নতুন টার্মিনাল কাটাবে বন্দরের কন্টেইনার জট

চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার জট নতুন টার্মিনাল হলেই কাটবে বলে আশা দিয়েছেন বন্দরের নতুন চেয়ারম্যান রিয়ার আডমিরাল এম খালেদ ইকবাল।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2017, 03:33 PM
Updated : 25 April 2017, 03:33 PM

চট্টগ্রাম ব্ন্দরের ১৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এই আশার কথা শোনান তিনি।

চট্টগ্রাম বন্দরের শহীদ ফজলুর রহমান মুন্সী মিলনায়তনে এই সভায় বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, গত এক বছরে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার পরিবহনে প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৬ শতাংশ এবং পণ্য পরিবহনের প্রবৃদ্ধি ১৭ শতাংশ।

“প্রতি বছরে জাহাজের সংখ্যা এবং কন্টেইনার পরিবহন বাড়তে থাকায় তা সামাল দেওয়া বন্দরের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ২০১৯ সালের মধ্যে পতেঙ্গা একটি নতুন কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। এই টার্মিনালটি নির্মাণ হলে প্রবৃদ্ধি কিছুটা সামাল দেওয়া যাবে।”

তবে ২০১৯ সালের মধ্যে নতুন টার্মিনাল নির্মাণ না হলে কন্টেইনার সামাল দেওয়ার কাজ বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

এছাড়া প্রস্তাবিত বে টার্মিনাল ২০২১ সালের আগে নির্মাণ সম্ভব নয় বলে জানান বন্দর চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে লালদিয়া টার্মিনাল নির্মাণে আগামী এক বছরের মধ্যে চুক্তি হতে পারে।

“২০২১ সালে প্রস্তাবি বে টার্মিনালে একটি কন্টেইনার টার্মিনাল এবং একটি বহুমুখী পণ্য পরিবহনের টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা আছে বন্দরের। এর বাইরে পুরনো জেটি ভেঙ্গে কর্ণফুলী কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে।”

এসব টার্মিনাল নির্মাণকাজ শেষ হতে তিন থেকে পাঁচ বছর সময় লাগতে পারে বলেও জানান বন্দর চেয়ারম্যান।

বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালে (এনসিটি) কন্টেইনার ওঠা-নামার কাজে এক হাজার ২২০ কোটি টাকার ৫১টি যন্ত্র সংগ্রহ করার বিষয়েও কথা বলেন তিনি।

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কন্টেইনার ওঠা-নামার ১১টি রাবার টায়ার গ্যান্ট্রি ক্রেন (আরটিজি) সংগ্রহের কাজ প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে।

“আগামী জুনের পর থেকে পর্যায়ক্রমে বন্দরের বহরে এসব যন্ত্র যুক্ত হবে। আর জাহাজ থেকে কন্টেইনার ওঠানো-নামানোর যন্ত্র গ্যান্ট্রি ক্রেন ২০১৮ সালের শেষ পর্যায়ে যুক্ত হতে পারে।”

খরচ বেশি হওয়ার সত্ত্বেও উন্মুক্ত দরপত্রের পরিবর্তে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি কেন- জানতে চাইলে বন্দর চেয়ারম্যান খালেদ ইকবাল বলেন, “অতি জরুরি ভিত্তিতে কেনাকাটার ক্ষেত্রে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি বেছে নেওয়া হচ্ছে।

“এ জন্য সরকারি অনুমোদনও নেওয়া হচ্ছে। তবে বন্দরের সিংহভাগ ক্ষেত্রে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে কেনাকাটা হয়ে থাকে।”

বন্দরের বন্ধ হয়ে যাওয়া ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্পে নতুন করে ২৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আবারও কর্ণফুলী নদীর খনন কাজ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এই খননকাজের প্রক্রিয়া চরছে। এতে তিন বছরের রক্ষণাবেক্ষণও থাকবে।

সভার শুরুতে বন্দর চেয়ারম্যান জানান, ১৮৮৭ সালের ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দর প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। এক বছর পর ১৮৮৮ সালে পোর্ট কমিশনার্স অ্যাক্ট চূড়ান্তভাবে প্রণিত হয়।

এ কারণে প্রতি বছর ২৫ এপ্রিল বন্দর দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এ হিসেবে এ বছর চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বন্দরের পর্ষদ সদস্য কমোডর জুলফিকার আজিজ, কমোডর শাহীন রহমান, মো. জাফর আলম ও কামরুল আমিন।

১৩০তম বন্দর দিবস উপলক্ষে ২৭ ও ২৮ এপ্রিল বন্দরের নবনির্মিত কারশেড এলাকায় দুই দিনব্যাপী পোর্ট এক্সপো’র আয়োজন করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।