ঢাকা দক্ষিণের ৩ হাজার কোটি টাকার বাজেট

চলতি অর্থবছরের জন্য ৩ হাজার ১৮৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2016, 01:00 PM
Updated : 28 July 2016, 04:19 PM

বৃহস্পতিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মিলনায়তনে বাজেট ঘোষণা করে ডিসিসি দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, নাগরিকদের গৃহকর না বাড়িয়েই রাজস্ব আদায় বাড়ানোর লক্ষ্য ঠিক করেছেন তারা।

২০১৫-১৬ অর্থ বছরের বাজেটে ২৮৫ কোটি টাকা কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও আদায় হয়েছিল ১৮০ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা আগের বারের দ্বিগুণের বেশি ৫০০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে।

করের লক্ষ্যমাত্রা বাড়লেও গৃহকর আদায়ে সমতা আনার মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পরিকল্পনা জানান মেয়র।

“হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানো হবে না। এতে সমতা আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা করতে পারলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।”

নতুন বাজেটে নিজস্ব খাত থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৩৯১ কোটি ২৭ লাখ টাকা।

এছাড়া সরকারি অনুদান ১৮ কোটি টাকা, সরকারি বিশেষ অনুদান বাবদ ২০০ কোটি টাকা আয় ধরা হয়েছে। সরকারি ও বিদেশি সহায়তা প্রকল্প খাতে ১ হাজার ৪৮৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

আয়ের খাতে বাজার সালামী থেকে ৬৫০ কোটি, বাজার ভাড়া থেকে ৩০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

এছাড়া ট্রেড লাইসেন্স ফি ৬৫ কোটি, রিকশার লাইসেন্স ফি ৩ কোটি ৬০ লাখ, টার্মিনাল থেকে ৫ কোটি ৬০ লাখ, অস্থায়ী পশুরহাট ইজারা থেকে ৫ কোটি ৬০ লাখ, রাস্তা খনন ফি ২৮ কোটি, যন্ত্রপাতি ভাড়া ১০ কোটি, সম্পত্তি হস্তান্তর কর খাতে ৬৫ কোটি, শিশু পার্ক থেকে ৬ কোটি ৭০ লাখ, কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া ৩ কোটি টাকা এবং স্থায়ী আমানতের সুদ বাবদ ৩ কোটি টাকা আয় ধরা হয়েছে।

ডিসিসি দক্ষিণের বাজেটে সবচেয়ে বেশি ৯৪৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন খাতে।

এছাড়া ভৌত অকাঠামো নির্মাণ, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ৫৬০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন খাতে ৫৩৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। কর্মীদের বেতন ভাতা বাবদ ২৪০ কোটি এবং সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি ও সম্পদ ক্রয় বাবদ ২০৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে বাজেটে।

এছাড়া বিদ্যুত, জ্বালানি, পানি ও গ্যাস বাবদ ৭৯ কোটি, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে ২৯ কোটি ৭৫ লাখ, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ১১ কোটি ৫০ লাখ, বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প খাতে ২০ কোটি, অপ্রত্যাশিত উন্নয়ন খাতে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

এছাড়া কবরস্থান ও শ্মশানঘাট সংস্কার ও উন্নয়নে ১৪ কোটি ২৫ লাখ, বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক খাতে ১৪ কোটি, নাগরিক সুবিধা উন্নয়ন খাতে ১৫১ কোটি ৫০ লাখ, পরিবেশ উন্নয়নে ৭৮ কোটি ৪৫ লাখ, প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন সংস্থার চাঁদা বাবদ ৪ কোটি ৮০ লাখ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে নতুন অন্তর্ভুক্ত ৮টি ইউনিয়নের উন্নয়নে ২০ কোটি, পাবলিক টয়লেট নির্মাণে ৯ কোটি এবং ল্যান্ডফিল উন্নয়নের জন্য ২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে বাজেটে।

২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাজেট ছিল ২ হাজার ৮৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা, ওই বছর ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৩২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

গত বছর ঘাটতি থাকার পরও তিন হাজার কোটি টাকার বেশি বাজেট দেওয়ার পক্ষে যুক্তি হিসেবে মেয়র খোকন বলেন, “দক্ষিণের লোকজনের স্বপ্ন বড়, তাই বাজেটের আকারও বড় করছি।

“গতবারের তুলনায় এবার লক্ষ্যমাত্রা বেশি পূরণ হবে। কারণ এবার প্রকল্পে প্রায় ১৪ কোটি টাকার জোগান হবে। আর ১৫টি বড় মার্কেট তৈরি হচ্ছে, সেখান থেকেও টাকা আসবে।”

গৃহকর থেকে আয় বাড়ার আশার করার পাশাপাশি বাড়ির ছাদে বাগান করলে ওই বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্সের ওপর ১০ হারের রেয়াত সুবিধা রাখা হবে বলেও জানান তিনি।

“গ্রিন ঢাকার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই আমরা বাজেটে এ সুবিধা রেখেছি। ট্যাক্সের যে টাকা বাঁচবে তা দিয়েই লোকজন ছাদে বাগান করতে পারবে। এটি একটি বড় প্রণোদনা।”