বৈদ্যুতিক লাইন যাবে মাটির তল দিয়ে, প্রকল্পে সায়

রাজধানীতে থাকা বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন মাটির তলদেশে নিয়ে যেতে একটি প্রকল্প প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে একনেক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2016, 12:08 PM
Updated : 24 May 2016, 12:19 PM

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, ‘ডেসকো এলাকায় বিদ্যমান ৩৩ কেভি ওভারহেড লাইনকে আন্ডারগ্রাউন্ড কেবলে রূপান্তর, ক্ষমতা বর্ধন এবং স্থাপন’ শীর্ষক এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫৬৯ কোটি টাকা।

এরমধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১১০ কোটি ৩২ লাখ টাকা আর চীনের নেতৃত্বে গঠিত এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) থেকে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে পাওয়া যাবে ৩৫৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

বাকি ৯৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা ডেসকো তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেবে।

প্রকল্পে অনুমোদন দেওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাটির তলদেশ দিয়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন কত গভীরে এবং কোন এলাকা দিয়ে যাবে তার মানচিত্র প্রণয়ন ও সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, “রাজধানীতে বিদ্যমান ওভারহেড বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন আন্ডার গ্রাউন্ডে নিতে পারলে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার দক্ষতায় নতুন মাত্রা পাবে।”

ঢাকা শহরের বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা আধুনিকায়ন ও সরবরাহ লাইনে ক্ষমতা বর্ধনের মাধ্যমে বিতরণ ব্যবস্থার স্থায়িত্ব ও নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি করা এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ বিতরণে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান তিনি।

ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) আওতায় ঢাকা ও গাজীপুর জেলার বেশ কিছু এলাকা যেমন- মিরপুর, উত্তরা, দক্ষিণখান, দিগুন ও টঙ্গী এলাকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা আধুনিকায়নে এই উন্নয়ন কাজ হবে।

মুস্তফা কামাল জানান, একনেক সভায় মোট ছয়টি উন্নয়ন প্রকল্পে অনুমোদন দেওয়া হয়। এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৯৫০ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

এরমধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৪ হাজার ১শত ৪৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল ১৪১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য থেকে ২ হাজার ৬৬১ কোটি ৭০ লাখ টাকা যোগান দেওয়া হবে। 

বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- ‘ঢাকা পানি সরবরাহ নেটওয়ার্ক উন্নয়ন’।

মন্ত্রী জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা শহরের নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। পানি ব্যবহারের অপচয় রোধে পর্যায়ক্রমে প্রি-পেইড মিটার ব্যবস্থা চালু করা হবে।

এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ১৮২ কোটি টাকা। এরমধ্যে সরকারের তহবিল থেকে ১ হাজার ৩৭ কোটি টাকা, বাকি ২ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে।

সভায় অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ২ হাজার ৩৮৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা সদরে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ (প্রথম পর্যায়)’; ২৫১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ডেসকো‘র উত্তরা ও বসুন্ধরা ১৩২/৩৩/১১ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রের ক্ষমতা বর্ধন ও পুনর্বাসন’; ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ন্যাশনাল একাডেমি ফর অটিজম অ্যান্ড নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজেভিলিটিজ প্রকল্প।

‘বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভৌত সুবিধাদি কার্যক্রম বৃদ্ধিকরণ’ নামে সভায় অনুমোদন পাওয়া অপর প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২০৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।