ইয়াবা ঠেকাতে নাফ নদীতে মাছ ধরা বন্ধ করা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ইয়াবার পাচার ঠেকাতে পরীক্ষামূলকভাবে নাফ নদীতে জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 July 2017, 02:27 PM
Updated : 15 July 2017, 02:35 PM

তিনি বলেছেন, এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে একটি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।

শনিবার দুপুরে নগরীর পতেঙ্গায় র্যা ব-৭ কার্যালয়ে ‘মাদকদ্রব্য ধ্বংস কর্মসূচি’তে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, র্যা ব মহাপরিচালক বেনজির আহমদ, সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আতাহার আলী ও চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কমিশনার ইকবাল বাহার ইয়বার ‘উৎস ও সরবরাহ’ বন্ধের দাবি জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বক্তব্যে বলেন, “আমাদের দেশে কোনো মাদক তৈরি করি না, আমরা এর শিকার হচ্ছি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাদক এসেছে আমাদের দেশে। এখন যেটা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে সেটা ইয়াবা।”

ইলিশের মৌসুমে যেমন একটি নির্দিষ্ট মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়, তেমনি নাফ নদীতেও মাছ ধরা বন্ধ করা হবে বলে জানান তিনি।

“নাফ নদীতে পরীক্ষামূলকভাবে জেলেদের কর্মবিরতির কথা ঘোষণা করব; তারা নদীতে যাতে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকে। সমুদ্রে গিয়ে বা উপকূলে গিয়ে মাছ ধরবে সেখানে আমাদের বাধা নেই। নাফ নদী যাতে বিজিবি কোস্টগার্ডের নজরদারিতে এসে যায়, কারা এই নদী ক্রস করে বা ইয়াবা নিয়ে আসে।”

ফেনসিডিলের সরবারহ বন্ধে ভারতকে অনুরোধের পর সহায়তা মিললেও ইয়াবার ক্ষেত্রে মিয়ানমারের কাছ থেকে সহায়তা মিলছে না বলেও মন্তব্য করে মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “মিয়ানমার সরকারের সাথে আমরা কথা বলেছি। তারা সবসময় বলে যাচ্ছে আমাদের সাথে কো-অপারেশন করবে। কিন্তু অনেকসময় তার সুফলটা পাচ্ছি না। বিশ্বাস করি মিয়ানমার একদিন সহযোগিতা করবে যাতে আর ইয়াবা না আসে।”

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্সদের টাকা না দিয়ে ইয়াবা দেওয়া হয় এমন অভিযোগ ‘শুনেছেন’ জানিয়ে এর সত্যতা যাচাইয়ের দাবি করেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।

জঙ্গিদের মূলোৎপাটন শিগগির

শিগগিরই দেশের জঙ্গিদের মূলোৎপাটন করা সম্ভব হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একাজে মূল সহায়ক শক্তি হিসেবে দেখছেন ‘জনগণের সহায়তা’কে।

তিনি বলেন, “জনগণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়েছে। জনগণ আজকে বুঝতে পেরেছে জঙ্গিরা কি চায়।

“দেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে সে জায়গায় আমাদের বিফল করতে চায়। আর একটা আন্তর্জাতিক চক্রান্ত সেটা ইসলাম ধর্মকে কলঙ্কিত করতে চায়। সেটা জনগণ বুঝতে পেরেছে।সেজন্য জনগণ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা বিভাগকে সহযোগিতা করছে বলেই সবকিছুতে সফল হচ্ছি।”

জঙ্গি দমনে সফলতার কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,“আজকে দৃঢ়ভাবে ঘোষণা দিতে পারি যে কন্ট্রোল করতে পেরেছি। আমরা শিগগিরই এই জঙ্গিদের মূলোৎপাটন করতে পারব সেটাও আমরা বিশ্বাস রাখি। কারণ আমাদের দেশের ধর্মভীরু জনগণ এই জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। জঙ্গিদেরকে তারা ধরিয়ে দেয়। মা তার ছেলেকে ধরিয়ে দেয়। বাবা তার ছেলেকে ধরিয়ে দেয়। এটাই হলো বাংলাদেশ।”

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সংসদ সদস্য এম এ লতিফ ও র্যা ব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন।

উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও দিদারুল আলম।

অনুষ্ঠান শেষে ৩৫ লাখ ৭০ হাজার ইয়াবা, সাত হাজার ৮১ বোতল ফেনসিডিল, ২০০ কেজি করে গাঁজা ও চোলাই মদ ধ্বংস করা হয়।