীগ খারাপ না। আমিও ছাত্রলীগ করে এসেছি, আমি খারাপ নই।”
পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, বিআইডিএস’র গবেষণা পরিচালক রুশিদান ইসলাম রহমান, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জিল্লার রহমান, বিশ্ব ব্যাংকের প্রোগ্রাম লিডার ইফফাত শরিফও অনুষ্ঠানে কথা বলেন।
হোসেন জিল্লুর বলেন, বাংলাদেশ সামাজিক নিরাপত্তায় অনেক উদ্ভাবনী কাজ হয়েছে। আগে এক সময় ভিজিএফ কার্ড দিয়ে শুরু করেছিলো। এখন স্কুলে গরিব শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের এই উদ্ভাবনী বিশ্বের অন্য দেশগুলোর জন্য কাজে লাগতে পারে।
বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষায় আগ্রহী করতে সরকারের ভূমিকা প্রত্যাশা করেন তিনি।
“টেকনিক্যাল শিক্ষা নিয়ে সমাজে এক ধরনের খারাপ ধারণা প্রচলিত রয়েছে। অনেকে মনে করেন, এরা গরিব। তাই এই ধারণা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।”