রিজার্ভ চুরির হোতাদের ধরতে দেগিতোর সহায়তা চায় এফবিআই

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে গচ্ছিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ থেকে ৮১ মিলিয়ন ডলার সরানোর হোতাদের খুঁজে পেতে ফিলিপিন্সের রিজল ব্যাংকের সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগিতোর সহায়তা চেয়েছে এফবিআই।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2016, 03:25 PM
Updated : 28 Sept 2016, 03:29 PM

ফেব্রুয়ারির শুরুতে বিশ্বজুড়ে আন্তঃব্যাংক মুদ্রা লেনদেনের মাধ্যম সুইফট মেসেজিং সিস্টেমে জালিয়াতির মাধ্যমে চুরি করা রিজার্ভের ওই অর্থ ছাড় হওয়ার সময় রিজল ব্যাংকের মাকাতি শহরের ওই শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন দেগিতো।

রিজল ব্যাংকের এই সাবেক শাখা ব্যবস্থাপকের আইনজীবী ফার্দিনান্দ তোপাসিওর বরাত দিয়ে বুধবার রয়টার্স জানায়, শাখাটির চারটি অ্যাকাউন্টে যাওয়া ওই অর্থ কে গ্রহণ করে- এসব তথ্যসহ দেগিতো এবিষয়ে যা যা জানেন তা বলার জন্য এফবিআই তার সামনে একটি প্রস্তাব দিয়েছে।

স্বাক্ষর না হওয়া ওই প্রস্তাবনাপত্রের একটি কপি তোপাসিও রয়টার্সকে দেখিয়েছে বলে দাবি করা হয় তাদের প্রতিবেদনে।

তোপাসিওর বরাত দিয়ে রয়টার্স আরও জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারীরা রিজল ব্যাংকের দীর্ঘ দিনের গ্রাহক ক্যাসিনো মালিক কিম অংয়ের বিষয়ে সব ধরনের তথ্য দেগিতোর কাছ থেকে পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রস্তাবিত চুক্তিপত্র অনুযায়ী, দেগিতো যেসব তথ্য প্রমাণ দেবেন তা আদালতে তার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে না, তবে তিনি কোনো মিথ্যা তথ্য দিলে বা প্রাসঙ্গিক কোনো তথ্য গোপন করলে তার দায়-দায়িত্ব সাবেক ওই ব্যাংকারকেই নিতে হবে।

রিজল ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিট শাখা

রিজল ব্যাংকের মাকাতি সিটির জুপিটার স্ট্রিট শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক দেগিতো রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট লরেঞ্জো তানের করা শপথভঙ্গের এক মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

দেগিতোকে ছাঁটাই করার পর ওই মামলা করেছিলেন তান, যিনি নিজেও রিজার্ভ চুরির ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ জালিয়াতির মাধ্যমে রিজল ব্যাংকের যে চারটি অ্যাকাউন্টে জমা হয় সেই সব অ্যাকাউন্ট ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে খুলে দিয়েছিলেন বলে দাবি করে আসছেন দেগিতো।

রয়টার্স বলছে, ঘটনার হোতাদের ধরতে তথ্য প্রমাণের সহায়তার বিনিময়ে এফবিআই দেগিতো, তার স্বামী ও তিন সন্তানসহ পুরো পরিবারকে যুক্তরাষ্ট্রের পুনর্বাসিত করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

গত এপ্রিলে সিনেট কমিটিতে শুনানিতে মায়া সান্তোস দেগিতো- ছবি: রয়টার্স

গত মে থেকে ম্যানিলায় দেগিতোর সঙ্গে মুখোমুখি বেশ কয়েকটি বৈঠকে দুই পক্ষের মধ্যে এসব কথা হয় বলে জানান তার আইনজীবী তোপাসিও।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা করা বিদেশিদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি ভিসা প্রোগ্রাম রয়েছে; তবে এ ধরনের সুযোগ বছরে মাত্র ২০০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

তবে দেগিতো ও তার পরিবারকে পুনর্বাসনের এই প্রস্তাব শুধু তার দেওয়া তথ্য-প্রমাণের ওপরই নির্ভর করবে বলে শর্ত থাকায় এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানান তোপাসিও।

রয়টার্সকে তিনি বলেন, “এটা খুবই বিপজ্জনক বলে আমি মনে করি। আমরা সম্পূর্ণ নিরাপত্তা চাই।”