এজলাসে হামলা: বোমা মিজানসহ ৩ জঙ্গির সাজা 

এক যুগ আগে চট্টগ্রাম আদালত ভবনে দুই বিচারকের এজলাসে বোমা হামলার ঘটনায় করা দুই মামলায় পলাতক জেএমবি নেতা ‘বোমা মিজানসহ’ তিন জঙ্গিকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Sept 2017, 10:03 AM
Updated : 26 Sept 2017, 10:03 AM

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মোহাম্মদ সাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করেন।

জেএমবির ‘বোমা কারিগর’ জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমা মিজান ছাড়া দণ্ডিত বাকি দুই আসামি হলেন- জেএমবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার জাবেদ ইকবাল ও শাহাদাত আলী। তারা দুজন রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। 

এ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত কৌঁসুলি সাইফুন নাহার খালেক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দুই মামলায় তিন আসামির প্রত্যেককে সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে রায়ে।

“দুই মামলার সাজা একই সঙ্গে কার্যকর হবে। প্রত্যেক মামলায় আসামিদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সাজা ভোগ করতে হবে।”

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৩ অক্টোবর চট্টগ্রাম আদালত ভবনে দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন এবং মহানগর হাকিম আকরাম হোসেনের এজলাসে জঙ্গিরা বোমা ছুড়ে মারে। ওই বোমা তারা বইয়ের ভেতর লুকিয়ে নিয়ে আদালতে ঢোকে।

হামলার সময় বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন ও আকরাম হোসেন এজলাসেই ছিলেন। তবে বোমাগুলো বিস্ফোরিত না হওয়ায় কেউ হতাহত হননি।

হামলার পরপরই পুলিশ ও আইনজীবীরা ধাওয়া করে আবদুল মালেক লাল্টু ও শাহাদাত আলী নামে দুই জঙ্গিকে ধরে ফেলেন। তাদের মধ্যে লাল্টুর পকেটে থাকা চিরকুটে লেখা ছিল- “মানব রচিত আইনে বিচারকারী ও গ্রহণকারীর বিরুদ্ধে প্রথম দফা টেস্ট অ্যাকশন।”

পুলিশ ওইদিনই নগরীর কোতোয়ালি  থানায় দুটি হত্যাচেষ্টার মামলা করে। জেএমবি নেতা জাবেদ ইকবাল, আবদুল মালেক লাল্টু, শাহাদাত আলী, বোমা মিজান, শায়খ আবদুর রহমান ও আতাউর রহমান সানিকে সেখানে আসামি করা হয়।

মামলার বিচার চলাকালেই লাল্টুর মৃত্যু হয়। অন্য মামলায় শায়খ আবদুর রহমান ও আতাউর রহমান সানির ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তাই এ দুটি মামলা থেকে তাদের নাম বাদ দেয়া হয়। 

২০০৭ সালের ২৫ জুলাই দুই মামলায় অভিযোগ গঠনের পর ২০০৮ সালের ২৭ জানুয়ারি শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। একটি মামলায় ১৮ এবং অন্য মামলায় ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার রায় দেওয়া হল।

এ মামলার আসামিরা সবাই এক সময় কারাগারে থাকলেও ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে এক পুলিশকে হত্যা করে মিজানসহ তিন জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয় তাদের সহযোগীরা।

মিজান বর্তমানে ভারতে রয়েছেন বলে পুলিশ কর্মকর্তাদের ধারণা। বাকি দুই আসামি জাবেদ ইকবাল ও শাহাদাত আলীকে রায়ের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।