রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সোমবার রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) বাংলাদেশ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ২ শতাংশ বেশি আয় করেছে।
মাসিক হিসেবে জানুয়ারিতে আগের বছরের চেয়ে ১০ দশমিক ৪১ শতাংশ বেশি আয় হয়েছে। আর অর্থবছরের সাত মাসে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি আয় হয়েছে ৮ দশমিক ২৬ শতাংশ।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানি করে একহাজার ৯২৬ কোটি ৯৫ লাখ ডলার আয় করেছে, যার মধ্যে প্রায় ৮২ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে।
এ খাতের একহাজার ৫৭৬ কোটি ১২ লাখ ডলার আয়ের মধ্যে উভেন পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে ৮১৬ কোটি ডলার; নিট পোশাক থেকে এসেছে ৭৬০ কোটি ১৭ লাখ ডলার।
২০১৪-১৫ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ আয় করেছিল একহাজার ৭৭৯ কোটি ৯৩ লাখ ডলার।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই সাত মাসে সর্বোচ্চ রপ্তানি আয় হয়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে; নিট ও ওভেন মিলিয়ে একহাজার ৫৭৬ কোটি ডলার। গত বছরের এই সময়ের তুলনায় এই আয় ৯ শতাংশ বেশি।
এই সাত মাসে তৈরি পোশাক শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ১ শতাংশ, যার মধ্যে উভেনে বেড়েছে ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ, নিটে ৫ দশমিক ৯১ শতাংশ।
সোমবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ কার্যালয়ে সিদ্দিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রতি মাসেই রপ্তানি আয় বাড়ছে। অর্থবছরের বাকি পাঁচ মাসেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলেই মনে হচ্ছে।
“আমরা ধারণা করছি, এবার রপ্তানি খাতে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশের মত হবে।”
বিজিএমইএ প্রধান মনে করেন, দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিরাজ করায় রপ্তানি আয় বাড়ছে।
“কোনো সহিংসতা নেই। আমদানি-রপ্তানিতে কোন সমস্যা হচ্ছে না। গ্যাস-বিদ্যুতের সমস্যা অনেকটা দূর হয়েছে। আমাদের প্রধান রপ্তানি বাজার ইউরোপ-আমেরিকার অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
সব মিলিয়ে আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যে ইতিবাচক ধারা ‘বইছে’ বলে মনে করেন এই ব্যবসায়ী নেতা।
“বর্তমান এই পরিবেশ অব্যাহত থাকলে ২০২১ সালের মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের যে লক্ষ্য আমরা ঘোষণা করেছি তা অর্জন সম্ভব হবে।”
অন্য খাতের রপ্তান আয়
তৈরি পোশাক ছাড়া প্রায় অন্য সব খাতেই রপ্তানি আয় কমেছে।জুলাই-জানুয়ারি সময়ে হিমায়িত খাদ্য রপ্তানি কমেছে প্রায় ১৭ শতাংশ।
কৃষি পণ্যের মধ্যে চা রপ্তানি কমেছে ৪৩ শতাংশ। শাকসবজি ৪২ শতাংশ, তামাক ২৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং ফল রপ্তানি ৩৩ শতাংশের বেশি কমেছে।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ১ দশমিক ২২ শতাংশ। প্লাষ্টিক কমেছে ১৪ শতাংশ। পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ১ শতাংশের বেশি।
তবে ওষুধ রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ।জাহাজ এবং এর অন্যান্য সরঞ্জাম রপ্তানি বেড়েছে ১১৮ শতাংশ।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ১২০ কোটি ডলার। এবার তা ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।