ভ‌্যাট অনলাইনে নিতে পরামর্শ অর্থমন্ত্রীকে

হয়রানি এড়াতে ভ‌্যাট অনলাইনে নেওয়ার পদ্ধতি চালু করতে অর্থমন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়েছেন ব‌্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই নেতারা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Sept 2016, 11:29 AM
Updated : 8 Sept 2016, 02:57 PM

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে আলোচনায় এই পরামর্শ দিয়ে আসেন তারা।

বৈঠকের পর এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ সাংবাদিকদের বলেন, “প্রত্যেক ব্যবসায়ীই ভ্যাট-ট‌্যাক্স দিতে চায়, কিন্তু কেউ হয়রানি চায় না।

“মনে রাখতে হবে, ভ্যাট সিস্টেম সারা পৃথিবীতে ওয়ান অব দ্যা বেস্ট সিস্টেম। এটা এখন অনলাইন হয়ে গেলে হয়রানির ক্ষেত্রটা অনেক কমে যাবে।”

ভ্যাট নিয়ে হয়রানিতে পড়ছেন কি না- এ প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে মাতলুব বলেন, “উনি (অর্থমন্ত্রী) বলেছেন, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ হয়, কিছু কিছু মানুষ দুষ্টু প্রকৃতির হয়, কিছু কিছু মানুষ ভালো হয়, এগুলো তো হবে। চলার পথে কাঁটা থাকবেই।

“একটা কথা উনি (অর্থমন্ত্রী) স্পষ্ট বলেছেন যে, যেহেতু এনবিআর একটি কমিটি করেছে, সেই কমিটিতে এগুলো তুলে ধরা হবে। স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে, কোনো রকমভাবে হয়রানি একসেপ্ট করা হবে না।”

ব‌্যবসায়ীদের আপত্তির মুখে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক আইন এই বছর কার্যকর করতে পারেনি সরকার। ফলে নানা ক্ষেত্রে নানা হারে ভ‌্যাট নেওয়া হচ্ছে। আবার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য রয়েছে ‘প্যাকেজ ভ্যাট’।

নতুন আইনে ভ্যাটের ক্ষেত্রে কোনো স্তর রাখা হয়নি, সব ক্ষেত্রেই ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর প্রযোজ্য হবে।

মাতলুব বলেন, “প্যাকেজ ভ্যাট নিয়ে আমরা মন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়েছি, কারণ উনি আমাদের কথা বিবেচনা করে এটা আরও এক বছর বাড়িয়ে দিয়েছেন।

“আমরা উনাকে বললাম, বাড়ালেনই যখন, তখন এটা একটু আমাদের ক্ষমতার মধ্যে রাখলে ভালো হত। আমরা উনাকে রিকুয়েস্ট করেছি যে টুয়েন্টি পার্সেন্টে করে যদি একটু বাড়ান এক্সজিসটিংয়ের জন্য, আর যারা নতুন তারা ১৪ হাজার করে দিক। এখানে তিনি চিন্তা-ভাবনা করবেন।”

আগামী অর্থ বছর থেকে ভ্যাট আইন কার্যকর নিয়ে আপত্তি আছে কি না- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে বিজেএমইএর সাবেক সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, নতুন আইনে ভ‌্যাটের হিসাব কষতে ছোট ছোট ব‌্যবসায়ীদেরও হিসাব রক্ষক রাখতে হবে, যা এখনও সম্ভবপর নয়।

“আমরা সেটাকে তৈরি করার জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রাখব, সরকারও এ ব্যাপারে এগিয়ে আসবে। এটা সময়ের উপর…।”

গত জুন মাসে বাজেট পাস হওয়ার পর এফবিসিসিআই নেতাদের সঙ্গে এটাই অর্থমন্ত্রীর প্রথম বৈঠক।

মাতলুব বলেন, “বাজেট পরবর্তীতে কী হবে, কীভাবে আমরা ৩ লাখ ২৪ হাজার কোটি টাকা উদ্ধার করব বা আমরা দেব, সরকার কীভাবে পাবে এবং এর কোথায় কোথায় সমস্যা আছে, সেটা নিয়ে বিস্তারিত আলাপের জন্য চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের একটা ডেলিগেশন উনার কাছে এসেছিলাম।

“স্পেসিফিকভাবে এনবিআর ও এফবিসিসিআই যৌথভাবে দেশব্যাপী যত ব্যবসায়ী সমিতি ও চেম্বার আছে আমরা দেশব্যাপী ভ্যাট অনলাইন কীভাবে হবে, ব্যবসায়ীদের বেনিফিট কী, দেশের বেনিফিট কী- এটা নিয়ে আমরা ৫৪টা প্রোগ্রাম আগামী ছয় মাসের মধ্যে করব।”

“আমরা মন্ত্রীকে বলেছি, যত ব্যবসায়ী সমিতি আছে, সবাই সরকারের সাথে আছি। আমরা ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ভ্যাটের যে ব্যাপারটা রয়েছে, আমরা সমিতিরাই সে টাকাটা উঠিয়ে দেব,” বলেন মাতলুব।

সেই সঙ্গে কয়েকটি ক্ষেত্রে করের ঊর্ধ্বহারের বিষয়টি অর্থমন্ত্রীর গোচরে এনেছেন ব‌্যবসায়ী নেতারা।

মুহিত সাংবাদিকদের বলেন, “বাজেটের পরে তাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হল। বাজেটে যেসব পরিবর্তন তারা চান, সেসব প্রোপোজাল দিয়ে গেছেন। আমি বলেছি, আপনারা লিখিতভাবে দিয়েছেন, দেখব, তারপরে সিলেকশন করব।”