বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের প্রধান উন্নয়ন সহযোগী এ সংস্থার প্রেসিডেন্ট শিনিচি কিতাওকা বলেন, “বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান অব্যাহত রাখার বিষয়েও আমরা দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ।”
জাইকা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পাশাপাশি যেসব স্থানে তাদের প্রকল্প চলছে, সেখানে নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
একদিন আগে মঙ্গলবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম গুলশান হামলায় নাগরিকদের প্রাণহানি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না বলে জাপান ও ইতালির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীরা আশ্বস্ত করেছেন বলে জানিয়েছিলেন।
শুক্রবার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে বন্দুকধারীরা হামলা চালিয়ে যে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করে তাদের মধ্যে নয়জন ইতালির নাগরিক।
জাইকার সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৫ সালের মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগিতা প্রকল্পে ৪৭৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে জাপান।
সর্বশেষ ঢাকার বহু প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নে জাইকার সঙ্গে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ সরকার।
বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে কঠোর পরিশ্রমরত জাপানি নাগরিকদের গুলশানের ওই ঘটনার শিকার হওয়াকে দুঃখজনক উল্লেখ করে জাইকার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “এই ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম যেসব অপরাধী করেছে তাদের প্রতি আমাদের ক্ষোভ প্রশমন অসম্ভব।”
বিজ্ঞপ্তিতে হামলায় নিহতদের আত্মার মঙ্গল কামনার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানিয়ে আহতদের আশু আরোগ্য কামনা করেন জাইকার প্রেসিডেন্ট।
জাইকার পক্ষ থেকে ঘটনার শিকার পরিবারের সদস্যদের ‘যথাসম্ভব সহযোগিতার’ আশ্বাসও দেন তিনি।
জাইকার অর্থায়নে রাজধানী ঢাকায় ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার মেট্রোরেল রুট-৬ প্রকল্পে জাইকা সহায়তা দিচ্ছে ১৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
বিজ্ঞপ্তিতে গত অক্টোবরে রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশির হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে বলা হয়, ওই ঘটনার পর নিরাপত্তা সংক্রান্ত পদক্ষেপ উন্নত করার পাশাপাশি ‘বিপদ সম্পর্কে’ জাইকা-সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে।
এতে বলা হয়েছে, জাইকা অতি সম্প্রতি তাদেরকে আবারও ‘বাড়তি সতর্কতা’ অবলম্বন করতে বলে, বিশেষ করে রোজা ও রোজা পরবর্তী সময়ের জন্য।
“এতো সব পদক্ষেপ নেওয়ার পরও এমন ঘটনা খুবই পরিতাপের।”
কক্সবাজারের মহেশখালীতে মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকার যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে জাইকা দেবে ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মাণাধীন পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণেও অর্থ দিচ্ছে সংস্থাটি।