মেট্রোরেল কর্মযজ্ঞ উদ্বোধনের অপেক্ষা

ঢাকা মহানগরীতে যানজট নিরসন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হচ্ছে রোববার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 June 2016, 05:39 PM
Updated : 26 June 2016, 03:34 AM

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করবেন।

একইসঙ্গে গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্টের আওতায় গাজীপুর থেকে শাহজালাল বিমানবন্দর পর্যন্ত বাস র‌্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) জন্য গাজীপুরে বাস ডিপো নির্মাণ কাজেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

মেট্রোরেল প্রকল্পের প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে গত ১৬ জুন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন শুরু হয়েছে বাস্তবায়ন, ইতোমধ্যে ডিপো উন্নয়নের কাজও শুরু হয়েছে।

“মেট্রোরেলের রুট-৬ হবে সম্পূর্ণ এলিভেটেড। থাকবে ১৬টি স্টেশন। প্রতি ঘণ্টায় উভয়দিকে ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা থাকবে এ রুটে।”

মন্ত্রী জানান, মেট্রোরেল-৬ এর রুট উত্তরা তৃতীয় পর্যায় থেকে শুরু হয়ে শাপলা চত্বর পর্যন্ত। প্রথম পর্যায়ে ২০১৯ সালের মধ্যে আগারগাঁও পর্যন্ত বাণিজ্যিক চলাচল শুরু হবে। ২০২০ সালে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

উত্তরা থেকে শাপলা চত্বর পর্যন্ত মেট্রোরেল (এমআরটি-৬) রুটের নকশা। (ফাইল ছবি)

জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা-জাইকার অর্থায়নে ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পে জাইকা সহায়তা দিচ্ছে ১৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

মেট্রোরেল রুট-৬ এর পাশাপাশি আরও দুটি রুট নির্মাণের প্রস্তুতি শুরুর কথা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এর মধ্যে ৪২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রুট-১ হচ্ছে গাজীপুর থেকে ঝিলমিল প্রকল্প পর্যন্ত।

রুট-১ এ প্রথম পর্যায়ে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর এবং খিলক্ষেত থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত প্রায় ২৭ কিলোমিটার কাজ করা হবে। এর মধ্যে ১০ কিলোমিটার হবে আন্ডারগ্রাউন্ড।

তিনি বলেন, মহানগরীর পূর্ব-পশ্চিমে সংযোগ বাড়াতে চূড়ান্ত করা হয়েছে মেট্রোরেল-৫ এর রুট। এটি নারায়ণগঞ্জের ভুলতা থেকে গাবতলী পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। প্রাথমিক পর্যায়ে ভাটারা থেকে গাবতলী-হেমায়েতপুর পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার কাজ করা হবে। এর মধ্যে ৬ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড।

জাইকা ইতোমধ্যে মেট্রোরেল রুট-১ ও রুট-৫ নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছে বলেও জানান সড়ক পরিবহন মন্ত্রী।

বিআরটি

টঙ্গী ও উত্তরার সঙ্গে ঢাকা মহানগরীর যাতায়াত সহজতর করতে বিআরটি রুট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে কয়েকদিন আগে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী কাদের বলেন, “এর ফলে অধিক যাত্রী দ্রুত পারাপার, সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব ও আরামদায়ক সেবা নিশ্চিত করে রাজধানী ঢাকাকে যানজটমুক্ত করাও অনেকাংশে সহজ হবে।”

তিনি বলেন, বিআরটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রতি ঘণ্টায় ২৫ হাজার যাত্রী পারাপার সম্ভব হবে। তিন মিনিট পরপর স্টেশন থেকে বাস ছাড়বে।

“গাজীপুর টার্মিনাল থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সাড়ে ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বিআরটি রুটে থাকবে ২৫টি স্টেশন। নির্মাণ করা হবে ছয়টি ফ্লাইওভার।”

এর মধ্যে উত্তরা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার এলিভেটেড বিআরটি লেন থাকবে। বাকি ১৬ কিলোমিটার থাকবে সমতল। ১৮ মিটার দীর্ঘ ১০০টি আর্টিকুলেটেড বাস চলাচল করবে এ পথে। বাস ভাড়া আদায়ে থাকবে ইলেক্ট্রনিক স্মার্ট কার্ড।

বিআরটি প্রকল্পে দুই হাজার ৪০ কোটি টাকা ব্যয় হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সরকারের পাশাপাশি এতে অর্থায়ন করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা ও গ্লোবাল এনভায়রনমেন্টাল ফ্যাসিলিটি ফান্ড।

“ইতোমধ্যে আমরা প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন করেছি। বাস্তবায়ন কাজও শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বিআরটি চালু হবে।”