দাতাদের কাছে প্রকল্পের ১০ শতাংশ অর্থ অগ্রিম চাইবে সরকার

বিদেশি সহায়তার প্রকল্পের কাজ শুরু করতে প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ১০ শতাংশ অর্থ অগ্রিম ছাড় করতে দাতাদের কাছে অনুরোধ জানাবে সরকার।

জাফর আহমেদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 August 2015, 05:08 PM
Updated : 20 August 2015, 05:08 PM

আগামী মাসে বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রস্তাব করা হবে বলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব ফরিদা নাসরিন জানিয়েছেন।

দাতাদের অর্থায়নে গৃহীত প্রকল্পগুলো সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদনের পর কাজ শুরু করতে অর্থের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এ প্রস্তাব করা হবে বলে ইআরডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ইআরডির এ বিষয়ক একটি কার্যপত্রে বলা হয়েছে, ইআরডির বৈদেশিক সাহায্যের বাজেট ও হিসাব অনুবিভাগ (ফাবা) গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সরকারের প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করে। ওই সব বৈঠকে আলোচনার ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন সমস্যা দূর করতে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পে দাতাদের প্রতিশ্রুত অর্থের ১০ শতাংশ অর্থ অগ্রিম ছাড়সহ বেশ কয়েকটি সুপারিশ চূড়ান্ত করা হয়।

“ওই সুপারিশের ভিত্তিতেই ইআরডি আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে দাতা সংস্থাগুলোর কাছে এ প্রস্তাব দেবে।”

প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বাড়াতেই দাতাদের কাছে এ প্রস্তাব করা হবে বলে কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

অতিরিক্ত সচিব ফরিদা নাসরিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফাবা ত্রিপক্ষীয় বৈঠক থেকে প্রকল্পের বাস্তবায়ন জটিলতা এড়াতে সুপারিশ প্রণয়ন করেছে। এসব সুপারিশ নিয়ে দাতাদের সঙ্গে ইআরডি বৈঠক করে দাতাদের কাছে প্রতিশ্রুত অর্থের ১০ শতাংশ অর্থের অগ্রিম ছাড়ের প্রস্তাব করা হবে।”

সেপ্টেম্বর মাসে দাতাদের সঙ্গে এই বৈঠকটি হবে বলে জানান ইআরডি কর্মকর্তারা।

দাতারা এ প্রস্তাব কীভাবে নেবে জানতে চাইলে বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার মনে হয় দাতা সংস্থাগুলোকে সরকার যৌক্তিক পর্যায়ে এ প্রস্তাব দিলে তা ইতিবাচকভাবে নিতে পারে।

“তবে আমি মনে করি শুধু অর্থের কারণে প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করতে দেরি হয় না। এজন্য ভূমি অধিগ্রহণ, টেন্ডারিং ও ক্রয় প্রক্রিয়া ঠিকমত না হওয়ার কারণেই প্রধানত প্রকল্প বাস্তবায়নে জটিলতা দেখা দেয়।”

“প্রতিশ্রুত অর্থের ১০ শতাংশ অগ্রিম ছাড় করলে প্রকল্পটি তাড়াতাড়ি শুরু করা যাবে- এমন প্রকল্পে বিশেষ করে বিশ্ব ব্যাংক ইতিবাচক ভূমিকা নিতে পারে। সকল প্রকল্পের জন্য রাজি নাও হতে পারে। এর আগেও বেশ কিছু প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংক অগ্রিম অর্থ দিয়েছে।”

ফাবার আয়োজনে ওই ধারাবাহিক বৈঠক থেকে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের বাস্তবায়ন হার বাড়াতে ছয়টি ‍সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

এগুলোর মধ্যে প্রতি সভায় ধীর গতির প্রকল্প বাছাই করে ধীর গতির কারণ চিহ্নিত করে গতি বাড়াতে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ধীর গতির প্রকল্পগুলোর সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিল করে তা পরবর্তী সভায় আলোচনা করা, দাতা সংস্থার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে চুক্তি স্বাক্ষরের অপেক্ষায় থাকা প্রকল্পের বিলম্বের কারণ খুঁজে বের করে তা সমাধান করা, চুক্তি স্বাক্ষরের পর দুই মাসের মধ্যে অর্থছাড় শুরু না হলে সংশ্লিষ্ট দাতার সঙ্গে বৈঠক করে করণীয় ঠিক করা ইত্যাদি রয়েছে।