৭% প্রবৃদ্ধি অর্জন করবই করব: অর্থমন্ত্রী

চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা সাত শতাংশ অর্জনে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মাল আবদুল মুহিত।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Feb 2016, 06:31 PM
Updated : 7 Feb 2016, 06:31 PM

তিনি বলেছেন, “বিগত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে আমাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ, যা সমতুল্য দেশগুলোর একই সময়ের প্রবৃদ্ধির তুলনায় উচ্চতর। চলতি অর্থবছরে আমরা প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি সাত শতাংশ। এটা আমরা অর্জন করবই করব।”

রোববার সংসদে ‘বাজেট ২০১৫-১৬: প্রথম প্রান্তিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও আয়-ব্যয়ের গতিধারা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন’ এ অর্থমন্ত্রী একথা বলেন।

সরকারি অর্থ ও বাজেট ব্যবস্থাপনা আইন-২০০৯ এর বিধান অনুযায়ী প্রতিবেদনটি সংসদে তোলেন অর্থমন্ত্রী।

চলতি অর্থবছরের প্রথম তিনমাসে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হওয়ায় একাজে ‘তৎপরতা আরও বাড়াতে হবে’ বলে মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী।

চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা (জিডিপির ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ)। প্রথম প্রান্তিকে আদায় হয়েছে ৩৮ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা, যা বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ।

“প্রথম প্রান্তিকে লক্ষ্যমাত্রার এক-পঞ্চমাংশের চেয়েও কম রাজস্ব আহরিত হওয়ার প্রেক্ষিতে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য অর্জনে আমাদের তৎপরতা আরো বাড়াতে হবে,” বলেন মুহিত।

চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে ৮৬ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ শতাংশ। ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক সূত্র হতে জিডিপির ১ দশমিক সাত শতাংশ এবং অভ্যন্তরীণ সূত্র হতে ৩ দশমিক তিন শতাংশ সংস্থানের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

“পাশাপাশি ব্যাংক উৎস হতে ঋণ গ্রহণ লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে সীমিত রাখতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে,” বলেন মুহিত।

চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রয়েছে উল্লেখ করে মুহিত আরও বলেন, “জিডিপির শতাংশ হিসেবে সরকারি ঋণের স্থিতি ৩৫ শতাংশ, যা অত্যন্ত সহনীয়। সার্বিকভাবে সরকারি ঋণ ব্যবস্থাপনায় আমাদের অবস্থান বেশ ভালো।”

আমদানি ও রপ্তানির প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রপ্তানি খাতের অর্জিত প্রবৃদ্ধি শূণ্য দশমিক আট শতাংশ। ইঞ্জিনিয়ারিং ও ইলেকট্রিক দ্রব্যাদি, কাঁচাপাট, ওভেন গার্মেন্টস এবং রাসায়নিক দ্রব্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হলেও পাটজাত দ্রব্য (কার্পেট ব্যতীত), চা, হিমায়িত খাদ্য, চামড়া নিটওয়্যার এবং কৃষিজাত পণ্যের রপ্তানির প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হয়নি।

“সম্প্রতি উন্নত দেশমসূহের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে রপ্তানিখাতে শিগগিরই গতি সঞ্চার হবে বলে আশা করা যায়।”

প্রথম প্রান্তিকে রেমিটেন্স কমে যাওয়ার বিষয়টিও আসে প্রতিবেদনে। এই সময়ে ৩ হাজার ৯৩৪ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে, গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৪ হাজার ১১ মিলিয়ন ডলার।

কয়েকটি দেশে জনশক্তি রপ্তানি কমে যাওয়ায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বলেও স্বীকার করেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে রাজনৈতিক সুস্থিতির উপরও জোর দেন তিনি।