বাজেটের দ্বিগুণ অর্থ অডিট আপত্তিতে

আসছে অর্থবছরের বাজেটে যে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনিষ্পত্তিকৃত অডিট আপত্তিতে জড়িত অর্থের পরিমাণ তার দ্বিগুণের চেয়ে বেশি।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2016, 07:44 AM
Updated : 23 June 2016, 07:47 AM

বৃহস্পতিবার সংসদে টেবিলে উত্থাপিত এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের দেওয়া উত্তর থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনিষ্পত্তিকৃত অডিট আপত্তির সংখ্যা আট লাখ ৭৬ হাজার ১৩টি, যার সঙ্গে জড়ির অর্থের পরিমাণ সাত লাখ ৭৮ হাজার ৭৩৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য তিন লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী যা চলতি অধিবেশনেই পাশ হবে।

সংসদে মন্ত্রীর দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, সরকারের ৫৫টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের মধ্যে আর্থিক সংশ্লিষ্টতার দিক থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে সর্বোচ্চ এক লাখ ৪৫ হাজার ৯৯৬ কোটি ১৬ লাখ টাকার অডিট আপত্তি রয়েছে।

আর সংখ্যার হিসাবে স্থানীয় সরকার বিভাগে সর্বোচ্চ একলাখ ৮২ হাজার ৮৬০টি অডিট অনিষ্পন্ন রয়েছে, যার সঙ্গে ৫৬ হাজার ২৯২ কোটি ৫১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জড়িত।

এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি ২০১৫ ১৬ অর্থ বছরে হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে দেশের মানুষের মাথাপিছু গড় সঞ্চয়ের পরিমাণ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা।

কামাল আহমেদ মজুমদারের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে সোনালী, রুপালী ও বেসিক ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি রয়েছে।

চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত হিসাবে, সোনালী ব্যাংকের ‍দুই হাজার ৮৫০ কোটি, রুপালী ব্যাংকের ৪৪৪ কোটি ও বেসিক ব্যাংকের দুই হাজার ২৩৬ কোটি মূলধন ঘাটতি রয়েছে।

মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত সরকারের সর্বশেষ সময় থেকে বর্তমান সরকার আমলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির হার ৭২৮ দশমিক ৭০ শতাংশ।

২০০১ সালের ১ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতা নেওয়ার সময় রিজার্ভের স্থিতি ছিল একহাজার ১৫৩ দশমিক ৭৩ মিলিয়ন ডলার। ২০০৬ সালের ২৭ অক্টোবর তারা ক্ষমতা ছাড়ার সময় রিজার্ভ ছিল তিন হাজার ৪৮২ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন ডলার।

আর ২০১৬ সালের ১ জুনের রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৮৬২ দশমিক ৩২ মিলিয়ন ডলার।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে মুহিত বলেন, “পানামা পেপারসে প্রকাশিত খবরের বিষয়ে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ নির্দেশনার আলোকে তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশি বিদেশি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে বিষয়টি পর্যালোচনা করা হয়েছে।”

পিনু খানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে কর্মরত প্রায় ১০ হাজার বিদেশির মধ্যে জাতিসংঘ, বিভিন্ন দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় বিশেষ সুবিধাভোগী ব্যক্তি (কর অব্যহতি প্রাপ্ত) বাদে মোট আট হাজার ১১৪টি আয়কর নথি চালু আছে। এর মধ্যে চলতি অর্থ বছরে সাত হাজার ৬৭৬ জন বিদেশি নাগরিক ২৮৪ কোটি ৮২ লাখ টাকা ‍আয়কর পরিশোধ করেছেন।

কোন বিদেশি আয়কর গোপন করছেন কি না সেই বিষয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান।

জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমরের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, দেশে নিবন্ধিত ১৯ লাখ ৬৩ হাজার ৩৩১ জন করদাতার মধ্যে মহিলা করদাতার সংখ্যা তিন লাখ ১৫ হাজার ৮৩১ জন।