দাবি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে কর্মচারীরা

প্রজাতন্ত্রের কর্মী হিসেবে বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছেন অভিযোগ করে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তার প্রতিবিধান চেয়েছেন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সরকারি কর্মচারীরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2015, 12:05 PM
Updated : 3 August 2015, 12:05 PM

সোমবার তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত।

সচিবালয়ে দুপুরে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন অর্থমন্ত্রী।

সমন্বয় পরিষদের সভাপতি হানিফ ভূঁইয়া বলেন, “সংবিধানে প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মীদের ‘কর্মচারী’ উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এসে কর্মকর্তা-কর্মচারী শ্রেণি বিভেদ করা হয়েছে। এতে আমরা শুধু আর্থিকভাবে না সামাজিকভাবেও হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছি।”

এর পরিপ্রেক্ষিতে মুহিত বলেন, “এটি একটি ভালো পয়েন্ট আপনারা বলেছেন। নতুন বেতন স্কেল বাস্তবায়নের সময় এটা দূর করা হবে।”

বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ সচিবালয়ের বাইরে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জাতীয় সংগঠন। 

আলোচনা সভায় সংগঠনের পক্ষে সচিবালয় ও সচিবালয়ের বাইরের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধার পার্থক্য দূর, বেতন বাড়ানোর ক্ষেত্রে ১ থেকে ১০ গ্রেড পর্যন্ত বেতনের যে ব্যবধান ১১ থেকে ২০ পর্যন্ত তার সমন্বয়ে ব্যবধান সৃষ্টি, সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বহাল রাখার দাবি জানানো হয়।

হানিফ ভূঁইয়া বলেন, “আমার মূল বেতন ৫৯০০ টাকা। আমি টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পেয়ে ১১ হাজার ৩০০ টাকা পাচ্ছি। প্রস্তাবিত স্কেলে আমার গ্রেডে স্কেল নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ৩০০ টাকা। তাহলে আমার বেতন বাড়ল কোথায়? কিন্তু বলা হচ্ছে বেতন দ্বিগুণ করা হয়েছে।”

অর্থমন্ত্রী এই বক্তব্যে ভিন্নমত জানিয়ে বলেন, “এটা ঠিক না যে আপনার বেতন বাড়ছে না। আপনার মূল স্কেল বাড়ছে। এতে আপনি লাভবান হবেন। আর টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের যে সুবিধা, সেটা আপনারা বছর বছর বেতন বাড়ানোর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাবেন। এখন তো অনেকে সময়মতো টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পায় না, সেই বৈষম্য দূর হবে।”

সংগঠনের সহ-সভাপতি হেদায়েত হোসেন বলেন, সরকার যে মহার্ঘ ভাতা দিচ্ছে সেটা চারজনের পরিবার হিসেবে দিচ্ছে। এখন বেতন কাঠামো হচ্ছে ছয় সদস্যের পরিবার ধরে। এই হিসেবে সর্বনিম্ন ধাপে বর্তমান স্কেলে বিবেচনা করলেই ৮ হাজার ৪০০ টাকা বেতন হয়। সেই হিসেবে ন্যূনতম বেতন প্রস্তাবিত স্কেলে কম ধরা হয়েছে। আমাদের দাবি ন্যূনতম বেতন ১০ হাজার টাকা করা হোক।

সংগঠনের কার্যকরি সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, “সচিবালয়ের কর্মচারীদের পদোন্নতির সুযোগ আছে। কিন্তু আমরা যারা সচিবালয়ের বাইরে বিভিন্ন অধিদপ্তরে চাকরি করছি, আমাদের পদোন্নতির সুযোগ নেই। হয় আমাদের জন্য পদ সৃজন করেন, নতুবা আমাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর ব্যবস্থা করেন।”

এসময় তিনি নিজের উদাহরণ দিয়ে বলেন, “আমি ৩২ বছর ধরে একাউন্টেন্ট হিসেবে কর্মরত আছি, কোনো পদোন্নতি পাচ্ছি না।”

সব শুনে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমি আপনাদের কথা শুনে যেটা বুঝলাম সেটা হচ্ছে আপনারা সচিবালয় ও সচিবালয়ের বাইরে সুবিধার যে তফাৎ আছে তার অবসান চাচ্ছেন, ন্যূনতম বেতন বাড়ানো ও স্কেলে ধাপের ব্যবধান কমাতে চাচ্ছেন। এখন দেখা যাক কী করা যায়।”

অগাস্ট মাসের মধ্যে প্রস্তাবিত বেতন স্কেল চূড়ান্ত হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী জানান।