‘এনজিওর ক্ষয় বৈরী রাজনীতি আর ব্যবস্থাপনার দুর্বলতায়’

প্রশিকা, গণসাহায্য সংস্থা ও সমতার মতো বেসরকারি সংস্থার দৃষ্টান্ত টেনে বাংলাদেশের এনজিও খাতের ‘ক্ষয়ের কারণ’ ব্যাখ্যা করেছেন লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিকস অ্যান্ড পলিটিকেল সায়েন্সের অধ্যাপক ডেভিড লেউইস।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 June 2016, 10:45 AM
Updated : 22 June 2016, 10:46 AM

বুধবার ঢাকায় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) আয়োজিত ‘দ্য ডেকলাইন অব র‌্যাডিকেল ডেভেলপমেন্ট এনজিওস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে তিনি এই কারণ ব্যাখ্যা করেন।

অধ্যাপক ডেভিড লেউইস বলেন, “কাজ করতে গিয়ে বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশে তারা ভালনারেবল হয়ে গেছে। মূলধারার এনজিওকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে অন্যগুলোর প্রতি বিদেশি দাতাদের নেতিবাচক মনোভাব বা অর্থপ্রবাহের কারণে হঠাৎ বড় হতে গিয়ে ধ্বংসের কবলে পড়েছে তারা।”

নেতৃত্ব ও ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে এনজিওগুলোর জবাবদিহিতা হ্রাস পাওয়াকেও এই দশার কারণ হিসেবে দেখছেন তিনি।

‘গ্রাসরুট রুরাল সোস্যাল মোবিলাইজেশন অ্যাপ্রোচ’র  ঋণ বিতরণ, সেবা ও চুক্তিভিত্তিক কাজের সঙ্গে থাকা এনজিওকে ‘রেডিকাল এনজিও সাব সেক্টর’ মনে করেন অধ্যাপক ডেভিড লেউইস।

দারিদ্র্য, লিঙ্গ সমতা ও সামাজিক ন্যায় বিচারের কাঠামোগত সমস্যা মোকাবেলায় এসব সংগঠন কাজ করায় তিনি তাদের জন্য এই ‘টার্ম’ ব্যবহার করেন বলে জানান বক্তৃতায়।

অধ্যাপক লেউইস বলেন, ১৯৭৬ সালে গঠিত প্রশিকা, ১৯৮৩ সালে গঠিত গণসাহায্য সংস্থা, ১৯৭৬ সালে গঠিত সমতা ৯০-এর দশকে এবং শূন্য দশকের শুরুতে তাদের কাজের সর্বোচ্চ স্তরে ছিল। তার এখন প্রায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

এর কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, “এই ক্ষয় অবশ্যম্ভাবী ছিল না। ‘নিজেরা করি’ এখনও কার্যকরিভাবে ‘র‌্যাডিকেল ট্রেডিশনে’ কাজ করছে। এই দৃষ্টান্তে দেখা যায়, এই ধারা এখনও সম্ভব, যদি সেই সংগঠন সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তৃণমূলকে কাছাকাছি রাখতে পারে, যথাযথ ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারে ও সীমার বাইরে এক্সপানশনে অর্থপ্রবাহ সামলাতে পারে।”

এই ‘পতন থেকে শিক্ষা নেওয়ার’ আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক লেউইস বলেন, “একটা বহুমুখী সিভিল সোসাইটি যে কোনো সমাজের জন্যই দরকার। এখানে নতুন নতুন আইডিয়া বের হয়ে আসে। যেখান থেকে বিকল্প রাজনৈতিক নেতা বেড়ে উঠতে পারে এবং যেখানে আরও জবাবদিহিতার সঙ্গে সরকার ও বিজনেস সংক্রান্ত কাজ হতে পারে।”

সিভিল সোসাইটি বলতে এখানে কী বোঝাচ্ছেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “সিভিল সোসাইটি নাগরিকত্ব, সভ্যতা, সামাজিক পরিবর্তন, রাজনীতি, মূল্যবোধ ও ধর্ম নিয়ে আলোচনার জন্য আরও বড় জায়গা তৈরি করে।”

অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন ইউল্যাবের উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমান।