চট্টগ্রামে পুলিশের উদ্যোগে ৩০ মাদকসেবী-বিক্রেতাকে পুনর্বাসন

চট্টগ্রামে এক সময়ের মাদকসেবী ও বিক্রেতা ৩০ নারী-পুরুষকে স্বাভাবিক জীবনে পুনর্বাসনে অর্থ সহায়তা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2017, 01:22 PM
Updated : 22 May 2017, 02:28 PM

সোমবার কমিউনিটি পুলিশিং সপ্তাহের শেষ দিনে তিনজনকে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পুলিশের উদ্যোগে ব্যবস্থা করা চাকরির নিয়োগপত্র এবং বাকিদের হাতে অর্থ সহায়তার চেক তুলে দেন অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান।

চট্টগ্রামের হালিশহর নয়াবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. সাইফুল। দুই ছেলে এক মেয়ের জনক সাইফুল ছিলেন মাদকসেবী, পাশাপাশি বিক্রেতাও।

দুইবার জেল খাটার পর নিজেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় ছিলেন। বেকার সাইফুলের কর্মসংস্থান করে দিতে তার পাশে দাঁড়িয়েছে পুলিশ।

কমিউনিটি পুলিশিং সপ্তাহের শেষ দিনে সাইফুলের মতো আরও ২৯ নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান ও আর্থিক সহায়তা করেছে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সাইফুল জানান, প্রায় ১০ বছর ধরে মাদক সেবন করতেন তিনি। প্রথমে গাঁজা সেবন করলেও পরে হেরোইন, ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়েন।

“সন্তানরা বড় হতে থাকলেও মাদক সেবন ছাড়তে পারিনি।”

মাদক সেবনের পাশাপাশি বিক্রির সাথেও জড়িয়ে পড়ার কথা জানিয়ে সাইফুল বলেন, ২০১৪ সালের শেষ দিকে ইয়াবাসহ প্রথম পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় ছয়মাস কারাগারে ছিলাম। এরপর গত বছর রোজায়ও গ্রেপ্তার হয়েছিলাম।

“প্রায় দেড় মাস কারাভোগের পরও মাদক সেবন ছাড়তে পারিনি।”

আগে ব্যবসা ছাড়লেও সম্প্রতি মাদক সেবনও ছেড়ে দেন সাইফুল।

চট্টগ্রামের ‘হাই বিজ লিমিটেড’ নামে একটি পোশাক কারখানায় ফিনিশিং হেলপার পদে চাকরি দেওয়া হয়েছে সাইফুলকে।

চট্টগ্রাম নগরীর ১৬ থানার ৩০ মাদকসেবী ও বিক্রেতার মধ্যে ২৭ জনকে পুনর্বাসনের জন্য ২০ হাজার টাকা নগদ এবং বাকি তিনজনকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।

বায়েজিদ বোস্তামী থানার তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী খালেদা বেগম। আট মামলার আসামি খালেদা বর্তমানে মাদক ব্যবসা ছেড়ে মুদি দোকান পরিচালনা করছেন। তার ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে তাকে দেওয়া হয় ২০ হাজার টাকার চেক।

খালেদা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তিনি এবং তার বড় মেয়ে দুইজনই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। বিভিন্ন সময় পুলিশ তার বাসায় অভিযান চালালেও তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

তবে প্রতিবারই পলাতক হিসেবে তাকে আসামি করা হয়েছে। আট মামলার আসামি খালেদার ছেলে জেল খেটেছে চারবার।

খালেদার দাবি তার ছেলে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত না হলেও তাকে ও মেয়েকে বাঁচাতে ছেলে পুলিশের কাছে ধরা দিয়েছেন প্রতিবার।

খালেদা বলেন, “আমার স্বামী প্রায় ১৭ বছর ধরে অসুস্থ অবস্থায় বাসায়। আর মেয়ের স্বামী হত্যা মামলায় কারাগারে যাওয়ার পর তারা এ ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েন।”

চট্টগ্রাম মহানগর কমিউনিটি পুলিশের আহ্বায়ক ও দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এমএ মালেকের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্টানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার।

বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি কুসুম দেওয়ান, সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, প্যানেল মেয়র হাসান মাহমুদ হাসনি, কমিউনিটি পুলিশের আহ্বায়ক অহীদ সিরাজ স্বপন।