পদ্মা সেতুর ব্যয় বাড়ল ৮ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব অর্থায়নে ২০ হাজার কোটি টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হলেও এ প্রকল্পে নতুন করে আরও ৮ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Jan 2016, 08:20 AM
Updated : 5 Jan 2016, 08:20 AM

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের সভায় এই অনুমোদনের ফলে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এইবার আরও নতুন নতুন অনেকগুলো কম্পোনেন্ট যুক্ত হয়েছে পদ্মা সেতুতে। নদী শাসনের জন্য ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মূল সেতুর খরচও বেড়ে গেছে। তাছাড়া নতুন করে জমিও অধিগ্রহণ করতে হয়েছে।”

২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই সেতু গাড়ি ও ট্রেন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

“এই সেতু পুরো জাতির স্বপ্নের প্রকল্প। এটি বাস্তবায়িত হলে মোট দেশজ আয়ের (জিডিপি) এক দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে।”

পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম এর আগে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছিলেন, মূলত নদী শাসন ও মূল কাঠামোর দুই খাতে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হওয়ার কারণেই প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে সড়ক পথে রাজধানীসহ মধ্যাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করতে গত ১২ ডিসেম্বর পদ্মা নদীর উপর ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু নির্মাণর মূল কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের নথিপত্রে দেখা যায়, ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য ছিল, যার সঙ্গে এখন ৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা যুক্ত হচ্ছে।

চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি ১২ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকায় সেতুর মূল কাঠামো তৈরি করছে। নদী শাসনে সিনোহাইড্রো করপোরেশনকে দিতে হচ্ছে ৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

২০১১ সালের প্রথম প্রস্তাবে এ দুই খাতে ব্যয় ধরা হয়েছিল যথাক্রমে ৯ হাজার ১৭২ কোটি ১৭ লাখ এবং ৫ হাজার ৩৬২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

এছাড়া জাজিরা ও মাওয়া সংযোগ সড়ক এবং সার্ভিস এলাকা নির্মাণেও ব্যয় বাড়ছে বলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এ তিন অংশে ব্যয় হচ্ছে যথাক্রমে ১ হাজার ৯৭ কোটি ৩৯ লাখ, ১৯৩ কোটি ৪০ লাখ ও ২০৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এ তিন অংশের কাজই যৌথভাবে করছে বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেড ও মালয়েশিয়ার এইচসিএম কনস্ট্রাকশন।

২০০৭ সালে একনেক ১০ হাজার ১৬১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পটি অনুমোদন করেছিল। পরে নকশা পরিবর্তন হয়ে দৈর্ঘ্য বেড়ে যাওয়ায় নির্মাণ ব্যয়ও বেড়ে যায়। ২০১১ সালে ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকার সংশোধিক প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পেয়েছিল।