হাসিনার আশায় বসত দেবেন মুহিত

বড় বাজেটের চাপ সামলাতে রাজস্ব বাড়ানোর কৌশল, রপ্তানি গতি বাড়ানোর চেষ্টা ও সামাজিক নিরাপত্তায় সরকারের অংশীদারিত্ব অব্যাহত রেখে শেখ হাসিনার এই সরকারের শেষ বাজেটের পটভূমি রচনায় এবার বাজেট প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

আবদুর রহিম হারমাছিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2016, 03:09 PM
Updated : 26 May 2016, 05:54 PM

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে এক বাজেটপূর্ব সাক্ষাৎকারে এসব আশার কথা শোনালেও বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নয়ন ও আলোচিত ব্যাংকিং খাত নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো উদ্যোগের কথা বলেননি অর্থমন্ত্রী।

বুধবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে নিজের কক্ষে কথা বলার সময় অশীতিপর অর্থমন্ত্রীকে প্রাণোচ্ছ্বল দেখাচ্ছিল।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত (ফাইল ছবি)

মন্ত্রী বলেন, “আমাদের এই সরকারের শেষ বছর ২০১৮-১৯ অর্থবছরকে সামনে রেখেই এবারের বাজেট দিতে যাচ্ছি। সেভাবেই সব প্রস্তুতি নিচ্ছি। শেষ বছরে পাঁচ লাখ কোটি টাকার বাজেট দেবো সেটাও এখনই ঠিক করে ফেলেছি। আমাদের সব কর্মকাণ্ডই এখন পরিচালিত হবে ২০১৮-১৯ বছরকে ঘিরে।”

আগামী ২ জুন অর্থমন্ত্রী মুহিত জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করবেন। এই নিয়ে দশম বারের মতো বাজেট দিতে যাচ্ছেন তিনি, এর মধ্যে একটানা আটটি।

অর্থনীতির আকার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বড় বাজেট দিতে প্রত্যাশী মুহিত নতুন বাজেটের আকার ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি হবে বলে জানিয়েছেন।

চলতি বছরের প্রায় তিন লাখ কোটি টাকার বাজেটের চেয়ে তা প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: প্রায় সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকার বাজেট দিতে যাচ্ছেন। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের বড় লক্ষ্য ধরেছিলেন। কিন্তু সেটা অর্জিত হচ্ছে না। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়েছেন। এ প্রেক্ষাপটে নতুন বাজেটে কি আবার বড় লক্ষ্য নিচ্ছেন?

আবুল মাল আবদুল মুহিত: প্রথমেই আমি বলি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কোয়ালিশন সরকারের এটা হলো অষ্টম বাজেট। সাতটা উনার সময়ে দেওয়া হয়েছে। আমিই দিয়েছি সেই সাতটি বাজেট। অষ্টমটা দিতে যাচ্ছি।

সপ্তম বাজেটের অর্থাৎ ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটের সংশোধন দেখছি, সেখানে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৮ শতাংশ কম হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এটা নিয়ে আমি খুব উদ্বিগ্ন। কারণ আমার প্রথম বছরেই কথা ছিল, বড় বাজেট চাই। বড় বাজেট না হলে বড় সেবা দেওয়া যায় না, বেশি সেবা দেওয়া যায় না। আল্লাহর অনুগ্রহে মোটামুটিভাবে বাজেট বেড়েছে।

শেখ হাসিনার সরকারের প্রথম যে বাজেট আমি দিয়েছিলাম সেটা ছিল ৯১/৯২ হাজার কোটি টাকা। এবার সেটা বেড়ে ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকায় যাচ্ছে।

গত বছর আর এ বছরের মধ্যে এভরি আইটেমে তুলনামূলকভাবে তফাৎ অনেক বেশি। গতবারেরটা মনে রেখে এবারে আমি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। ………টার্গেট মোটামুটিভাবে বড়ই রেখেছি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: চলতি বাজেটের শিরোনাম দিয়েছিলেন ‘সমৃদ্ধির সোপানে বাংলাদেশ: উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথ রচনা।’ নতুন বাজেট নিয়ে এমন কী ভাবছেন?

আবুল মাল আবদুল মুহিত: কয়েক বছর আগে যখন দ্বিতীয় মেয়াদে আমরা ক্ষমতায় আসলাম, তখন আমি আমার বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী-সচিব সবাইকে একটা ধারণা দিয়েছি যে, আগামী বছরগুলোতে কোথায় যেতে চাই। ২০১৮-১৯ অর্থবছর আমাদের সরকারের এই মেয়াদের শেষ বছর, সেই বছর কোথায় যেতে চাই। আমাদের টার্গেট ওই টার্গেট, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের টার্গেট। এজন্য অবশ্য খাটতে হয়েছে বেশি।

আমি আমার সহকর্মীদের ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি, ২০১৮-১৯ সালে কোথায় যেতে চাই। ওই টার্গেটটা মাথায় নিয়েই আমি এবারের বাজেটে যাচ্ছি।

আমি তো ২০১৮-১৯ পর্যন্ত বাজেটের পরিকল্পনা অলরেডি করে ফেলেছি। যদি বেঁচে থাকি, তাহলে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটও দিয়ে যেতে চাই...। আর সেই বাজেটের আকার হবে পাঁচ লাখ কোটি টাকা (স্বভাবসুলভ হাসি দিয়ে...)। এটা আমার স্বপ্ন! বাট ইট অল ডিপেন্ডস অন মাই ক্যাপাসিটি। অ্যাট দিস মোমেন্ট.. ফরচুনেটলি... একবার যে স্ট্রোক হয়েছিল, তারপর আমি খুব সতর্ক।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: প্রয়াত অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান ১২টা বাজেট দিয়েছিলেন। আপনি সেই রেকর্ড ভাঙতে যাচ্ছেন নাকি?

আবুল মাল আবদুল মুহিত: আই ডোন্ট নো। আমি খুব খুশি হব, এটা যদি আমার শেষ বাজেট হয়। এই জন্য খুশি হব, ইউ সি, অর্থ মন্ত্রণালয় এমন একটা মন্ত্রণালয়, এখানে ডেডিকেশন... এর বাইরে হয় না। নীতিগত সিদ্ধান্ত এখানে খুব বেশি লাগে...। 

আমার যা শারীরিক অবস্থা, তাতে আই ক্যান কাট ডাউন...। বাট কাট ডাউন এগুলা আন ইফেক্টিভ হবে, কারণ ওদের কথা না শুনি তাহলে জানব না কী হচ্ছে। হোয়াটস হ্যাপেনিং ইন দ্য কান্ট্রি, মাই অ্যাপয়েন্টমেন্টস অনলি ফর দ্যাট রিজন। ওই সমিতি আসবে, বলবে; সুতরাং যাই বলুক না কেন....। শুনতে হবে।

আমার ইচ্ছা হবে, এটা যদি আমার শেষ বাজেট হতো। বাট আই ক্যান নট আস্ক প্রাইম মিনিস্টার যে, আমাকে ছেড়ে দেন। আমাকে বলতে হবে আমার এই অবস্থা . . . আমার তো অসুবিধা হয়।

উনি (প্রধানমন্ত্রী) সব সময় বলেন, আপনি কাজ কমান...। এবারে উনাকে বলব, কাজ... এটা কমানো যায় না। যতটুকু কমানো যায়, আই হ্যাভ ডান ইট...। এর চেয়ে আর কমানো যায় না।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: এবার জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কেমন ধরছেন?

আবুল মাল আবদুল মুহিত: গ্রোথটা (জিডিপি প্রবৃদ্ধি) ভালোই হয়েছে এবার। আগামী বছর বড় ধরনের রাখছি না। এটা নর্মাল যেটা হওয়া উচিত সেটাই... ধরছি। এবারের পারফর্মমেন্সটা ফোকাসড অন ভেরি সলিড গ্রাউন্ড। তার ফলে আগামী বছরগুলোতে যেসব টার্গেট আছে, সেগুলো মোটামুটিভাবে আমরা যে রকম চিন্তা ভাবনা করছি, সেই রকমই হবে।

চলতি বছরে আমরা প্রবৃদ্ধি ধরেছিলাম ৭ শতাংশ। বেশিই হতে চলেছে। এবার তার থেকে খুব বেশি না, একটু বেশি সাড়ে ৭ শতাংশ ধরবো ভাবছি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: পহেলা জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হচ্ছে, যাতে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপ হবে। ব্যবসায়ীরা এটা মানতে চাইছেন না। এ পরিস্থিতিতে আইন কী সংশোধন করবেন?

আবুল মাল আবদুল মুহিত: খুবই গোলমাল। এই সম্পর্কে আমি কিছু বলব না এখন। আমি তো একটা সিস্টেম অপারেট করতে পারব না, আনলেস কো-অপারেশন ফ্রম দোজ যারা পয়সা দেবে। কো অপারেশন অনেক ধরনের হতে পারে, আমি ফোর্সড টু কো-অপারেট করল, আরেকটা হল, না, আমার সব কথা শুনে নাই, তবু কিছুতো আমি পেয়েছি। আরেকটা হলো, আমাদের মধ্যে ভাল সমঝোতা হয়েছে। এটা তিন ধরনের হতে পারে। তিনটার মধ্যে প্রথমটা, আই ডোন্ট থিঙ্ক এনিওয়ান ক্যান থিঙ্ক এ ফর্মেট। সেটা আমার মাথায় আছে।

এখন অপেক্ষা করেন, কয় দিনই তো আছে। সাত আট দিন...।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: দেশের সব মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা (সোশাল সিকিউরিটি) কতদিনে হবে?

আবুল মাল আবদুল মুহিত: সোশাল সিকিউরিটি ফর অল। আই ডোন্ট থিঙ্ক, ইট উইল বি দেয়ার বাই আওয়ার লাস্ট ইয়ার। এই বছরই বিগার নেট হবে, যাদেরকে আমরা সোশাল সিকিউরিটিতে ঢোকাচ্ছি। দিস উইল কন্টিনিউ টু গ্রো, ইন দ্যা নেক্সট টু ইয়ার অলসো...। কিন্তু কমপ্লিট সোশাল পেনশন সিস্টেম দ্যাট কাভার অল.. আই অ্যাম নট শিউর.. এটা ২০১৯-২০ এ করা যাবে কি-না। বাট গ্রাউন্ড উইল বি ভেরি গুড। যদি .. নজর রাখে, তাহলে বাই ২০২১, ইট শুড বি পসিবল টু প্রোভাইড এ কমপ্লিট পেনশন সিস্টেম দ্যাট কাভার অল।

যেমন, আমিতো অর্গানাইজড সেক্টর, প্রাইভেট সেক্টর যাকে বলে। প্রাইভেট সেক্টর ইজ দ্য লার্জ এমপ্লয়ার অর্গানাইজেশন এট দ্য মোমেন্ট। উই ক্যান স্টার্ট উইথ অ্যা পেনশন স্কিম, তার একটা ভালো উদাহরণও আছে। ইট ইজ এনটায়ারলি প্রাইভেট। এখানে কোনো অর্গানাইজেশন লাগে না, কিচ্ছু লাগে না। দিস ক্যান বি ইমিটেটেড বাই প্রাইভেট ফার্মস.. একটু এদিকে ওদিক করুক। এই যে জিনিসটা, আমি একটা কন্ট্রিবিউশন দিলাম, অ্যান্ড হি ইজ অলসো ফোর্সড টু কন্ট্রিবিউট। দুইটা মিলিয়ে যাতে ভালো রিটার্ন পেতে পারে, সেই সিস্টেমটা, আই ওয়ান্টেড ইট টু এসটাবলিশ ইন নট মোর দ্যান টু ইয়ারস। দ্যাট উইল কাভার ভেরি লার্জ পোরশন অব ওয়ার্কফোর্স, নট অল।

কেননা এখনও ওয়ার্কফোর্সের অনেকে টেম্পোরারি... ইত্যাদি অনেক কিছু আছে। অবভিয়াসলি এটা যখন আমরা এনফোর্স করতে চাইব, ইন্ডাস্ট্রিস উইল হ্যাভ এ সার্টেন সাইজ।...দ্যাট উইল প্রোভাইড ভেরি ওয়াইড পাবলিক। এরপর বাকীদেরকে আনা। আই থিঙ্ক, ২০২০-২১ সালে আমাদের দেশে একটা ইউনিভার্সেল পেনশন সিস্টেম হয়ে যাবে। অলসো, আই থিঙ্ক বাই দ্যাট টাইম, সরকারি কর্মকর্তাদের পেনশনটা ফান্ডেড পেনশন হবে। এখন যেমন আনসার্টেন আছে, এটা থাকবে না।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: আপনি কী প্রভিডেন্ড ফান্ডের কথা বলছেন?

আবুল মাল আবদুল মুহিত: না, এটা আসলে ডিপিএস। ডিপিএস ইজ নট এ প্রভিডেন্ড ফান্ড। এটা সব ব্যাংকে আছে। প্রচুর লোক এটা সাবসক্রাইব করে। এটাকে যদি আমাদের অর্গানাইজড প্রাইভেট সেক্টর নিয়ে নেয়, পার্সেন্টেজ কন্ট্রিবিউশন বদলায়। তাহলেতো বিরাট কাভারেজ অব দ্যা ওয়ার্কফোর্স হয়ে যায়, বিরাট কাভারেট অব দ্য ফেমিলিজ হয়ে যায়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: শুরু থেকেই আপনারা অবকাঠামো খাতকে বেশ গুরুত্ব দিয়েছেন। নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু হচ্ছে, ফ্লাইওভার হচ্ছে। কিন্তু আকাশ পথে আমাদের রপ্তানির একটা বড় অংশ যায়, কিন্তু সেখানে খুবই খারাপ অবস্থা!

আবুল মাল আবদুল মুহিত: ঠিকই বলেছো, খুব খারাপ। উই আর গোয়িং টু টাচ ইট নাউ। এটা খুবই খারাপ। এটা হওয়ার কারণ নাই। বিমানবন্দরে একটা ভালো ওয়্যারহাউজ নেই। নেক্সট ইয়ার থেকে শুরু করব...। ভেরি বিগ এক্সপোর্ট হয়, এত খারাপ লাগে দেখতে, হোয়েন ফাইন্ড ইভরিথিং ইজ সেটেলড। বৃষ্টির সময় ভিজছে, চাদর দিয়ে দেয় প্ল্যাস্টিকের। নো নো, এটা নট পারমিশিবল, নট অ্যাক্সেপ্টেবল। এই বছরেই আই শ্যাল স্টার্ট চেঞ্জিং দিস।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: সরকার রপ্তানিকারকদের যে ইনসেনটিভ (প্রণোদনা) দেয় তার ৫০ শতাংশই তৈরি পোশাক শিল্পে চলে যায়। এটা নিয়ে ভিন্ন চিন্তা করছেন কি?

আবুল মাল আবদুল মুহিত: রপ্তানিতে ইনসেনটিভ দিতে আমাদের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা চলে যায়। তৈরি পোশাক, কৃষিসহ বেশ কয়েকটি খাতে এটা দেওয়া হয়। ৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ইনসেনটিভ দেওয়া হয়। আমরাতো প্রত্যেকবারই এই ইনসেনটিভ বাড়াই। একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ রপ্তানি না হলে তো প্রণোদনা দেওয়া কঠিন হয়। এখন আমরা জাহাজ শিল্পকে ইনক্লুড করেছি। এই রকম কিছু কিছু করব...।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: আপনার এবারের বাজেটে বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের দেশ হওয়া নিয়ে কিছু বলবেন?

আবুল মাল আবদুল মুহিত: অবশ্যই বলব...। আমরাতো ইতোমধ্যেই মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে গেছি...। কিন্তু আমাদের স্টাটাসটা ডিফাইন করে ইউএন (জাতিসংঘ)। ইউএনের একটা ম্যাকানিজম আছে। ডিসিশন ১৮ সালে হয়ে যাবে। এটা ফাইনাল হতে বছর লাগবে। ২০২১ সালে আমরা ফর্মালি-একচুয়লি ডিক্লেয়ার্ড হবো এজ এ ‘মধ্যম আয়ের দেশ’।

এরপরে আমি ইউএনের এসজিডি নিয়ে যেটা বলেছি, ২০৩০ ইজ দ্য এভারেজ টাইম। বাংলাদেশের বর্তমান যে অবস্থা। এই গতিতে যদি যেতে পারি, উই শ্যাল রিয়েলাইজ টার্গেটস বাই ২০২৪। সিক্স ইয়ারস বিফোর...।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: আপনার বাজেটে সব সময় নতুন কিছু থাকে। পিপিপি ফান্ড ছিল, জেলা বাজেট ছিল, জেন্ডার বাজেট ছিল। এবার কি থাকছে?

আবুল মাল আবদুল মুহিত: জেলা বাজেটতো আমার ফেইল করেছে। আই অ্যাম সরি...। ফেইল করেছে। কিন্তু আমার উদ্দেশ্য সফল হয়ে গেছে। আমার উদ্দেশ্য ছিল টু সি, হোয়ার আর উই স্ট্যান্ডিং ইন অ্যা ডিসট্রিক্ট। হোয়াট আর উই কালেক্টিং ইন অ্যা ডিসট্রিক্ট। সেটা আমি চেষ্টাও করি নাই। ইট’স ভেরি ডিফিকাল্ট। কেননা এই যেমন, আয়কর। কেননা যে কোম্পানিগুলা দেয়, তারতো সাড়া দেওয়াতেও বহু কিছু আছে। কেননা আমি পারব না। সুতরাং এটা আমি পারব না। চেষ্টা করি নাই। উদ্দেশ্য ছিল টু ফাইন্ড আউট জেলায় কী ধরনের কার্যক্রম হয়? কী ধরনের ইনভেস্ট করতে হবে? পারপাস আল্টিমেটলি হচ্ছে, টু হ্যাভ এ সিস্টেম অব জেলা এডমিনিস্ট্রেশন।

জেলা এডমিনিস্ট্রেশন, হ্যাঁ, তোমার হাতে যথেষ্ট সম্পদ যাবে, কেন্দ্রীয় সরকার থেকে যদি যায়, তাতে আপত্তি নাই। ইফ কেন্দ্রীয় সরকার হ্যাভ গুড ম্যাকানিজম কালেক্টিং ট্যাক্সেস। লেট দেম ডু ইট। ইট উইল বি থ্রু ডিভিশন অব রিসোর্সেস। বাট আমার আরেকটা প্রস্তাব আছে, এবাউট ল্যান্ড রেকর্ডস। ল্যান্ড রেকর্ডসকে আমরা অলরেডি ডিজিটালাইজড করছি। যে স্পিডে ডিজিটালাইজ করছি, আই বিলিভ এক-দুই বছরের মধ্যেই পুরোটা সম্পন্ন হবে। এই ল্যান্ড রেকর্ড যদি আমি একবার ঠিক করে ফেলতে পারি। তাহলে ল্যান্ড রিলেটেড ইনকাম যেটা আছে সরকারের, ল্যান্ড ট্যাক্সেস, ল্যান্ড রেভিনিউ, ট্রান্সফার অব প্রোপার্টিজ, ইউ ক্যান ট্রান্সফার টোটালি টু ডিসট্রিকস। এ ব্যাপারেও বক্তব্য থাকবে, এবাউট দ্য ফিউচার অব ডিসট্রিক্ট বাজেট।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: আপনার প্রত্যেক বাজেটেই কোনো না কোনো চমক থাকে। এবার কী চমক থাকছে?

আবুল মাল আবদুল মুহিত: হাঁ, হাঁ আই ক্যান্ট সে; চমকের বিষয়ে আমি কিছু বলব না। ২ জুন বাজেট দিলেই বুঝতে পারবে চমক আছে কি-না।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: সোনালী ব্যাংকে হলমার্ক, বেসিক ব্যাংকে আর্থিক কেলেঙ্কারিসহ ব্যাংকিং খাত নিয়ে আপনাকে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছে। চলতি বাজেটে ব্যাংকিং কমিশন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন; কিন্তু হয়নি। এবারের বাজেটে ব্যাংকিং খাত নিয়ে কী ভাবছেন?

আবুল মাল আবদুল মুহিত: ব্যাংকিং সার্ভিসেস আর নাউ প্রোভাইডেড থ্রু এ ভাস্ট...। এটা বড় ধরনের সাকসেস। আর ওইগুলা বাড়াবাড়ি, টাকা পয়সা গায়েব করে ফেলা-এগুলোতো আছেই। আই থট অব হ্যাভিং এ ব্যাংকিং কমিশন, বাট পারিনি। অপেক্ষা করি, দেখি...। এটা বছরের যে কোনো সময় বলা যেতে পারে। আমার মনে হয়, আমাদের টার্মেই বোধহয় ব্যাংকিং সেক্টরে একটা রিভিউ হওয়া উচিত। আমাদের টার্মে ব্যাংকিং গ্রোথ এত প্রচণ্ড বেড়ে গেছে, ব্যাংকিং সার্ভিস এত বেড়ে গেছে, লট অব ইউটিলিটি ট্রান্সফার টু ই-মেথড। এগুলোর একটা রিভিউ হওয়া উচিত বলে আমি বিশ্বাস করি। আমি চেয়েছিলাম এই বাজেটেই দিতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেই নাই। হ্যাকিং ট্যাকিং হয়ে গেল...। তার মধ্যে এটা আবার একটা নতুন ঝামেলা সৃষ্টি করতে রাজি হই নাই।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: মেগা প্রকল্পগুলোকে নিয়ে আপনি আলাদা বাজেটের কথা বলছেন। আসলে বড় প্রকল্পের বাজেটে কী থাকছে। কী লাভ হবে এতে?

আবুল মাল আবদুল মুহিত: এটা দিচ্ছি...। ইট উইল বি এ বাজেট অব এইট প্রোজেক্টস। ডিউরিং দ্য ইয়ার, আরও দুই তিনটা প্রজেক্টস তাতে অ্যাড হবে।.... লাভ কিছু না, তাদের অ্যালোকেশন উইল বি ইন বাজেট। বাট এটা হলো, ইউ আর গিভিং অ্যাম্ফাসিজ টু দিস ইন বাজেট। আমি আশা করি, এই অ্যাম্ফাসিজ দেওয়ার ফলে তাদের ইন্টারনাল অ্যাডমিনস্ট্রেশনে কিছু নতুন ব্যবস্থা হয়তো হবে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: পরিবেশ নিয়ে কী থাকছে? গ্রিন ট্যাক্সেস করেছিলেন, সেটা তো হয়নি।

আবুল মাল আবদুল মুহিত: পরিবেশ নিয়ে বাজেটে অনেক কিছুই থাকবে। ক্লাইমেট চেঞ্জ নিয়েও থাকবে। তবে গ্রিন ট্যাক্স যেটা করেছিলাম সেটা আসলে সাকসেস হয় নাই।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: বাজেটে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বাড়তি বরাদ্দ থাকবে বলে আপনি বলছেন। সেটা আসলে কেমন বৃদ্ধি হবে?

আবুল মাল আবদুল মুহিত: হ্যাঁ, অবশ্যই শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বাড়তি বাজেট পাবে। তারা নিজেরাও কিছু চিন্তা ভাবনা করেছেন, সেগুলোর প্রতিফলন হবে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: আপনার চলতি বাজেটে ছিটমহল নিয়ে একটি বরাদ্দ রেখেছিলেন। এবার ছিটমহলবাসীর উন্নয়নে কী ধরনের বরাদ্দ থাকছে?

আবুল মাল আবদুল মুহিত: হ্যাঁ তাদের জন্য তো কিছু রাখতেই হবে। ৪৭ বছর তারা কষ্ট করেছে। এখন তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটানো আমাদের দায়িত্ব বলে আমি মনে করি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: দীর্ঘদিন ধরে দেশে বিনিয়োগে স্থবিরতা চলছে। আপনারা অনেক চেষ্টা করেছেন, তারপরও আশাব্যঞ্জক সাড়া মিলছে না। বাজেটে কী থাকছে বিনিয়োগ বাড়াতে?

আবুল মাল আবদুল মুহিত: এতোদিন যে চেষ্টাগুলো নিয়েছি, সেগুলোই অব্যাহত থাকবে; ধারাবাহিকতা থাকবে। তবে উন্নতি কিন্তু হয়েছে...। এনভায়রনমেন্টটা (পরিবেশ) ভাল। মনে হচ্ছে যে, একটু কনফিডেন্স আসছে...। এবার বিনিয়োগ বাড়বে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: আপনার এবারের বাজেটে কী আশার কথা আছে?

আবুল মাল আবদুল মুহিত: আশার কথা...। ইতোমধ্যেই কিন্তু আমরা একটি বৃত্ত অতিক্রম করেছি। ৬ সাড়ে ৬ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশের জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে আমরা পৌঁছেছি। এটা একটা বড় সাফল্য। আর এটাই আমরা ধরে রাখতে চাই। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের এই মেয়াদের শেষ বছরে (২০১৮-১৯) দেশবাসীকে একটি ‘স্বপ্নের বাংলাদেশ’ দিয়ে যেতে চাই।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: আপনাকে ধন্যবাদ।

আবুল মাল আবদুল মুহিত: তোমাকেও ধন্যবাদ।

(সাক্ষাৎকারটি তৈরিতে সহায়তা করেছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদক সুলাইমান নিলয়)