জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে রামপাল বিরোধিতা থেকে সরে আসুন: হাছান

ইউনেস্কো রামপালে বিদুৎকেন্দ্র নির্মাণে আপত্তি তুলে নিয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানোর পর এর বিরোধিতাকারীদের জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে আন্দোলন থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 July 2017, 09:45 AM
Updated : 7 July 2017, 09:46 AM

শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক।

হাছান মাহমুদ বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছিলাম- যারা বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে তাদের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক। তাদের অনেকের উদ্দেশ্য শুধু রাজনৈতিকও নয়, ষড়যন্ত্রমূলক। অনেকে আবেগপ্রবণ হয়ে আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়েছে। কিন্তু যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক ও ষড়যন্ত্রমূলক।

“ইউনেস্কোর আপত্তি প্রত্যাহার করে নেওয়া প্রমাণ করে- রামপাল নিয়ে সরকারের বক্তব্য ও অবস্থান সঠিক। ইউনেস্কোর উদ্বেগ ও আপত্তি প্রত্যাহারের পর জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আন্দোলন থেকে বিরত থাকুন।”

পোল্যান্ডে চলমান জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ৪১তম অধিবেশনে রামপাল নিয়ে ইউনেস্কোর আপত্তি তুলে নেওয়া হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়।

বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনকে ঝুঁকিতে থাকা প্রাকৃতিক নিদর্শনের তালিকাভুক্ত করার পদক্ষেপ থেকেও ইউনেস্কো সরে এসেছে বলে মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়।

রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় বুধবার জাতীয় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত মেলায় রামপালের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি মডেল। ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান

বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের পাশে বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে আপত্তি জানিয়ে আসছে পরিবেশবাদীরা।

আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ইউনেস্কোকে ভুল তথ্য দিয়ে রামপাল বিষয়ে বিভ্রান্ত করার অভিযোগও করেন হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, “আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক। যারা আন্দোলনে আছেন তাদের অনেকেই আবেগপ্রবণ হয়েই আন্দোলনে এসেছেন। যারা আবেগপ্রবণ হয়ে এসেছেন, তাদেরকে আমরা সম্মান জানাই।

“চিহ্নিত ব্যক্তিবর্গ যারা পদ্মা সেতুতে ষড়যন্ত্র করেছিলেন- তাদের নাম বলতে চাই না, দেশের মানুষ তাদের চেনে; ওখানে সফল না হয়ে তারা রামপালের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে।”

রামপাল নিয়ে উদ্বেগ নিরসনে সরকার যে তথ্য উপাত্ত দিয়েছে তা পরীক্ষা নিরিক্ষার পর ইউনেস্কো সে উদ্বেগ ও আপত্তি প্রত্যাহার করে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে অনুমোদন দিয়েছে বলে দাবি সাবেক এই পরিবেশ মন্ত্রীর।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে নিয়ম হচ্ছে কোনো বনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা যাবে না। সুন্দরবনের যে অংশটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে সেটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে, আর সুন্দরবনের প্রান্তসীমা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্ত ব্যবহার করা হচ্ছে জানিয়ে হাছান বলেন, যারা পদ্মা সেতুর ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হয়েছে তারা আজকে রামপালের পেছনে লেগেছে।

আন্দোলনে থাকা সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে লবিং করার অভিযোগও করেন সাবেক এ মন্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে মধ্যে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল ইসলাম চৌধুরী নওফেল উপস্থিত ছিলেন।