বাঁশখালীতে চড়ক পূজা

চড়ক পূজা, কেউ বলে বালা পূজো, কেউবা বলে নীল পূজো। শিবের নানা নাম ধরে এ পূজোর নাম বলা হয় থাকে। তবে চড়ক পূজা নামে সর্বাধিক পরিচিত।

উত্তম সেন গুপ্ত চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 April 2017, 04:54 PM
Updated : 14 April 2017, 05:28 PM

বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে, বছরের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তিতে এ পূজো অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। খুব একটা প্রচলিত পূজো না হলেও এখনও দেশের বিভিন্ন স্থানে এ পূজো অনুষ্ঠিত হয়।

শুক্রবার চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কোকদণ্ডি ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত হয় এ পূজো। গুনাগরি এলাকার রামদাস মুন্সীর বংশধররা পারিবারিক ভাবে এ পূজার আয়োজন করে থাকেন।

রামদাস মুন্সীর বংশধর দেবব্রত দত্ত দেবু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পারিবারিক ভাবে কয়েকশ বছর আগে রামদাস মুন্সী বাঁশখালীতে চড়ক পূজোর আয়োজন করেন। পরবর্তীতে তা বংশ পরম্পরায় হয়ে আসছে।

হিন্দু শাস্ত্র মতে, মানুষের শান্তি ও মঙ্গল কামনা এবং পূর্বজন্মবাদের ওপর বিশ্বাস থেকেই করা হয় এ পূজো।

প্রাচীন আমলে একজন ব্যক্তিকে শিব সাজিয়ে পিটে লোহার শলাকা বিদ্ধ করে এ পূজা করা হতো। তবে
আইন করে এ নিয়ম বন্ধ করলে এখন রশির সাথে ঝুলিয়ে এ পূজোর আয়োজন করা হয়।

দেবব্রত জানান, যে ব্যক্তিকে গাছের সাথে ঝুলিয়ে ঘোরানো হয় তাকে স্থানীয় ভাবে ‘বালা’ বলা হয়ে থাকে। বাহারছড়া ইউনিয়নের গোবিন্দ নামে এক যুবক এবছর বালার ভূমিকায় গাছের সাথে ঝোলেন।

বংশ পরম্পরায় তারা বালার কাজটি করে থাকে জানিয়ে তিনি জানান, পূজার আগের দিন চড়ক গাছটি ধুয়ে মুছে খোলা মাঠে বসানো হয়। সন্ধ্যায় করা হয় অধিবাস।

চৈত্র সংক্রান্তিতে শিব পূজার মাধ্যমে চড়ক পূজো করা হয়ে থাকে। গাছটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ধূপ মোমবাতি জ্বালিয়ে পূজা করে থাকেন। অনেকে মানত করে পাঁঠা বলিও দিয়ে থাকেন।

বিকালে ‘বালাকে’ শিব সাজিয়ে ঢোল বাজিয়ে পূজোর স্থানে নিয়ে আসেন গ্রামবাসীরা। অনুষ্ঠিত হয় বলি, অনেকে আবার ছেড়ে দেন কবুতর।

চড়ক গাছের একপাশে বালাকে ও অন্যপাশে আরকিছু লোকজন রশিটি নিয়ন্ত্রণের জন্য ঝুলে সাতবার ঘুরিয়ে থাকেন। পরে বালাকে নিচে নামিয়ে আনা হয় এবং তাকে নিয়ে সবাই উল্লাস করে বাড়িতে নিয়ে যান।

পূজো উপলক্ষে কোকদণ্ডিতে বসেছে মেলা। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজনদেরকে সেখানে অর্ঘ্য দান ও পূজো দিতে দেখা যায়।