‘আত্মসাতের’ বাকি টাকাও তিনি ফেরত দেবেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল বিপণনকারী সংস্থা পদ্মা অয়েলের খুলনার দৌলতপুরে তিন তলা অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্পে অর্থ আত্মসাতের এই মামলায় মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. শাহে নূরের আদালতে চার আসামির জামিন শুনানি হয়।
শুনানি শেষে চার আসামিকে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত জামিন দিয়েছে আদালত। এই আসামিরা হলেন- পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ডিজিএম ও প্রকল্পটির পরিচালক মো. নুরুল আমিন, প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তা কে এম আবদুর রহিম ও উপ-ব্যবস্থাপক সালেহীন আহমেদ আক্কাস এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মো. ইউনূস অ্যান্ড কোং এর মালিক আনিসুর রহমান।
দুদকের আইনজীবী কাজী সানোয়ার আহমেদ লাভলু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মামলা হওয়ার পর এই চার আসামি হাই কোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নেন। এর মেয়াদের শেষ দিন মঙ্গলবার তারা মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করেন।
“শুনানিতে আসামিপক্ষ জানায়, মামলা হওয়ার পর প্রকল্পটির ঠিকাদার পে অর্ডারের মাধ্যমে ১৭ লাখ টাকা পদ্মা অয়েলকে ফেরত দিয়েছে। বাকি টাকাও ফেরত দেবে। বিচারক এ সংক্রান্ত প্রমাণ চাইলে আসামির আইনজীবী আদালতে রশিদ জমা দেন।”
তিনি পদ্মা অয়েলের অন্য কোনো প্রকল্পে কাজ করেছেন কি না বিচারক জিজ্ঞেস করেন বলে জানান লাভলু।
“জবাবে ঠিকাদার জানান, তিনি পদ্মা অয়েলের আরও কয়েকটি প্রকল্পে বর্তমানে কাজ করছেন। মামলা হয়েছে বিধায় আপাতত টাকা ফেরত দিচ্ছেন।”
ঠিকাদার আনিসুর রহমানের আইনজীবী ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভবনটি নির্মাণে পদ্মা অয়েলের অনুমিত ব্যয় (এস্টিমেট) ছিল এক কোটি ৭৪ লাখ টাকা। কাজ করতে গিয়ে ঠিকাদার দেখেন ওই জমিতে ধারণার চেয়ে বেশি পাইলিং করতে হচ্ছে। বিষয়টি পদ্মা অয়েল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েই তিনি কাজ করেন। এ কারণে তিনি এক কোটি ৯১ লাখ টাকার সংশোধিত বিল জমা দেন।
“পরে গণপূর্ত বিভাগ তদন্তে নির্মাণ কাজ ও ব্যয়ের হিসেবে ৩২ লাখ টাকার ব্যবধান পায় বলে প্রতিবেদন দেয়। এর ভিত্তিতে দুদক অভিযোগ করে।”
পদ্মা অয়েল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঠিকাদার ১৭ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন দাবি করে তিনি বলেন, “পদ্মার আরও অনেক প্রকল্পে তিনি কাজ করেন। যেহেতু সংশোধিত প্রকল্পে ব্যয় বেশি হয়েছে, মামলা নিষ্পত্তি হলে ঠিকাদার এ টাকা ফেরত পাবেন।”
টাকা ফেরতের বিষয়ে মামলার বাদী দুদকের প্রধান কার্যালয় ঢাকার সহকারী পরিচালক সিরাজুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “টাকা ফেরত দেওয়া মানে তো এক অর্থে অপরাধ স্বীকার করে নেওয়া। এতে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলো।”
এই মামলার অপর আসামি মো. আবুল খায়ের উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেননি। তার পক্ষে কোনো আইনজীবীও শুনানিতে ছিলেন না।
“এই আসামির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসারেই সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” বলেন দুদক কর্মকর্তা সিরাজুল।