এখন থেকে প্রতিবছর ব্যাংকিং মেলা: গভর্নর

প্রতিবছর ব্যাংকিং মেলা আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Nov 2015, 02:39 PM
Updated : 28 Nov 2015, 02:40 PM

প্রথমবারের মতো আয়োজিত পাঁচ দিনের ব্যাংকিং মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রধান বলেন, “মেলায় আমরা যথেষ্ট সাড়া পেয়েছি। তাই আমি খুবই আনন্দিত, মুগ্ধ ও গর্বিত। বছরের এই সময় বা বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে প্রতিবছর ব্যাংকিং মেলা আয়োজন করতে চাই।”

গত ২৪ নভেম্বর রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে শুরু হওয়া ব্যাংকিং মেলা শেষ হলো শনিবার।

সন্ধ্যায় একাডেমি প্রাঙ্গণে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক। অন্যদের মধ্যে ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মুহা. রাজী হাসান, মেলার প্রধান সমন্বয়কারী বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরূপাক্ষ পাল প্রমুখ বক্তব্য দেন।

আতিউর রহমান বলেন, “একটি ব্যাংকিং জাতি গড়ার যে প্রত্যয় নিয়ে এই মেলা আয়োজন করা হয়েছিল তা সত্যিকার অর্থেই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিল।

“শুধু আর্থিক খাতের সেবা ও পণ্যের প্রচার, এসব পণ্য ও সেবা সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে ধারণা দেওয়া এবং দেশের সব মানুষকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আনার মূল উদ্দেশ্যের মধ্যেই মেলাটি সীমাবদ্ধ ছিল না।

“বরং গত পাঁচটি দিন আর্থিক খাতের কর্মী, সেবাভোগী, সেবাপ্রত্যাশী ও সাধারণ মানুষের পদচারণায় বাংলা একাডেমি পরিণত হয়েছিল এক মিলনমেলায়।”

বাংলাদেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংক, একটি বিশেষায়িত ব্যাংক, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও আর্থিক সেবা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মিলে ৮০টির মতো স্টল ছিল মেলায়। ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০-১২টি বিভাগের স্টল।

“এসব স্টল থেকেই আর্থিক পণ্য ও সেবা সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে ধারণা দেওয়া হয়েছে। জবাব দেওয়া হয়েছে তাদের নানা জিজ্ঞাসার। আমানত, ঋণ ও বিনিয়োগ সম্পর্কেও মানুষ সম্যক ধারণা নিয়েছেন। এক জায়গায় সকল ব্যাংক ও সকল সেবা পেয়ে মানুষ উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ হয়েছে,” বলেন আতিউর রহমান।

গভর্নর বলেন, “দেশের অর্থনীতিকে আরও বেগবান করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এজন্য আমরা নিত্যদিনের আর্থিক সেবা ও পণ্য সহজে পৌঁছে দিতে চাই সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায়। এই মেলা জাতির সামনে আমাদের সেই অক্লান্ত নিত্যদিনের সেবার কথা তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে।

“ব্যাংক যে শুধু ধনীদের জন্য নয়, এটি সকল মানুষের জন্য- তা তুলে ধরা হয়েছে এই মেলায়। ব্যাংকগুলোও আজ শিখতে পেরেছে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য বিত্তবানদের পাশাপাশি বিত্তহীনদের মাথার ওপরও ছাতা খুলে ধরা উচিৎ। মানুষ জানতে পেরেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে তাদের আর্থিক উন্নতির একনিষ্ঠ বন্ধু।”

আতিউর রহমান বলেন, গত ছয়-সাত বছর ধরে ‘বিচক্ষণ’ মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও আর্থিক খাত তত্ত্বাবধান কাঠামোয় ব্যাপক পরিবর্তনের পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতকে কাজে লাগিয়ে দেশের গরীব, অসহায়, বঞ্চিতদের ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কৃষি, খুদে, মাঝারি, নারী উদ্যোক্তা ও পরিবেশবান্ধব খাতে অর্থায়ন বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “নিম্নআয়ের মানুষদের আর্থিক সেবায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কৃষক ও অসহায় মানুষ, গার্মেন্ট শ্রমিক, স্কুলের ছাত্রছাত্রী, কর্মজীবী পথশিশুরা দশ টাকায় ব্যাংক হিসাব খুলতে পারছে। অথচ একসময় ব্যাংক ছিল তাদের কাছে সোনার হরিণ।”

মোবাইল ব্যাংকিং সেবা গ্রহণের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ কিভাবে উপকৃত হচ্ছে তার নানা দিক তুলে ধরেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর।

“সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ‘ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থা’ বাস্তবায়ন করা হয়েছে,” বলেন তিনি।