সম্প্রতি নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে গচ্ছিত বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরির জন্য বিশেষ করে ওই ব্যাংককে দায়ী করেছেন তিনি।
ঘটনার পরপরই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের পদ ছাড়া এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এই ক্ষতিটা হয়েছে ‘পদ্ধতিগত ব্যর্থতা’র কারণে। লেনদেনের পদ্ধতির মধ্যে ত্রুটি থাকলে তার জন্য জন্য বাংলাদেশকে দোষারোপ করা উচিত নয়।
এর জন্য ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকেরও দায় রয়েছে মন্তব্য করে আতিউর বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে নিজের ব্যাংক হিসাব থেকে যদি আপনি ৫০০ ডলারও তুলতে চান, আপনাকে অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে লাখ লাখ ডলারের তোলা হলেও কোনও প্রশ্ন তোলা হয়নি। তাদের উচিত ছিল তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশে কাউকে কল করা- গভর্নর বা অন্য কাউকে।”
সাবেক এই গভর্নর সাক্ষাৎকারে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুরক্ষায় একটি সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগের প্রস্তাব তিনি ঘটনার এক বছর আগে দিলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার ঘটনা ঘটার আগে তা সম্ভব হয়নি।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সাইবার চুরির এই ঘটনা বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারে ঘটনার এক মাস পর, ফিলিপিন্সের একটি পত্রিকার খবরের মাধ্যমে।
গত ফেব্রুয়ারিতে বৈশ্বিক লেনদেনের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সুইফট মেসেজিং সিস্টেমে ভুয়া নির্দেশনা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করে ফিলিপিন্সে সরিয়ে নেওয়া হয়।
তবে আরেক বার্তায় শ্রীলঙ্কায় ২০ লাখ ডলার পাঠানোর নির্দেশনা থাকলেও ত্রুটির কারণে তা আটকে যায়।
আর ফিলিপিন্সের ব্যাংকে যাওয়া অর্থ স্থানীয় মুদ্রায় বদলে জুয়ার টেবিল ঘুরে চলে যায় নাগালের বাইরে।
আলোচিত এই ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে সরে যেতে হয়। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির এই ঘটনায় বিশ্বজুড়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নড়চড় শুরু হয়।
ভুয়া নির্দেশে ফিলিপিন্স ও শ্রীলঙ্কার দুটি ব্যাংকে রিজার্ভের অর্থ পাঠানোর ক্ষেত্রে নিউ ইয়র্ক ফেডের দায়ও দেখছে বাংলাদেশ।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকটির দাবি, তাদের নিরাপত্তায় কোনো খাদ নেই।