দেশে ২০২৪ সালের পর কেউ গরীব থাকবে না: অর্থমন্ত্রী

বৈষম্য সামাল দিতে পারলে ২০২৪ সালের পর দেশে আর কোনো গরীব থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 August 2016, 01:05 PM
Updated : 16 August 2016, 01:05 PM

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে এক মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের ব্ক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে মানুষ ও সম্পদ যেভাবে হারিয়েছি, বিশেষ করে উপযুক্ত মানুষ... সেখান থেকে বেরিয়ে এসে এখন যে অবস্থানে আছি, সেটা খুবই গর্বের বিষয়। ঈর্ষণীয়ও বটে।

“এরমধ্যে যেভাবে অনেকগুলো বিষয়ে আমরা উদাহরণ স্থাপন করতে পেরেছি, সেটা নিয়ে আমরা গর্ববোধ করতে পারি।”

একাত্তরে বিপ্লবের পর পঁচাত্তরে প্রতিবিপ্লব হয়েছে মন্তব্য করে বাংলাদেশ নব্বইয়ে এসে বিপ্লবের মূল চেতনায় ফিরে আসতে শুরু করে বলে ভাষ্য আওয়ামী লীগ নেতা মুহিতের।

‍“এ রকম প্রতি বিপ্লব অনেক দেশেই হয়েছে। ফ্রান্সেও তাদের বিপ্লবের পর প্রতিবিল্পব হয়েছে। বিপ্লবের মূল চেতনায় ফিরে যেতে তাদের এরপর প্রায় ৮০ বছর লেগেছে। আমরা ফিরেছি ৯০ সালে।”

এরপর গত ২৬ বছরে দেশে দারিদ্র্য কমার সঙ্গে সঙ্গে বৈষম্যও কমেছে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী।

“এরপর গত ২৬ বছরে আমাদের কেবল গরীবই কমেনি। আমার হিসাবে বৈষম্যও কমেছে। যখন উন্নয়ন হয়, তখন বৈষম্য কিছুটা বাড়ে। আমাদের এখানে এক সময় কিছুটা বেড়েছিল, বর্তমানে যে রেকর্ড আছে, তাতে দেখা যায়, বৈষম্য বাড়ছে না। এর কারণ আমরা সকলেই খুবই সচেতন আছি।”

উন্নয়নের ভবিষ্যৎ যাত্রায় সবাই একত্রে থাকলে তা সুখকর ও দ্রুততর হবে বলেও মন্তব্য করেন মুহিত।

তিনি বলেন, “আমাদের উন্নয়নের মূলকথা হচ্ছে, উন্নয়নের জন্য মানুষের চাহিদা বাড়াতে হবে। মানুষের চাহিদা বাড়াতে হলে তাদের সবাইকে যথেষ্ট আয়ের সুযোগ করে দিতে হবে।

“সেটা যদি আমরা অব্যাহত রাখতে পারি, তাহলে অবশ্যই বৈষম্যের দিকে নজর দিতে হবে। বৈষম্যও বাড়বে, চাহিদাও বাড়তে-এটা সম্ভবপর নয়।”

এটা সামাল দিতে না পারায় মধ্য আয়ের দেশগুলো জটিলতায় পড়ছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “সমাজের অধিকাংশ যখন একটা ভাল অবস্থায় পৌছে যায়, তখন এখান থেকে দৃষ্টি সরে যায়। যদি আমরা মনে রাখি, আমাদের আসল লক্ষ্য হলো চাহিদার বৃদ্ধি, তাহলে আমাদের দৃষ্টি কোনোভাবে আসল জায়গা থেকে সরবে না।

“আমার যদি আজ ৪০ শতাংশ চাহিদা থাকে, এটাকে ৬০ শতাংশে নিতে হবে... এরপর ৮০ শতাংশে নিতে হবে। ৮০ হলে ৯০ শতাংশে নিতে হবে।”

বাংলাদেশ দারিদ্র্যমুক্তির সেই পথেই এগিয়ে যাচ্ছে দাবি করে উন্নয়নের এই রাস্তা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেন মুহিত।

“আমরা সেই পথেই এগুচ্ছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ২০২৪ সালে আমরা সেই অবস্থায় পৌছুতে পারব। সেই উজ্জ্বল ভবিষ্যতের চিন্তা করার সুযোগ আমাদেরকে করে দিয়েছেন, আমাদের জাতির পিতা। রাস্তা তিনি দেখিয়ে গেছেন তিনি। তার ফলে এখন দৃপ্ত কণ্ঠে বলতে পারি, এই দেশে আর কোনো গরীব ২০২৪ সালের পরে থাকবে না।”

অর্থবিভাগ এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিষয়ক বিভাগ কর্মকর্তা ও কর্মচারী কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক মো. আব্দুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, অর্থ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মাহবুব আহমেদ এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. ইউনুসুর রহমান বক্তব্য রাখেন।