চট্টগ্রামে পশুর হাটে হাসিলের তালিকা ঝোলানোর নির্দেশ

চট্টগ্রামে এবছর কোরবানির পশুর হাটগুলোতে হাসিলের তালিকা টাঙানোর নির্দেশ দিয়েছে নগর পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2017, 12:42 PM
Updated : 22 August 2017, 12:42 PM

মঙ্গলবার নগর পুলিশ (সিএমপি) সদর দপ্তরে হাট ইজারাদারসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার।

চট্টগ্রাম নগরীতে সিটি করপোরেশনের স্থায়ী তিনটিসহ মোট ৮টি হাটে পশু বেচাকেনা হবে জানিয়ে তিনি ইজারাদারদের উদ্দেশ্যে বলেন, “প্রত্যেকটি হাটে সিটি করপোরেশন নির্ধারিত হাসিলের তালিকা প্রকাশ্যে একাধিক স্থানে টাঙিয়ে দিতে হবে।

“যেখানে স্পষ্টভাবে গরুর জন্য, ছাগলের জন্য নির্ধারিত হাসিল কত টাকা তা পরিস্কার করে লেখা থাকবে।”

গরুর বেপারিদের নিরাপত্তায় ও অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য কমাতে হাট এলাকার প্রতিটি হোটেলের নিয়ন্ত্রণ ইজারাদারদের কাছে রাখতে হবে বলেও নিদের্শনা দেন তিনি।

গত মঙ্গলবার থেকে গরু নিয়ে বিবিরহাটে আসছেন বিক্রেতারা

সিএমপি কমিশনার বলেন, “কেউ যাতে খাবারে চেতনানাশক কিছু মেশাতে না পারে সেজন্য উভয়পক্ষকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। এধরনের কোনো ঘটনার জন্যে ইজারাদাররা দায়ি থাকবেন।”

এছাড়াও প্রতিটি হাটে জেননারেটর সুবিধার পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা স্থাপনেরও নির্দেশনা দেন কমিশনার।

এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিটি হাটে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপনের কথা উল্লেখ করে নিরাপত্তার জন্য থানা ও ফাঁড়ি পুলিশের বাইরে অতিরিক্ত আরও ৪০০ পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েনের কথা জানান তিনি।

সিটি করপোরেশন নির্ধারিত সীমানার বাইরে কেউ হাট পরিচালনা করতে পারবে না বলে জানান ইকবাল বাহার।

আসন্ন বাংলাদেশ-অষ্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজের জন্য স্টিল মিল বাজার ও সাগরিকা গরুর হাট শেষ দুইদিন সীমিত করারও নির্দেশনা দেওয়া হয় বৈঠকে।

কমিশনার বলেন, “ক্রিকেট খেলোয়াড়দের যাতায়াতের সময় স্টিল মিল বাজার ও সাগরিকা গরুর হাট পড়বে। ৩১ অগাস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর ওই দুইটি হাটে অতিরিক্ত লোকবল নিয়োগ করে রাস্তা পরিস্কার রাখতে হবে।”

পশুবাহী গাড়ি তল্লাশি নয়

বৈঠকে সিএমপি কমিশনার জানান, সুর্নির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কোরবানির পশুবাহী কোনো পরিবহন পুলিশ থামাবে না।

এছাড়া হাটে গরু নেওয়ার জন্য জোর খাটালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

এদিকে ঈদ ও পরবর্তী সময়ে নগরীতে পুলিশের নেয়া ব্যবস্থার তথ্য জানান পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার।

তিনি বলেন, “নগরীতে এবার ছোটবড় মিলিয়ে মোট ৩৬৮টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদসহ ৩৭টি স্থানে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।”

এসব স্থানে মুসুল্লিদের নিরাপত্তার জন্য ৬০০ পুলিশ, ঈদে বাড়ি ফেরার নিরাপত্তায় বাস, রেল স্টেশনে ২০০ ও ঈদ পরবর্তী বিনোদন কেন্দ্রেগুলোতে আর ৩০০ পুলিশ মোতায়েনের কথা জানান ইকবাল বাহার।

তিনি বলেন, কোরবানির পশুর চামড়া যাতে পাচার হতে না পারে সেজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সজাগ দৃষ্টি রাখা হয়েছে।

চামড়ার পাহারায়ও থানা পুলিশের বাইরে ৪০০ পুলিশ মোতায়েন করা হবে।

এদিকে প্রতিটি হাটে জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন, ব্যাংক বুথ রাখার কথা জানিয়ে কমিশনার বলেন, প্রতিটি হাটে পুলিশের একাধিক গাড়ি থাকবে। কেউ যদি টাকা বহনে পুলিশের সহায়তা চেয়ে হাটে পুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে যোগাযোগ করলে টাকা আনা নেয়ার ব্যবস্থা করবে পুলিশ।

বৈঠকে অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) দেবদাস ভট্টাচার্য, অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) মাসুদ উল হাসানসহ বিভিন্ন জোনের উপ-কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন।