চট্টগ্রামে সূর্যাস্তের পর তাজিয়া মিছিল নয়

চট্টগ্রামে আশুরা উপলক্ষে আয়োজিত তাজিয়া মিছিল সন্ধ্যার আগেই শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছেন নগর পুলিশের কমিশনার ইকবাল বাহার।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Sept 2017, 07:28 AM
Updated : 25 Sept 2017, 07:28 AM

সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) কার্যালয়ে আশুরা উপলক্ষে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি।

সভায় সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার বলেন, সন্ধ্যার পর কোনো তাজিয়া মিছিল যদি বের হয়, কোনো ধরনের ঘটনা ঘটে গেলে এটা নিয়ে একটা ইস্যু তৈরি হবে।

“সেজন্য আপনাদের কাছে অনুরোধ, ভোর থেকে সূর্যাস্তের আগে পর্যন্ত যে কোনো সময় করেন। আমরা আপনাদের নিরাপত্তা দেব। তবে সন্ধ্যার পর কোনো তাজিয়া মিছিল করা যাবে না।”

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পুলিশ সদর দপ্তর থেকেও নির্দেশনা আছে বলে জানান তিনি।

সিএমপি কমিশনার বলেন, “মিছিলে ঝাণ্ডা, বাঁশ, লাঠি রাখতে পারবেন, তবে তা কোনোভাবেই যেন ১২ ফুটের বেশি না হয়। বাজি পটকা ফোটানো যাবে না। ছুরি বল্লম সেগুলো রাখা যাবে না।

“আশুরা শোকের দিন, শোকাবহ পরিবেশ থাকবে। মন থেকে কান্না করবেন। তবে শরীরে ছুরি, লোহার বল দিয়ে রক্তাক্ত করবেন না।”

তাজিয়া মিছিলে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ, লাঠি খেলা এবং মিছিল পরিচালনার বিষয়েও কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয় সভায়।

সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার বলেন, “যারা খেলবে তাদের আগে পাঠিয়ে দেবেন। র‌্যালি সেখানে যাওয়ার পর র‌্যালির সাথে তারা যুক্ত হয়ে যাবে। মিছিল দাঁড় করিয়ে কেউ খেলবেন না।

“আপনারা সেচ্ছাসেবক নিয়োগ করবেন, তাদেরকে আর্ম ব্যান্ড বা টি শার্ট দেবেন। তাদের তালিকা আমাদের কাছে আগেই পাঠিয়ে দেবেন। মাঝপথে মিছিলে কোনো ব্যক্তি বা গ্রুপ যুক্ত হতে চাইলে তাদের যুক্ত হতে দেবেন না।”

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সর্বোচ্চ সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে কমিশনার বলেন, “কোনো অবস্থাতেই অন্য কোনো ব্যক্তি বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সামনে উসকানিমূলক কিছু বলবেন না। এ বিষয়ে মিছিল শুরুর আগেই সবাইকে বলে দেবেন। মিছিলে যাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট না হয়।

“সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উসকানিমূলক কিছু প্রকাশ হলে সবার আগে আমাদের জানাবেন।”

মিছিলে কোনো ব্যক্তির সন্দেহজনক গতিবিধি দেখলে মিছিলের নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ সদস্যদের দ্রুত তা অবহিত করার আহ্বান জানান সিএমপি কমিশনার।

সভায় জানানো হয়, বন্দরনগরীতে এবার আশুরা উপলক্ষে ১ অক্টোবর মোট ১০টি তাজিয়া মিছিল বের হবে।

এর মধ্যে খুলশী থানা এলাকায় সর্বোচ্চ তিনটি মিছিল হবে। এছাড়া হালিশহর থেকে দুটি এবং বায়েজীদ, আকবর শাহ, বাকলিয়া, সদরঘাট, পাঁচলাইশ থেকে একটি করে মিছিল বের হবে।

এসব মিছিলের নিরাপত্তায় মোট ৪০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।

সিএমপি কমিশনার বলেন, আশুরার আগের দিন (৩০ সেপ্টেম্বর) বিজয়া দশমী। নগরীর ২৩৩টি পূজামণ্ডপের মধ্যে ২২৭টিই ওইদিন প্রতিমা বিসর্জন দেবে। কাজেই ফোর্স নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।

সভায় অন্যদের মধ্যে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) দেবদাস ভট্টাচার্য্য, অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যন্ড অপারেশন) সালেহ মো. তানভীর এবং অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) মাসুদ উল হাসান এবং সিএমপির বিভিন্ন জোনের উপ-কমিশনার ও থানার ওসিরা উপস্থিত ছিলেন।

১০ মহররম মুসলিম বিশ্বে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক।

এদিন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর দৌহিত্র ইমাম হোসেন (রা.) ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে শহীদ হন।

সেই থেকে মুসলিম বিশ্বে কারবালার শোকাবহ ঘটনাকে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক হিসেবে পালন করা হয়। বাংলাদেশে বিশেষ করে শিয়া মুসলমানরা ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করেন।