ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত জুন শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
জুন শেষে ব্যাংক খাতে বিতরণ করা মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৮৫ কোটি টাকা।
খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণ হিসেবে নতুন কারখানাগুলোর গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়াকে দায়ী করেছেন ব্যবসায়ী নেতা হোসেন খালেদ।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেক প্রতিষ্ঠান গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার আশ্বাসে নতুন কারখানা স্থাপন করে সংযোগ পায়নি। ফলে উৎপাদনে যেতে পারেনি। যে কারণে তাদের অনেকে খেলাপি হয়ে পড়েছে। আবার চালু প্রতিষ্ঠানগুলোও চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ ও গ্যাস পাচ্ছে না। যে কারণে তাদের উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে।”
পাশাপাশি বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতিতে এক ধরনের ধীর গতি চলছে দাবি করে একেও খেলাপি ঋণ বাড়ার পেছনে দায়ী করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি হোসেন খালেদ।
গত বছরের জুন শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫১ হাজার ৩৪৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, যা ওই সময়ের বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
এরপরে গত বছরের সেপ্টেম্বরে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয় ৫৭ হাজার ২৯০ কোটি টাকা, যা ওই সময়ের বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ।
ডিসেম্বরে গিয়ে খেলাপি ঋণ কমে আসে ৫০ হাজার ১৫৫ কোটি টাকায়, তা ছিল বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
এবছরের প্রথম প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ আবার বেড়ে যায়। মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৪ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকায়, যা বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
২০১৪ সালের শুরুতে নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা হলে তার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বাংলাদেশ ব্যাংক রাজনৈতিক কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ মাত্র ৫ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট (এককালীন জমা) দিয়ে পুনঃতফসিল করার সুবিধা দেয়। এই সুবিধায় ১২ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল হয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার কারণেই ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বাড়ছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণের ৫৩ দশমিক ৬০ শতাংশ রাষ্ট্র মালিকানাধীন পাঁচটি ব্যাংকের বিতরণ করা। আর ৬৭ দশমিক ৪০ শতাংশ খেলাপি ঋণ সৃষ্টি হয়েছে ১০টি ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণ থেকে।