‘জঙ্গিবাদ-মাদকের বিরুদ্ধে বলার শর্তে সভা-সমাবেশের অনুমতি’

চট্টগ্রামে সভা-সমাবেশের অনুমতি নিতে আয়োজকদের জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলার অঙ্গীকার করতে হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি এসএম মনিরুজ্জামান।

চট্টগাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2017, 03:28 PM
Updated : 27 April 2017, 03:28 PM

বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড কলেজ মাঠে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকদের সঙ্গে ‘মতবিনিময় ও সহযোগিতামূলক’ সভায় এ কথা জানান তিনি।

ডিআইজি মনিরুজ্জামান বলেন, “এখন থেকে কোনো সভা সমিতি ধর্মীয় হোক, সামাজিক হোক, যারা অনুমতি নিতে আসবে তাদের কে বলা হবে জঙ্গিবাদ, মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ওই সভায় অন্তত ১৫ মিনিট বক্তব্য দিতে হবে।

“হলে এ সভায় আমরা পারমিশন দেব, না হলে দেব না।”

বিষয়টি বাধ্যতামূলক জানিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মসজিদে জুমার নামাজের আগে জঙ্গিবাদবিরোধী আলোচনা সফল হয়েছে দাবি করে সভায় উপস্থিতদের উদ্দেশে ডিআইজি মনিরুজ্জামান বলেন, “মসজিদে খুৎবা পাঠ করানোর ইমাম সাহেব যেন বলেন, এটা জঙ্গি-মাদকের দেশ নয়। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে এ দেশকে আমরা স্বাধীন করেছি। আমরা ভালোভাবে সুন্দরভাবে নিরাপদে বাঁচতে চাই।” 

চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনার সভাপতিত্বে ওই সভায় চট্টগাম রেঞ্জের ১১ জেলার পুলিশ সুপাররাও উপস্থিত ছিলেন।

সম্প্রতি সীতাকুণ্ডে দুইটি জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়ার পাশাপাশি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে বিভিন্ন নাশকতার কারণে বৃহস্পতিবারে এ সভাটির স্থান সীতাকুণ্ডে করা হয় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

ডিআইজি মনিরুজ্জামান বলেন, “ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে ১২ মাসে ১৩ পার্বনের দেশ বাংলাদেশ। আমদের চেতনায় ও দেশের পরিচয়ে আমরা বাঙালি। একটি অসাম্প্রদায়িক দর্শন নিয়ে বাংলাদেশের সৃষ্টি।

“মৌলবাদের রাষ্ট্র কাঠামো গঠন, পাকিস্তানি কায়দায় জঙ্গিবাদ ও আফগানিস্থানের মতো তালেবান গোষ্ঠী সৃষ্টি করার জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি।

জঙ্গিদের বিষয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এখন জঙ্গিদের শক্তি সামর্থ বলতে কিছুই নেই। আগে যেটা চোরাগোপ্তা হামলা করেছে, সেটাতেও ঘাটতি এসেছে। জনগণের সহযোগিতা নিয়ে তাদের আমরা খুঁজে খুঁজে বের করছি।”

অতিথির বক্তব্যে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালে নির্বাচনের আগে ও পরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিভিন্ন নাশকতার প্রসঙ্গ টেনে চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি কুসুম দেওয়ান বলেন, “সীতাকুণ্ড বালাদেশের অথনীতির লাইফ লাইন। দেশের ৯৯ শতাশ পণ্য আনা নেওয়ার করিডোর এটি।

“এ উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অনেক চেষ্টা হয়েছিল। জনগণের সহযোগিতায় এ পরিস্থিতি থেকে আমরা বের হয়ে এসেছি।”

চট্টগামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) রেজাউল মাসুদের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন নাহর, সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আল মামুন. পৌর মেয়র বদিউল আলম, ইউএনও নাজমুল ইসলাম, চট্টগাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি নিরুপম দাশ গুপ্ত, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইছহাক আহমেদ, জিপিএইচ ইস্পাতের ববস্থাপনা পরিচালক আলমাস শিমুল এবং সীতাকুণ্ড কলেজের অধ্যক্ষ আফাজ উদ্দিন।