২৬ বিলিয়ন ডলারও ছাড়াল রিজার্ভ

বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন ২ হাজার ৬০০ কোটি (২৬ বিলিয়ন) ডলার ছাড়িয়েছে।

আবদুর রহিম হারমাছি প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 August 2015, 12:18 PM
Updated : 18 August 2015, 04:51 AM

সোমবার দিন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৬ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে এর আগে কখনোই রিজার্ভ এই উচ্চতায় পৌঁছায়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমান এই তথ্য জানিয়ে বলেন, প্রতি মাসে ৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসাবে এই রিজার্ভ দিয়ে সাত মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মূলত রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্সে ভালো প্রবৃদ্ধির ফলে বৈদেশিক মুদ্রা পরিস্থিতি শক্তিশালী অবস্থানে দাঁড়িয়েছে।”

এছাড়া জ্বালানি তেল এবং খাদ্য পণ্য আমদানিতে খরচ কম হওয়ায় তা রিজার্ভ বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে, বলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত বছরের ৩১ জুন রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২১ বিলিয়ন ডলার। এক বছরের ব্যবধানে তা ৫০০ কোটি ডলার বেড়ে ২৬ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে।

চলতি বছর ২৬ ফেব্রুয়ারি রিজার্ভ ২৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করলেও মার্চের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের ১০১ কোটি ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর তা ২২ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছিল।

এরপর ২৯ এপ্রিল ২৪ মিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন। মাঝখানে কিছুটা কমলেও ২৫ জুন তা ২৫ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়ে যায়।

মে-জুন মেয়াদের আকুর বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। ১৪ জুলাই ফের তা ২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়।

আকুর জুলাই-অগাস্ট মেয়াদের বিল শোধ করতে হবে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে। তার আগ পর্যন্ত রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন ডলারের ওপরেই থাকবে বলেই ছাইদুর রহমান মনে করেন।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়। বাংলাদেশকে দুই মাস পরপর পরিশোধ করতে হয় আকুর বিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৫ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স দেশে এসেছে। এই অংক আগের অর্থবছরের চেয়ে ৭ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি।

আর চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৩৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। চলতি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে (১ অগাস্ট থেকে ১৪ অগাস্ট) এসেছে ৫৯ কোটি ডলার।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বলছে, চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে ২৮ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয় দেশে এসেছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।