ঋণ অনিয়মে অপসারিত অগ্রণীর এমডি

ঋণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবদুল হামিদকে অপসারণ করা হয়েছে।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2016, 07:57 AM
Updated : 30 June 2016, 12:45 PM

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত নির্দেশনা বৃহস্পতিবার অগ্রণী ব্যাংকে পাঠানো হয়।

অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জায়েদ বখত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এমডিকে অপসারণ সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছি। ইমিডিয়েটলি অ্যাকশন নেওয়া হয়েছে।”

৭৯২ কোটি টাকা ঋণ বিতরণে অনিয়ম পাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক এমডি হামিদকে অপসারণের নির্দেশনা দেয় বলে জায়েদ বখত জানান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কমিটি এ বিষয়ে সুপারিশ করলে গভর্নর ফজলে করিব বুধবার বিকালে অপসারণের ফাইল অনুমোদন করেন। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে চিঠি যায় অগ্রণী ব্যাংকে।

মুন গ্রুপের ঋণ কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে এর আগে গত জানুয়ারিতে অগ্রণীর উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মিজানুর রহমান খানের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন মিজানুরকে ব্যাংকের নিয়মিত কাজের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

হামিদের ‘যত অনিয়ম’

# ২০১১ সালে অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ছাড়াই এমডি নিজে তানাকা ট্রেডকম ইন্টারন্যাশনালের ১২০ কোটি টাকা ঋণের জামানত পরিবর্তন করে দেন।

# ২০১৫ সালে ওই কোম্পানিকে ১১ কোটি টাকা ঋণ নবায়ন করে দেন এমডি। ৪৬ কোটি টাকা ঋণখেলাপি হওয়ার পরও তা নিয়মিত দেখানো হয়।

# ঋণঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা লঙ্ঘন করে ২০০ কোটি টাকা ঋণপত্র সীমা দুই বার নবায়ন করেন এমডি।

# সানমুন গ্রুপের মালিক মিজানুর রহমান মিজান ও তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়ে ব্যাংককে ঝুঁকিতে ফেলেন।

এসব অনিয়মের অভিযোগে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী কেন এমডিকে অপসারণ করা হবে না- তা জানতে চেয়ে নোটিশ দিয়েছিল ব্যাংলাদেশ ব্যাংক।

পরে তিনি যে জবাব দেন তাতে বাংলাদেশ ব্যাংক সন্তুষ্ট হতে না পারায় চলতি মাসে শুনানি শুরু হয়।

শুরুতে আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে ৯০৬ কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগ আনা হলেও পরে ৭৯২ কোটি টাকা অনিয়মের জন্য অভিযোগ গঠন করা হয়।

শুনানি শেষে ২১ জুন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কমিটি তাকে অপসারণে সুপারিশ জমা দেয়, যা বৃহস্পতিবার কার্যকারিতা পেল।

গত বছর ১১ জুলাই এমডি পদে আবদুল হামিদের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে আদেশ জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের আপত্তির পরও অর্থ মন্ত্রণালয় সে সময় তার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দিয়েছিল।

বর্ধিত ওই সময় অনুযায়ী ১০ জুলাই মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল আবদুল হামিদের।