পুলিশ বলছে, চক্রটির সদস্যরা কখনও সাংবাদিক, কখনও গোয়েন্দা পুলিশ, আবার কখনও গোপালগঞ্জের বাসিন্দা সরকার দলীয় কর্মীসহ যখন যেখানে যে পরিচয়ে সুবিধা, সেই পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়।
চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুক্রবার নগরীর বালুছড়া এলাকা ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরা হলেন- চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নওজিসপুরের নুরুল আবছার (৪২) এবং বরিশালের উজিরপুরের শহীদুল ইসলাম (৩৮)।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি পত্রিকার ‘ভুয়া পরিচয়পত্র’ ও একটি মোটর সাইকেল জব্দ করেছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, গ্রেপ্তার দুজন নগরীর বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করা নারী-পুরুষকে ‘টার্গেট’ করে কখনও সাংবাদিক, কখনও গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয় দিয়ে ছিনতাই করে থাকে।
সকালে এক প্রবাসী দম্পতির কাছ থেকে একই কায়দায় ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে নগরীর বালুছড়া এলাকায় পুলিশ তাদের ধরে ফেলে।
ভুক্তভোগী প্রবাসী ওহিদুল আলম মানিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রীকে নিয়ে আমি শহরে ডাক্তার দেখাতে যাই। রাত বেশি হয়ে যাওয়ায় চকবাজার এলাকার একটি হোটেলে উঠি।
“সকালে বাড়ি যাওয়ার জন্য আমরা মুরাদপুর এলাকায় অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। তখন প্রিন্টের শার্ট পড়া এক লোক এসে আমাদের বিপদ হবে জানিয়ে দ্রুত অটোরিকশায় উঠে পড়তে বলে। তারপরও সেখানে অবস্থান করায় ওই ব্যক্তি আবার এসে নিজেকে ‘দলীয় লোক’ পরিচয় দেয় এবং লাল শার্ট পড়া অন্য একজন লোক নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আমাদের একটি অটোরিকশায় তুলে দেয়।”
ওহিদুল বলেন, “আমরা অটোরিকশা করে চলে যাওয়ার সময় তারা আমাদের পিছু নেয়। অক্সিজেন মোড় এলাকায় অটোরিকশা থামিয়ে বাজার করতে চাইলে তারা আবার আমাদের গাড়িতে তুলে দেন।
“কিছুদূর গিয়ে চেকপোস্টে পুলিশ আমাদের অটোরিকশাটি থামানোর জন্য সংকেত দেয়। তখন তারা এসে আমরা তাদের লোক বলে পুলিশকে জানিয়ে আমাদের অটোরিকশাটি ছেড়ে দিতে বলে। এসময় ওই দুজন আমাদের পরিচিত নয় জানালে পুলিশ তাদের ধরে ফেলে।”
গ্রেপ্তার দুজনের মধ্যে আবছারকে এর আগেও ছিনতাই ও প্রতারণার অভিযোগে নগরীর কোতোয়ালি থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল বলে জানান ওসি মহসিন।
তিনি বলেন, “নগরীর স্টেশন রোড ও চকবাজার এলাকার বিভিন্ন আবাসিক হোটেলের কর্মচারীদের সঙ্গে গ্রেপ্তারদের যোগাযোগ রয়েছে। কোনো নারী-পুরুষ হোটেল থেকে চলে যাওয়ার সময় কর্মচারীরা তাদের কাছে খবর পৌঁছে দেয়। পরে এই চক্রের সদস্যরা পথে তাদের জিম্মি করে টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়।”
এ ঘটনায় ওহিদুল আলম বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠায়।
দুজনকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা মহসিন।