ক্যানভাসে চারু ও কারুকলা অবমূল্যায়নের প্রতিবাদ

মাধ্যমিক স্তরে চারু ও কারুকলা বিষয়কে অবমূল্যায়নের অভিযোগ তুলে চারুশিল্প শিক্ষা বন্ধের চক্রান্ত ও পাঠ্যক্রম সাম্প্রদায়িকীকরণের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে প্রতিবাদী চিত্রাঙ্কন ও শিল্পী সমাবেশ করেছে চারুশিল্পী পরিষদ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2017, 03:13 PM
Updated : 26 May 2017, 03:14 PM

শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গনে সমবেত শিল্পীরা ক্যানভাসে ছবি এঁকে প্রতিবাদ জানান।

সমাবেশে চারুশিল্পী পরিষদের সভাপতি আবুল ফজল মুন্না বলেন, অষ্টম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষায় চালু ও কারুকলা বিষয় বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

“জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) মার্চ মাসের এক সভায় সিদ্ধান্ত হয়, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, চারু ও কারুকলা এবং কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে আর নেওয়া হবে না। ধারবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মান যাচাই হবে। ধারাবাহিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষার্থীর গ্রেড নির্ধারণে প্রযোজ্য হবে না।

“শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম দিক হচ্ছে মূল্যায়ন। কিন্তু মূল্যায়ন যখন অর্থহীন ও প্রহসন হয় তখন সে শিক্ষা দেওয়া ও নেওয়ার মাঝে আগ্রহ থাকবে না। তা হবে উদ্দেশ্যহীন।”

গত নভেম্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, পাবলিক পরীক্ষার সময় চাপ কমাতে শিক্ষাবিদরা এক কর্মশালায় বিষয় কমানোর সুপারিশ করেছেন।

এসএসসি পর্যায়ে শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ‌্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা, চারু ও কারুকলা, এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়গুলোকে পাবলিক পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত না করে বিদ্যালয়ে নিচু শ্রেণিতে ধারাবাহিক সেগুলো পড়ানোর সুপারিশ এসেছে ওই কর্মশালায়।

তবে কবে থেকে এসব বিষয় এসএসসি থেকে বাদ যেতে পারে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি মন্ত্রী।

সমাবেশ থেকে চারুকলার শিক্ষক ও চারুশিল্পীরা মাধ্যমিক স্তরে চারুকলা বিষয়ে আগের মত মূল্যায়নের দাবি জানান।  

সমাবেশে অংশ নেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইন্সটিটিউটের পরিচালক শায়লা শারমিন, সহকারী অধ্যাপক ঢালী আল মামুন, প্রণব মিত্র চৌধুরী, সৈয়দ সাইফুল কবীর, নাসিমা আক্তার, সুফিয়া বেগম ও মোহাম্মদ  জসিম উদ্দিন, চারুশিল্পী সৈয়দ আবদুল ওয়াজেদ, সুব্রত বড়ুয়া রনি,  লিটন কুমার নন্দী, সৈয়দ সাইফু্দ্দিন অন্তর ও প্রণব সরকার।

সমাবেশ থেকে যেসব দাবি জানানো হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- প্রয়োজনীয় সংখ্যক চারুকলা শিক্ষক নিয়োগ দেয়া, এমপিওভুক্ত সব বিদ্যালয়ে চারুকলা শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করা, দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত চারুকলা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, পাবলিক পরীক্ষায় চারু ও কারুকলা বিষয় রাখা এবং আগের মত মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু রাখা।

প্রতিবাদী চিত্রাঙ্কন কর্মসূচিতে শিল্পীরা সাম্প্রতিক নানা অসঙ্গতি, রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থানসহ বিভিন্ন বিষয় ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলেন।

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে রাতের আঁধারে ভাস্কর্য সরিয়ে নেয়ার ঘটনারও প্রতিবাদ জানানো হয় ওই সমাবেশ থেকে।