উন্নয়ন ফোরামের সম্মেলন নভেম্বরে

সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বৈদেশিক সম্পদের চাহিদা দাতাদের কাছে তুলে ধরতে ছয় বছর পর অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের (বিডিএফ) সম্মেলন।

জাফর আহমেদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2015, 04:23 PM
Updated : 27 August 2015, 04:23 PM

নভেম্বরের মাঝামাঝিতে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় দুদিনব্যাপী এই সম্মেলনে দাতাগোষ্ঠীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।

এর আগে দাতারা অক্টোবর মাসে বৈঠকের আগ্রহ দেখালেও সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী নভেম্বরের মাঝামাঝিতে সম্মেলনটি আয়োজন করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব মনোয়ার আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দাতারা অক্টোবরে এ সম্মেলন করার আগ্রহ দেখিয়েছিল । কিন্তু ওই সময়ে সরকারের উপর মহলে নানা রকম ব্যবস্ততার ফলে তা নভেম্বরের মাঝামাঝিতে করা হচ্ছে। দাতা ও সরকার দুপক্ষ নভেম্বরের মাঝামাঝিতে সম্মেলনটি আয়োজন করার বিষয়ে একমত।”

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের নির্দেশনা অনুযায়ী শিগগিরই সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে এইড ইফেক্টিভনেস ইউনিটের সঙ্গে শনিবার ইআরডি সচিব মেজবাহউদ্দিনের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

এক সময়ের ‘প্যারিস কনসোর্টিয়াম’ রূপান্তরিত হয়ে ২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম (বিডিএফ) নামে পরিচিত হয়।

সরকার ও উন্নয়ন সহযোগীদের সংগঠন এলসিজির যৌথ আয়োজনে ঢাকায় সপ্তমবারের মতো অনুষ্ঠেয় এই বৈঠকে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ (এডিবি) দাতা দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।

এর আগে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ঢাকাতেই সর্বশেষ বিডিএফ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সর্বশেষ বৈঠকে প্রতিবছর বিডিএফ বৈঠক অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও পরবর্তীতে উন্নয়ন সহযোগীদের অনীহার কারণে আয়োজন করতে পারেনি সরকার।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইআরডির এক কর্মকর্তা জানান, মূলত ২০১২ সালে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে টানাপড়েনের কারণে দাতারা বিডিএফ নিয়ে আগ্রহ দেখাননি। 

২০০২ সালে সর্বপ্রথম ঢাকায় বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ফান্সের রাজধানী প্যারিসে দাতাদের সঙ্গে সরকারের বৈঠকে অর্থমন্ত্রীসহ সরকারের অন্যান্য মন্ত্রী এবং কর্মকর্তারা অংশ নিতেন, যা ‘প্যারিস কনসোর্টিয়াম’ নামে পরিচিত ছিল।

ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, এবারের বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে বাস্তবায়নের অপেক্ষায় থাকা সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রাগুলো বাস্তবায়নে পরামর্শ ও আর্থিক সহযোগিতার অনুরোধ জানানো হবে।

পরিকল্পনা বাস্তবায়নে যে বিপুল পরিমাণ বিদেশি অর্থের প্রয়োজন হবে, তার একটি অংশ চাওয়া হবে দাতাদের কাছ থেকে।

একইসঙ্গে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত করতে কাঙ্ক্ষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন, বিদেশি বিনিয়োগ ও রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য দাতাদের নীতিগত সহায়তা চাওয়া হবে।

মধ্য আয়ের দেশ হতে আগামী ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৪০০ কোটি ডলারে বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন হবে।

১৯৭২ সাল থেকে গত জুন পর্যন্ত উন্নয়ন সহযোগীরা বাংলাদেশকে মোট ছয় হাজার ২০০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা দিয়েছে।

এর মধ্যে তিন হাজার ৭০০ কোটি ডলার ঋণ হিসেবে, আর দুই হাজার ৫০০ কোটি ডলার অনুদান হিসেবে এসেছে।