বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্য নতুন মুদ্রানীতিতে

বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যকে সামনে রেখে নতুন মুদ্রানীতি আসছে।

ফারহান ফেরদৌসবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 July 2016, 02:29 PM
Updated : 19 July 2016, 02:29 PM

চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য (জুলাই-ডিসেম্বর) ২৬ জুলাই এই মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন গভর্নর ফজলে কবির।

দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই হবে তার প্রথম মুদ্রানীতি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরূপাক্ষ পাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এতথ্য জানিয়ে বলেন, “বেসরকারি খাতে যেন ভালো মানের বিনিয়োগ হয় সে বিষয়টিকে সামনে রেখে আমরা এবারের মুদ্রানীতি নিয়ে কাজ করছি।”

২৬ জুলাই সকাল ১১টার এই মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।

ভালো মানের বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে বিরূপাক্ষ পাল বলেন, “এখন যদি কেউ বলে আমি হিরা বানানোর কারখানা করব সেখানে হয়তো ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে। কিন্তু সেখানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অথবা মানুষের চাকরি সেভাবে বাড়বে না। এটা ভালো মানের বিনিয়োগ নয় ।

“সে কারণেই আমাদের এবারের মুদ্রানীতির মূল লক্ষ্য হচ্ছে, ভাল মানের বিনিয়োগ বাড়ানো। একইসঙ্গে মূল্যস্ফীতি যাতে অসহনীয় পর্যায় চলে না যায় সে বিষয়টিও সক্রিয় বিবেচনায় রাখা হবে।

“বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকারীদের কষ্ট লাঘব হয় সেরকম মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছি আমরা,” বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ।

বিরূপাক্ষ বলেন, বাজেটে ঘোষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনই হবে এবারের মুদ্রানীতির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।

১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৮ শতাংশে আটকে রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে বাজেটে।

৩০ জুন শেষ হওয়া ২০১৫-১৬ অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। মে মাস পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ৪০ শতাংশ।

জুনের হিসাব শেষে প্রবৃদ্ধি ১৭ শতাংশের কাছাকাছি বা ১৭ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

একইসঙ্গে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৯ থেকে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ২ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল গত অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতিতে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ।

আর জুলাই-মার্চ সময়ের (নয় মাস) হিসাব কষে বিবিএস যে তথ্য দিয়েছে তাতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ০৫ শতাংশ অর্জনের কথা বলা হয়েছে।

বরাবরের মতো এবারও নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণার আগে অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, ব্যাংকার ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

১১ জুলাই রাজধানীর একটি হোটেলে গভর্নরের সভাপতিত্বে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেখে বিনিয়োগবান্ধব মুদ্রানীতি প্রণয়নের জন্য তারা মত দিয়েছেন বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এছাড়া নতুন মুদ্রানীতি নিয়ে শনিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে গভর্নর বৈঠক করেছেন।

প্রতি অর্থবছরে দুটি মুদ্রানীতি (জুলাই-ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি-জুন) ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদের মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে ২৬ জুলাই।