বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালের ৫ নম্বর জেটিতে বন্দরের বহরে যুক্ত হওয়া যন্ত্রপাতি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “এই যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকবে না- এই আন্দোলন প্রথম ২০০৪ সালে ইসলামী ছাত্র শিবির শুরু করে। ২০১৮ তে এসে এটাকে একটা পর্যায়ে নিয়ে গেল।
“সাধারণ ছাত্রদের কথা বলছি না। কোটা আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদের ইতিহাস কী? পারিবারিক বৈশিষ্ট্য কী? তারা জয় বাংলা বলে না। জাতির পিতা বলে না। যদি দেশপ্রেম থাকে তাহলে এই কথা তো বলতে হবে।”
তিনি বলেন, “কোটা সংস্কারের দাবি তারা করতেই পারে। তার মানে এই নয়, রাস্তা বন্ধ করে যাত্রীদের ভোগান্তিতে ফেলে দেবে। তার মানে এই নয়, গভীর রাতে মুখোশ পরে ভিসির বাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে তাকে হত্যার অপচেষ্টা করবে।”
এই আন্দোলনের পেছনে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ‘ষড়যন্ত্র’ রয়েছে বলে মনে করছেন শাজাহান খান।
তিনি বলেন, “নয় বছরে শেখ হাসিনার অন্যতম সাফল্য হচ্ছে তিনি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পেরেছেন। যে আদর্শের ভিত্তিতে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনেকাংশে প্রতিষ্ঠিত করতে সফল হয়েছেন। তাই সরকারকে বিব্রত করতে অনেকে অনেক চেষ্টা করছে। বারবার তারা আঘাত হানছে। উদ্দেশ্য শেখ হাসিনাকে উৎখাত করা। উদ্দেশ্য এ রাষ্ট্রকে পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালিত করা। এদেশে পাকিস্তানের এজেন্ট যারা খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে রাজনীতি করছেন তারাই ষড়যন্ত্র করছে।
“তারই একটা পর্যায়ে সর্বশেষ পদক্ষেপ-কোটা। ছাত্রদের একটা আন্দোলনে নামিয়ে দেওয়া হল।”
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি দাবি জানিয়ে নৌমন্ত্রী বলেন, এখন সব কোটা বাতিল হয়ে গেছে। এখন মেধার চাকরিতে কোনো আপত্তি নেই। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা স্বজন-সন্তানরা ছয় দফা দাবি দিয়েছে।
“সেই দাবিও মানা হোক। আমাদের দাবি, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না, রাজাকার-আলবদর, জামায়াত-শিবির ও স্বাধীনতাবিরোধীর সন্তানরা কেউ সরকারি চাকরি যেন না পায়। কারণ তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, সুযোগ পেলে তারা সব শেষ করে দেবে।”
চট্টগ্রাম বন্দরের বহরে কন্টেইনার ও পণ্য ওঠা-নামা করানোর ১০টি নতুন যন্ত্র যুক্ত হয়েছে।
ওই অনুষ্ঠানে কর্ণফুলী নদীর তীরের পতেঙ্গা এলাকায় ১৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভোজ্য তেল খালাসের একটি স্থায়ী জেটি উদ্বোধন করেন নৌমন্ত্রী। পাশাপাশি বন্দরের চার নম্বর গেইটের কাছে ১০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত চারতলা নিরাপত্তা ভবনও উদ্বোধন করা হয়।
গত বছরের ডিসেম্বর থেকে মোট প্রায় ১১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকায় কেনা যন্ত্রের মধ্যে আছে একটি রেল মাউন্টেড গ্যান্ট্রি ক্রেন (এইচডিএইচএম), চারটি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন (কালমার), দুটি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন (টিজিপিসি), একটি লগ হ্যান্ডলার ও দুটি মোবাইল ক্রেন।
এরমধ্যে প্রায় ২২ কোটি টাকা মূল্যের রেল মাউন্টেড গ্যান্ট্রি ক্রেন (এইচডিএইচএম) এই প্রথম বন্দরের বহরে যুক্ত হলো।
“আমি তখন বলেছিলাম খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করব। আশা করি এসব নতুন যন্ত্রপাতির মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের হ্যান্ডলিং আরও উন্নত হবে।”
২০০৯ সাল থেকে এই নয় বছরে বন্দরের জন্য ২৮৬টি যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, নতুন যন্ত্র যুক্ত হতে থাকায় বন্দরের যন্ত্রপাতি সংকট দ্রুত কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। জাহাজ থেকে কন্টেইনার ওঠানামার সক্ষমতা বাড়াতে ১০টি গ্যান্ট্রি ক্রেন বন্দরের বহরে দ্রুত যুক্ত করতে হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর জুলফিকার আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বন্দর কর্মচারী পরিষদের (সিবিএ) সভাপতি আবুল মনসুর আহমেদ।