আন্তঃসীমান্ত যোগাযোগ উন্নয়নের প্রকল্পে সায়

আঞ্চলিক বাণিজ্য তরান্বিত করতে সীমান্তবর্তী পাঁচ জেলার সড়ক উন্নয়ন, সেতু নির্মাণ ও অবকাঠামো উন্নয়নের একটি প্রকল্পে সায় দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 April 2016, 05:41 PM
Updated : 26 April 2016, 05:41 PM

‘ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (বাংলাদেশ)’ শীর্ষক এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এশিয়া প্যাসিফিক করিডোরের আঞ্চলিক বাণিজ্যের সুযোগ প্রসারিত হবে বলে মনে করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় এ প্রকল্পটিসহ মোট নয়টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।

প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

এরমধ্যে ৩ হাজার ৪০১ কোটি টাকা প্রকল্প সাহায্য ১৫৫ কোটি টাকা সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন এবং বাকি ২ হাজার ৫৪৩ কোটি ৫০ লাখ টাকার যোগান দেওয়া হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে।

শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে ওই বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে অর্থনৈতিক নীতিমালার উদারিকরণ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে উচ্চ সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

“এছাড়াও নেপাল, মিয়ানমার, ভুটানের মাঝামাঝি হওয়ায় দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের অফুরান সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে বাস্তব রূপ দিতে সরকার ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (বাংলাদেশ) বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।”

প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা। এরমধ্যে প্রায় ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা জাইকা দেবে, বাকি ৬২১ কোটি টাকার যোগান দেওয়া হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে।

মন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের অবস্থান ভারত, নেপাল, মিয়ানমার এবং ভুটানের মাঝামাঝি হওয়ায় এই দেশগুলির মধ্যে যোগাযোগ রক্ষায় বাংলাদেশের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

“অথচ কাস্টমস ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় অপর্যাপ্ত সুবিধা ব্যবস্থার কারণে অভ্যন্তরীণ এবং সীমান্ত এলাকার জরাজীর্ণ রাস্তা ও সেতুর দুরাবস্থার জন্য আন্তর্জাতিক সড়কগুলিতে সঠিকভাবে চলাচল সম্ভব হয় না। সেজন্যই এই অঞ্চলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে আঞ্চলিক ট্রানজিট যানবাহন চলাচলের পরিকল্পনা করা হয়েছে এবং বিভিন্ন স্থায়ী অস্থায়ী অবকাঠামোর উন্নয়ন ও সংরক্ষণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”

বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, ‘দিনাজপুর-চিরিরবন্দর-পার্বতীপুরসড়ক প্রশস্তকরণ’ প্রকল্প, যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা।

‘আমিন বাজার-মাওয়া-মংলা ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন’ প্রকল্প, ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৫৬ কোটি ৫৯ লাক টাকা।

‘ঢাকাস্থ শেরে বাংলা নগরে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্য়ালয় ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প, ব্যয় ৩৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা;

‘পানি ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প, ব্যয় ধরা হয়েছে ২১০ কোটি ৯৪ লাখ ১৩ হাজার টাকা।

‘ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন’ প্রকল্প, এর ব্যয় ২৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা; ‘কিশোরগঞ্জ জেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প, ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

‘নদী তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে মেঘনা নদীর ভাঙ্গন হতে ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন উপজেলা সদর সংরক্ষণ’ প্রকল্প, ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা এবং ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্প- ১ম পর্যায়’ প্রকল্প, যার জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৯০৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা।