চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার একটি প্রকল্পে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 August 2017, 02:32 PM
Updated : 9 August 2017, 02:32 PM

‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শিরোনামের এই প্রকল্প বুধবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদিত হয়।

এই প্রকল্পের আওতায় ৩৬টি খালের ৫ লাখ ২৮ হাজার ঘনমিটার মাটি খনন এবং ৪ লাখ ২০ হাজার ঘনমিটার কাদা অপসারণ করা হবে। পানি নিষ্কাশনের জন্য সড়কের পাশে নালা তৈরি করা হবে এক হাজার ৭৭ কিলোমিটার। প্রায় ১০৮ একর জমি অধিগ্রহণ ও রিটেনিং ওয়াল নির্মাণ করা হবে এক লাখ ৭৬ হাজার মিটার। ৮৫ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করা হবে।

এছাড়াও ছয়টি পিসি গার্ডার ব্রিজ প্রতিস্থাপন, পাঁচটি টাইডাল রেগুলেটর স্থাপন, ৪২টি সিল্ট ট্র্যাপ স্থাপন, বন্যার পানি সংরক্ষণ জলাধার স্থাপন তিনটি, বিদ্যমান নালার সংস্কার ও মেরামত, দুই হাজার বৈদ্যুতিক পোল স্থানান্তর এবং ৮৮০টি স্ট্রিট লাইন স্থাপন হবে।

একনেক সভায় এই প্রকল্পসহ নয় হাজার ৭৬১ কোটি টাকা ব্যয়ের মোট ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন।

শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “চট্টগ্রাম শহরকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে অনুমোদিত প্রকল্পটি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) উদ্যোগে গৃহীত। কিন্তু এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার, গণপূর্ত, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্ট। তাই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু করার আগে এ চার সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে একটি কমিটি গঠন করে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।”

অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে জামালপুর জেলার উন্নয়নে দুটি প্রকল্প রয়েছে। এ দুই প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদকে মূল সমন্বয়কের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে, ৩৯৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে ফেরি ও পন্টুন নির্মাণ/পুনর্বাসন প্রকল্প (দ্বিতীয় ধাপ), ১১৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজাপুর-কাঠলিয়া-আমুয়া-বামনা-পাথঘাটা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, ৭৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা ব্যয়ে কেরানীহাট-সাতকানিয়া-গুনাগরী জেলা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন।

ঢাকার আগারগাঁওয়ে ৬২ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে পর্যটন ভবন নির্মাণ, ৫৬৯ কোটি ৫১ লাখ টাকার ‘পল্লী জীবিকায়ন’ (দ্বিতীয় ধাপ) প্রকল্প, ৩৮৪ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের কুলকান্দি ও গুঠাইল হার্ডপয়েন্টের মধ্যবর্তী যমুনা নদীর বাঁ তীর রক্ষা প্রকল্প, ২০৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার যমুনা নদীর বাঁ তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে ভুয়াপুর-তারকান্দি সড়ক রক্ষা প্রকল্প।  

সৌর শক্তি ও পানি সাশ্রয়ী আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির একটি পাইলট প্রকল্প নেওয়া হয়েছে ৬৫ কোটি ৭০ লাখ টাকার, এক হাজার ৩২৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে মহেশখালী পাওয়ার হাব-এর ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প এবং ৯৪১ কোটি টাকার এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।

এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় নয় হাজার ৭৬১ কোটি ২৪ লাখ টাকার মধ্যে  সরকারি তহবিল থেকে ৮ হাজার ২৬৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা দেওয়া হবে, প্রকল্প সহায়তা হিসেবে দাতা সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া যাবে ৭৯০ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৭০৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা আসবে।