মোবাইল ফোনে কথা বলায় খরচ বাড়ছে

সিম বা রিম কার্ডের মাধ্যমে সেবার উপর বিদ্যমান তিন শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত; ফলে মোবাইল ফোন গ্রাহকদের ব্যয় বাড়বে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 June 2016, 11:28 AM
Updated : 2 June 2016, 03:53 PM

অর্থমন্ত্রী বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে শুল্কহার পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব করেন। 

গত বাজেটে মোবাইল সিম ট্যাক্স ‘ব্যাপক হারে’ কমানোর বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “মোবাইল সিম বা রিম কার্ডের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবার উপর বিদ্যমান তিন শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করে পাঁচ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করছি।”

গত বাজেটে নতুন মোবাইল সিমের শুল্ক হার ৩০০ টাকা থেকে কমিয়ে ১০০ টাকা করা হয়েছিল।

মোবাইল সেবার উপর কর বাড়ানোর প্রস্তাবকে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার ও এ খাতে সার্বিক অগ্রযাত্রার অন্তরায় হিসেবে দেখছে মোবাইল ফোন অপারেটররা।

বর্তমানে সর্বোচ্চ কলরেট ২ টাকা হলে গ্রাহককে ৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্কের উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং এক শতাংশ সারচার্জ দিয়ে প্রতিটি কলের খরচ দাঁড়ায় ২ টাকা ৩৯ পয়সা, ৫ শতাংশ  করা হলে এ খরচ দাঁড়াবে ২ টাকা ৪৪ পয়সা। 

এক অপারেটরের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এখন তিন শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও এক শতাংশ সারচার্জসহ ১০০ টাকায় খরচ হয় ১১৯ টাকা ৪৫ পয়সা, এই খরচ ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা হয়ে যাবে।

“ফলে মোবাইল ফোননির্ভর (কথা বলা, মেসেজ পাঠানো কিংবা ডেটা ব্যবহার) সব ধরনের খরচ বাড়বে।”

ফাইল ছবি

অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ মোবাইল টেলিকম অপারেটর অব বাংলাদেশ (অ্যামটব) মহাসচিব টি আই এম নুরুল কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে এই সেক্টরের অগ্রগতিতে বাধা পড়বে।”

গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মাহমুদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সিম ব্যবহারের উপর সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির ফলে আমাদের গ্রাহকদের উপর বাড়তি আর্থিক চাপ সৃষ্টি হবে।

“এখন থেকে একজন গ্রাহককে ১০০ টাকার টকটাইমের জন্য ১২১.৭৫ টাকা ব্যয় করতে হবে। বাংলাদেশের মোবাইল ফোন শিল্পের করের বোঝা খুবই বেশি, আরও কর বসানো হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে এই শিল্পের ভূমিকা ব্যাহত হবে।”

রবির কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড কর্পোরেট রেসপনসিবিলিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকরাম কবীর এক সংবাদ বিবৃতিতে বলেন, সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির ফলে  গ্রাহকের খরচ বাড়বে এবং ভয়েস এবং ডাটা থেকে রাজস্ব কমে আসবে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে টেলিকম খাতে শুল্ক নির্ধারণসহ অন্যান্য বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা চান অ্যামটব মহাসচিব নুরুল কবির।

বায়োমেট্রিক নিবন্ধন শেষে মে মাস নাগাদ বাংলাদেশের ৬টি অপারেটরের ১০ কোটি ৮১ লাখের বেশি মোবাইল ফোন বর্তমানে সচল রয়েছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির হিসাবে এপ্রিলের শেষ নাগাদ দেশে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৮৬ লাখের বেশি।