জ্যৈষ্ঠের খরতাপে হাঁসফাঁস

জ্যৈষ্ঠের কাঁঠাল পাকানো প্রখর তাপে দেশজুড়ে হাঁসফাঁস করছে মানুষ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2017, 10:23 AM
Updated : 22 May 2017, 12:41 PM

সোমবার বেলা বাড়ার সঙ্গে তাতিয়ে উঠা রোদে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়; গরমে রাস্তায় যান ও মানুষের চলাচল কমে যায়।

দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর ওয়াসার মোড়ে আধ ঘণ্টা দাঁড়িয়েও আন্দরকিল্লা মোড়ে যেতে কোনো সিএনজিচালিত অটোরিকশা পাননি বলে জানান ব্যবসায়ী আরিফুর রহমান।

নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে কম রিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে। গরমের কারণে রিকশা চালকরাও একই দূরত্বে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছেন বলে জানান পথচারীরা।

সোমবার সকালে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসে ৩৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

আগের দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার সর্বোচ্চ ৩৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি, শুক্রবার ৩৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি এবং বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আগের সপ্তাহে মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ ডিগ্রি ও বুধবার ছিল ৩৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোমবার দুপুরে বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৬৫ শতাংশ। রোববার বিকেল তিনটায় ছিল ৬৮ শতাংশ।

“আগামী দুই দিনে বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। চলমান তাপপ্রবাহ চলতে পারে আরও এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন। জুনের প্রথম সপ্তাহের আগে তাপমাত্রা কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।”

চট্টগ্রাম সিইপিজেড এলাকার একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী শফিকুর রহমান বলেন, গরমে প্রতিদিন মুরাদপুর থেকে ইপিজেড যাওয়া-আসা করতে করতে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে।

“শহরে চলাচলকারী বাসগুলোর বেশিরভাগেই ফ্যান চলে না। ভ্যাপসা গরমে গাদাগাদি করে অফিসে যেতে হয়।”

অতিরিক্ত গরমের কারণে বেশি সমস্যায় পড়ছে শিশুরা।

নগরীর বাদুরতলা এলাকার বাসিন্দা আতিকুর রহমান বলেন, রাতে গরমের কারণে সাত মাস বয়সী ছেলে ঘুমাতে পারে না। বারবার ঘেমে যাওয়ায় ছেলের সর্দি-কাশি এবং ঘামাচি হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. প্রণব কুমার চৌধুরী বলেন, “এখন শিশুদের মধ্যে হাম, ব্রংকাইটিস, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।”

গরমে হাসপাতালগুলোতে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কথা জানান চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, উপজেলাগুলোতে এবং শহরে ভ্যাপসা গরমের কারণে শিশুরা ঘামাচি, সর্দিজ্বরসহ ভাইরাল রোগ যেমন- হাম ও ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া ডায়রিয়াও হচ্ছে।

“অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীর থেকে লবণ চলে যাচ্ছে। তাই সব বয়সী মানুষের উচিত ওরস্যালাইন খাওয়া। সকাল নয়টা থেকে তিনটা পর্যন্ত ঘরের বাইরে গেলে ছাতা ব্যবহার করা।”

গরমে হোটেলের খাবার খাওয়ার বিষয়ে সর্তক থাকার পরামর্শ দেন আজিজুর রহমান।

“শাক-সবজি ও ফলমূল বেশি খেতে হবে। গোসলে দিনে একবারের বেশি সাবান ব্যবহার করলে চামড়ার সমস্যা হতে পারে।”

এদিকে গরমের কারণে দিনের মধ্যভাগে শহরে যান চলাচল কমে যাচ্ছে।